রাজধানীর গুলিস্তান এলাকায় আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ায় ধারালো অস্ত্রের আঘাতে এক নিহত হয়েছে।এই ঘটনায় ৪ জন গুরুতর আহত হয়ে ঢাকা মেডিকেলের চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
শুক্রবার (২৮ জুলাই)সন্ধ্যা ৭ টার দিকে এই গোলাপশাহ মাজারের সামনে এই ঘটনাটি ঘটে।
আহতরা হলেন ,জুবায়ের হোসেন ১৮, রনি ৩২, আরিফুল ১৮, মোকাশ্বের ১৮, এবং নিহত ব্যক্তি হলেন অজ্ঞাত পুরুষ (২৫).
তারা সবাই এই ধারালো অস্ত্রের আঘাতে গুরুতর আহত হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী সোহাগ জানান, আওয়ামী লীগের সমাবেশ শেষে প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী কামরুল হাসান এর সমর্থক এবং কেরানীগঞ্জের শাহিন চেয়ারম্যানের সমর্থকদের মাঝে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া চলে। ওই সময় বিএনপি’র কয়েকজন কর্মী ওই রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিল। ফলে ত্রিমুখী সংঘর্ষ হয়। এতে কোন গুরুপ ডাকে চাকু দিয়ে আঘাত করে তা আমি বলতে পারব না। আমি আমার বন্ধু আরিফুল কে গুরুতর আহত অবস্থায় দ্রুত ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে আসি।
আহত যুবক আরিফুল জানান, আমার গ্রামের বাড়ি নওগাঁ জেলার সাপাহার থানায় গৌরীপুর গ্রামে। আমি আমার এলাকার এক ভাইয়ের সাথে পল্টনে বিএনপির সমাবেশে এসেছিলাম। পল্টন থেকে পায়ে হতে গুলিস্তানে বাসে উঠার উদ্দেশ্যে আসলে হঠাৎ দেখি ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া চলছে। প্রাণ বাঁচাতে আমি দৌড় দেই। এমন সময় অজ্ঞাত কয়েকজন যুবক ছুরি দিয়ে আমার পিঠে আঘাত করে। পরে দেখি আমার পিক দিয়ে রক্ত ঝরছে। তখন আমি দৌড়ে একটি রিক্সা নিয়ে আমার এক বন্ধুকে দিয়ে ঢাকা মেডিকেলে আসি।
আহত জুবায়ের হোসেন জানান, আমি আহমেদ বাওয়ানি একাডেমির অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থী। আমি আমার বন্ধুদের সাথে আওয়ামী লীগের সমাবেশে যাই। সেখান থেকে ফেরার পথে আমার মোবাইলের জন্য একটি কাভার কিনতে গোলাপ শাহ মাজার এলাকায় গেলে দুই পক্ষের ধাওয়া পাল্টা দেওয়ার মাঝে পড়ি। তখন কে বা কারা আমার ডান হাতে ছুরি দিয়ে আঘাত করে। পরে আমি সেখান থেকে দৌড়ে রিক্সা নিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আসি। আমাদের বাড়ি বংশালের নতুন বাজারে। আমার পিতার নাম মফিজুল ইসলাম।
অপর আহত যুবক মোঃ নোমান রনি জানান, আমি কেরানীগঞ্জ থেকে সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ভাইয়ের পক্ষ হয়ে আজ আওয়ামী লীগের মিছিলে আসি। পরে সমাবেশ শেষে গোলাপ শাহ মাজার এলাকা দিয়ে ফেরার পথে হঠাৎ দেখতে পায় দুই গ্রুপে ধাওয়া পাল্টা দেওয়া চলছে। প্রথমে আমরা জানতে পারি আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের মাঝে সংঘর্ষ চলছে। পরে দেখি বিএনপি সাথেও ধাওয়া পাল্টা দেওয়া চলছে। এই ঘটনা দেখে আমি দৌর দিলে অজ্ঞাত কয়েকজন লাঠি দিয়ে আমাকে বেদম প্রহার করলে আমি দৌড়ে সেখান থেকে একটি রিকশা নিয়ে ঢাকা মেডিকেলে আসি।
গুরুতর আহত মোকাশ্বের জানান, আমি বিএনপির একজন কর্মী।সমাবেশ শেষে একটি মোবাইল কেনার জন্য গুলিস্তান মাজার এলাকায় গেলে হঠাৎ দেখি সেখানে ধাওয়া পাল্টা দেওয়া চলছে। আমি কোন কিছু না বুঝে দৌড় দিলে কয়েকজন যুবক আমার তলপেতে ছুরিকাঘাত করে। এতে আমার ভুরি বের হয়ে গেলে আমি তা হাত দিয়ে ধরে কোনরকম রিক্সা নিয়ে ঢাকা মেডিকেলে আসি। জরুরী বিভাগের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন তার অবস্থা আশঙ্কাজন।
ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ মোঃ বাচ্চু মিয়া জানান, আহত পাঁচ জন আমাদের ঢাকা মেডিকেলে এলে জরুরী বিভাগে তাদের চিকিৎসা ব্যবস্থা করা হয়। এরপর অজ্ঞাত একজন কিছুক্ষণের মধ্যেই মারা যায়। অন্য চারজন বর্তমানে জরুরি বিভাগে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানাকে জানানো হয়েছে।