রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানার ১৪ নম্বর সেক্টরের চা খেয়ে ফেরার পথে বখাটেদের ছুরিকাঘাতে মো লিমন মিয়া(১৮) নামে এক স্কুল শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন। সে উত্তরার আই ই এস উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিল।
বৃহস্পতিবার(১৭ আগষ্ট) রাত আটটার দিকে এই ঘটনা ঘটে। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে উত্তরার দুটি বেসরকারি মেডিকেলে নেয়া হয়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জরুরি বিভাগে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে রাত সোয়া দশটায় মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত শিক্ষার্থীর পিতা আব্দুল খালেকের বুক ফাটা আর্তনাদ, আমার সব স্বপ্ন শেষ হইয়া গেল। আমি অহন কেমনে বাঁচুম রে। কত কষ্ট কইরা রিক্সা চালাইতাম। আশা ছিল পোলাডারে মানুষের মতো মানুষ করুম। উত্তরায় ভাল একটা স্কুলে ভর্তি করাইলাম।
আর মাত্র কয়ডা দিন পরেই মেট্রিক পরীক্ষা দিত আমার লিমন।ওর বায়না ছিল একটা টাচ মোবাইলের। আমি কইছিলাম বাবা রে মেট্রিক পরীক্ষায় তুমি ভালো কইরা পাশ কর, তোমারে আমি কিইনা দিমু টাচ মোবাইল। আহারে আমার সব স্বপ্নই ভাইঙ্গা গেল। ওর মায় বাঁচবো কেমনে, আর আমিই বা কেমনে বাচুম।
নিহত লিমন মিয়ার বন্ধু দ্বীপ জানান, আমরা উত্তরা ১৪ নম্বর সেক্টরের ১০ নম্বর রোডে জহুরা মার্কেটের সামনে থেকে চা খেয়ে বাসায় ফিরতেছিলাম। এ সময় এলাকার বখাটে ছেলে ওবায়দুর ও মমিনুলসহ তিনজন লিমনকে ডাক দেয়। পরে লিমন তাদের ডাকে সাড়া না দেওয়ায় লিমনকে গালিগালাজ শুরু করে। পরে লিমন বলে আমাকে কেন গালিগালাজ পারতেছ এই কথা নিয়ে তাদের সাথে কথা কাটাকাটি হয়। পরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে লিমনের বুকে ঢুকিয়ে দেয়। এ ঘটনায় আরো একজন আহত হয় তাকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পরে লিমন কে উদ্ধার করে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে আসলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
সে আরো জানায়, ওরা এলাকার বখাটে এজন্য লিমনের মা তাদের সাথে চলাফেরা করতে নিষেধ করেছেন। কিন্তু আজ লিমন কেই তারা মেরে ফেলল। লিমন বর্তমানে ৫ নম্বর সেক্টরের ১০ নম্বর রোডের ৯ /ই বাসায় ভাড়া থাকতো। তাদের বাড়ি জামালপুর জেলার সদর থানার গৈনাতপুর এলাকায়। লিমন আগামী বছর এসএসসি পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল। তার বাবা আব্দুল খালেক একজন অটো রিক্সা চালক।
ঢামেক হাসপাতালে পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া বলেন, মরদেহটি হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মর্গে রাখা হয়েছে। আমরা বিষয়টি উত্তরা পশ্চিম থানা কে জানিয়েছি।