খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি উপজেলার ৩নং যোগ্যাছোলা ইউনিয়ন পরিষদে সর্বশেষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে ২০১৮ সালের ২৩ এপ্রিল। নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা পরিষদে প্রথম সভা করেছেন ৯ সেপ্টেম্বর। সে হিসেবে এই ইউনিয়নের নির্বাচন আসন্ন। যার ফলে গেল পহেলা বৈশাখ ও ঈদুল ফিতরে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দনের মাধ্যমে সম্ভাব্য প্রার্থীরা ভোটারদের আগাম জানান দিয়েছেন আসন্ন নির্বাচনে নিজেদের প্রার্থীতা। এর পর হতে গ্রামে-গঞ্জের চা-দোকানে, গোপনে-আপডালে সম্ভাব্য প্রার্থী ও দায়িত্বরত জনপ্রতিনিধিরা আসন্ন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার সূর ছড়িয়ে দিচ্ছে। এতে সময় যতই ঘনিয়ে আসছে সাধারণ ভোটার ও সম্ভাব্য প্রার্থীরা নড়েচড়ে বসেছেন। এদের মধ্যে আ.লীগের উপজেলা কমিটির উপদেষ্ঠা মন্ডলীর সদস্য ও বর্তমান চেয়ারম্যান ক্যয়জরী মহাজন, ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি সদস্য মো. আবদুল মতিন নির্বাচন করার দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। অন্যদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মাঠ চষছেন সাবেক ইউনিয়ন বিএনপি নেতা মো. আমির হোসেন। এছাড়াও উপজেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি মো. আলমগীর হোসেনও প্রার্থী হওয়ার গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। আর সাধারণ ও সংরক্ষিত সদস্য প্রার্থীরা দলীয় সমর্থন পেতে দৌড়ঝাঁপ চালিয়ে যাচ্ছেন।
বিএনপি আ.লীগ সরকারের অধীনে কোন নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্তে এখন পর্যন্ত তাদের কোন প্রার্থী মাঠে-ঘাটে নির্বাচনী শুভেচ্ছা বা আলাপ-আলোচনায় দেখা যায়নি।
সম্ভাব্য প্রার্থী, সরজমিন ও উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০১১ সালে খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি উপজেলার ১ নম্বর মানিকছড়ি ও ২ নম্বর বাটনাতলী ইউনিয়নের কিছু অংশ ভেঙে ৩ নম্বর যোগ্যাছোলা ও ৪ নম্বর তিনটহরী ইউনিয়ন পরিষদ সৃষ্টির ফলে উপজেলাকে চার ইউনিয়নে সম্প্রসারিত করা হয়। এর পর ২০১১ সালে নতুন দুইটি ইউনিয়নে প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ২০১৬ সালে তিনটহরী ইউপিতে পরবর্তী নির্বাচন হলেও ফটিকছড়ি উপজেলার ভূজপুর ইউনিয়নের সাথে সীমানা জটিলতা মামলায় নির্বাচন স্থগিত থাকায় ৫ বছরের নির্বাচিতরা ২০১৮ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে আদালতের স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার হওয়ায় ২০১৮ সালের ২৩ এপ্রিল দ্বিতীয়বার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় এবং নির্বাচিতরা শপথ গ্রহন শেষে ৯ সেপ্টেম্বর দায়িত্বভার গ্রহন করেন। সম্প্রতি ওই ইউনিয়নে নির্বাচনী হাওয়া বইতে শুরু করেছে।
বর্তমান চেয়ারম্যান ক্যয়জরী মহাজন নির্বাচনে আবারও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ইচ্ছে প্রকাশ করে বলেন, আমি নির্বাচিত হওয়ার পর অনগ্রসর জনপদে বিদ্যুতায়ণ, ভূমিহীন ও গৃহহীন ২৫৬টি পরিবারে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণের ঘরে ঠাঁই দিয়েছি। এছাড়াও বিধবা, বষয়স্ক ও প্রতিবন্ধী ভাতা আনুপাতিক হারে বিতরণ করেছি। দল চাইলে আমি আবারও নির্বাচন করে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে তৃণমূলকে এগিয়ে নিতে চাই।
ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি সদস্য মো. আবদুল মতিন চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করার ইচ্ছে পোষণ করে বলেন, আমি বঙ্গবন্ধু আদর্শ নিয়ে তৃণমূলে গণমানুষের ভাগ্যোন্নয়নে একজন রাজনৈতিক ব্যক্তি ও জনপ্রতিনিধি হিসেবে মানুষের কাছে গিয়ে সেবা করার চেষ্টা করেছি। দলের প্রতিক নিয়ে নির্বাচন করার জন্য আমি দলের কাছে আবেদন জানিয়েছি।
এদিকে উপজেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি মো. আলমগীর হোসেন চৌধুরী নিজেকে একজন সক্রিয় রাজনৈতিক কর্মী ও গণমানুষের বিপদ-আপদে পাশে থেকে জনসেবার প্রতিশ্রুতি প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত তৃণমূলকে শহরে পরিণত করার অঙ্গিকার নিয়ে আসন্ন ইউপি নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার জন্য দলে মনোনয়ন চাওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করেন।
অন্যদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার ইচ্ছে জানিয়ে সাবেক উপজেলা বিএনপি নেতা মো. আমির হোসেন বলেন, আমার জন্মস্থানে গণমানুষের কাছে থেকে অনেক দিন ধরে আমি রাজনীতি করার পাশাপাশি মানবসেবায় বিপদগ্রস্তদের পাশে থেকেছি।
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. শওকত আলী চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে জানান, খুব শিগগিরই যোগ্যাছোলা ইউনিয়ন পরিষদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার সকল প্রস্তুতি ইতোমধ্যে নেওয়া হয়েছে। অচিরেই হয়তো নির্বাচন কমিশন তারিখ ঘোষণা করবে। তিনি আরও জানান, এই ইউনিয়নে (ভোটার হালনাগাদ ব্যতিত) মোট ভোটার ১১২৫৪জন। পুরুষ ভোটার ৫৬৬৩জন ও মহিলা ভোটার ৫৫৯১জন।
পার্বত্যকণ্ঠ নিউজ/ইমএস