লামার সরই ইউনিয়নের ঘটনা
মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, বান্দরবান ব্যুরো প্রধানঃ
বান্দরবানের লামায় নিজের মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে খোদ বাবার বিরুদ্ধে। এমনকি ধর্ষণের ফলে গর্ভবতী হয়ে পড়ে সেই মেয়েটি। বিষয়টি জানাজানি হলে ধর্ষণের দুইমাস পরে ঔষধ খাইয়ে নষ্ট করা হয় গর্ভের সন্তান। এছাড়া বিগত দুই বছর যাবৎ আদর করার ছলে মেয়েটিকে শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর জায়গায় হাত দিয়ে আদর করত। এমনি অভিযোগ তুলে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ সালের ৯(১) ধারায় বান্দরবান নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে নিজে বাদী হয়ে বাবাকে আসামী করে অভিযোগ করেন ভিকটিম।
অভিযুক্ত সেই পিতা লামা উপজেলার ৫নং সরই ইউনিয়ন ৭ ওয়ার্ডের বর্তমান ইউপি মেম্বার মোহাম্মদ হোছেন। ষোড়শী মেয়েটি সরই ইউনিয়নের বাসিন্দা ও পার্শ্ববর্তী লোহাগাড়া পশ্চিম কলাউজানস্থ একটি মাদ্রাসার ১০ শ্রেণির ছাত্রী এবং ২০২৪ সালের দাখিল পরীক্ষার্থী।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ৫ বছর বয়স থেকে লেখাপড়ার সুবিধার্থে মেয়েটিতে পার্শ্ববর্তী কলাউজান দাদা-দাদীর বাড়িতে রেখে পড়ালেখা করানো হয়। গত দুই বছর যাবৎ তার বাবা মেয়েকে বিভিন্ন সময় দেখতে গেলে আদর করার ছলে শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর জায়গায় হাত দিয়ে আদর করত। গত ঈদ উপলক্ষে মেয়েটি বাবার বাড়িতে আসে। গত ২৫ এপ্রিল ২০২৩ইং বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে মেয়েটির মা বাড়ির একটু দূরে জমিনে কাজ করতে যায়। ঈদ পরবর্তী হওয়ায় তার ছোট ৩ ভাইকে দাদা-দাদীর বাড়িতে বেড়াতে দিয়ে আসে তার বাবা। ঘরে কেউ না থাকায় মেয়েটি নিজের রুমে ঘুমাচ্ছিল। এসময় তার বাবা রুমে প্রবেশ করে ঘুমন্ত মেয়েকে স্পর্শকাতর জায়গায় হাত দিয়ে আদর করতে থাকে। মেয়েটির ঘুম ভাংলে জোরপূর্বক গায়ের কাপড় খুলে তাকে ধর্ষণ করে। মেয়েটি ঘটনাটি মা ও দাদা-দাদীকে জানালে তারা ওই মেম্বার (বাবা) কে বকা দেয়। এদিকে ধর্ষণের ফলে মেয়েটি গর্ভবতী হয়ে পড়লে গত ২৮ জুন ২০২৩ইং দুপুর ১২টার দিকে গর্ভের সন্তান নষ্ট করতে ঔষধ খাওয়ানো হয়। এতে করে তার গর্ভের সন্তান নষ্ট হয়ে যায়।
এই ঘটনার পরে মেয়েটির মা তার দাদা-দাদীর সাথে পরামর্শ করে ভিকটিমকে চট্টগ্রাম মিরসরাইস্থ খালার বাড়িতে রেখে আসে। কিন্তু এতে করে তার লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যায়। এদিকে নিজের সাথে এমন বর্বর ঘটনার পর নিজেকে মানাতে না পেরে কয়েকবার মেয়েটি আত্মহত্যা করার সিদ্ধান্ত নেয়। মা ও দাদা-দাদী তাকে শান্তনা দেয়। নিজের জীবন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে ও নরপিশাস বাবার বিচার দাবী করে মা কে সাথে নিয়ে গত ২৭ নভেম্বর ২০২৩ইং বান্দরবান নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা করে মেয়েটি।
এদিকে বান্দরবান নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা হওয়ার পর থেকে গা ঢাকা দিয়েছে ওই পাষন্ড বাবা। সরই ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইদ্রিস কোম্পানী বলেন, বিষয়টি আমরা জানার পরপরই ভিকটিমকে আইনী পদক্ষেপ নিতে পরামর্শ দিই।