• সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:২০ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
পানছড়িতে সম্প্রীতি সমাবেশ বিভিন্ন সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দের সাথে রুমা জোন কমান্ডারের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত ১০ম গ্রেডের দাবীতে লামার ৮৫টি বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের মানববন্ধন লংগদুতে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সম্প্রীতি কমিটি সভা ভারী বৃষ্টির পানির কারণে তলিয়ে গেছে রাজগঞ্জের ঝাঁপা বাঁওড় অসাম্প্রদায়িক চেতনার সুদৃঢ় বন্ধনে মানিকছড়িতে সম্প্রীতি সভা কাপ্তাইয়ে সকলের মধ্যে যেই সম্প্রীতি আছে, সেটা ধরে রাখতে হবে- ইউএনও মো মহিউদ্দিন  সিএনজি ধর্মঘটে কাপ্তাইয়ে দূর্ভোগ চরমে  ক্ষতিগ্রস্তদের সহযোগীতা ও জড়িতদের বিচারের আওতায় আনা হবে; দীঘিনালায় তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ পাহাড় ও সমতল সব মিলে বাংলাদেশ, পাহাড়ে সাম্প্রতিক সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্ত সহায়তা দেওয়ার আশ্বাস-নাহিদ ইসলাম বড়ধুল ইউনিয়নের বিএনপি অঙ্গ সংগঠনের উদ্যোগে ঐতিহাসিক স্মরণসভা পথ র‍্যালী রাজবাড়ীতে ফেনসিডিল ও গাঁজা সহ গ্রেপ্তার-১, মোটরসাইকেল জব্দ

ফুল ভাসিয়ে পাহাড়ে বৈসাবির আনুষ্ঠানিকতা শুরু

স্টাফ রিপোর্টার / ১৮৫ জন পড়েছেন
প্রকাশিত : শুক্রবার, ১২ এপ্রিল, ২০২৪

 

আনন্দ, উচ্ছ্বাস ও সম্প্রীতির বার্তা নিয়ে রাঙামাটিতে কাপ্তাই হ্রদের জলে ভাসলো ফুল বিজুর ফুল। আর এই ফুল ভাসানোর মধ্য দিয়ে শুরু হলো তিন দিনব্যাপী পাহাড়ের ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠীর সবচেয়ে বড় সামাজিক অনুষ্ঠান ‘বৈসাবি’র মূল আনুষ্ঠানিকতা। পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর বৃহত্তম এই সামাজিক আয়োজনে ব্যস্ত এখন শহর, নগর আর পাহাড়ি পল্লিগুলো। শুক্রবার সকালে কাপ্তাই হ্রদের পানিতে ফুল ভাসিয়ে নতুন বছরের জন্য শুভকামনা জানিয়ে গঙ্গা দেবীর কাছে প্রার্থনা করা হয়।

শুক্রবার চাকমা জনগোষ্ঠীর ‘ফুল বিজু’, ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর ‘হাঁড়িবসু’ আর মারমা সম্প্রদায়ের সূচিকাজ। ঠিক ফুলবিজু নামে অভিহিত না হলেও এইদিন প্রায় সব পাহাড়ি জাতিগোষ্ঠীই পানিতে ফুল ভাসানোর আনুষ্ঠানিকতা পালন করে।
ভোরে সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে ফুলবিজু উপলক্ষে শহরের রাজবন বিহার ঘাট, গর্জনতলী মধ্যদ্বীপ, কেরানি পাহাড়সহ বিভিন্ন স্থানে বৈসু, বিষু, বিহু, চাংক্রান উদযাপন কমিটি ও ব্যক্তিগত উদ্যোগে পানিতে ফুল ভাসানো হয়।

উৎসবপ্রিয় পাহাড়িরা সারা বছর মেতে থাকেন নানান অনুষ্ঠানে। তবে তার সবকিছুকে ছাপিয়ে যায় বর্ষবিদায়ের এই উৎসব। চাকমারা বিজু, ত্রিপুরা বৈসুক, মারমারা সংগ্রাই, তঙ্গ্যারা বিষু, অহমিয়ারা বিহু– এভাবে তারা ভিন্ন ভিন্ন নামে আলাদাভাবে পালন করে এই উৎসব। উৎসবের প্রথম দিনে চাকমা, ত্রিপুরা ও মারমারা বন থেকে ফুল আর নিমপাতা সংগ্রহ করে এবং কলাপাতায় করে পবিত্র এই ফুল ভাসিয়ে দেয় পানিতে, তাই একে বলা হয় ফুল বিজু। পানিতে ফুল ভাসিয়ে নিজ পরিবার এবং দেশ তথা সমগ্র জীবের মুক্তির জন্য গঙ্গা দেবীর কাছে প্রার্থনা করা হয়। পানিতে ফুল ভাসানোর মাধ্যমে পুরনো বছরের দুঃখ-বেদনাই যেনো ভাসিয়ে দিয়ে নতুন দিনের সম্ভাবনার আলো জ্বালান পাহাড়ের বাসিন্দারা। পানিতে ফুল ভাসিয়ে পুরনো দিনের বেদনা ভুলে নতুন দিনের প্রত্যয়ের কথা জানায় ফুল ভাসাতে আসা পাহাড়ি তরুণ-তরুণীরা।

পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি সম্প্রদায়ের বৃহত্তম এই সামাজিক উৎসবে ব্যস্ত প্রতিটি পল্লী। বাংলা বর্ষ বিদায় ও বরণ উপলক্ষে  ত্রিপুরা বৈসুক, মারমারা সাংগ্রাই,  চাকমারা বিজু, তঞ্চঙ্গ্যারা বিষু ও অহমিয়ারা বিহু, এভাবে  ভিন্ন ভিন্ন নামে উদযাপন করে। যা ‘বৈসাবি’ নামে সর্বাধিক পরিচিত। পানিতে ফুল ভাসানোর মধ্য দিয়ে পুরনো বছরের সব গ্লানি, হিংসা, বিভেদ নদীর  জলে ভেসে যাবে। আর নতুন বছর বয়ে আনবে সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধি এমনটাই প্রত্যাশা সবার।

ফুল ভাসিয়ে পাপিয়া চাকমা বলেন, ‘ফুল বিজুর দিনে গঙ্গাদেবীর উদ্দেশ্যে ফুল নিবেদন আমাদের ঐতিহ্য। পাশাপাশি আজকে থেকেই বর্ষবরণের মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। আগামীকাল মূল বিজু এবং পরশু পহেলা বৈশাখ পালন করবো। ফুল ভাসিয়ে আমরা গঙ্গাদেবীর কাছে সুখ ও সমৃদ্ধি প্রার্থনা করি।’
রাঙামাটির স্থানীয় সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদার বলেন, ‘ফুল ভাসানোর মাধ্যমে সম্প্রীতি ও কল্যাণের বার্তা পৌঁছে দেওয়া হয়। সামনের বছর যাতে সবার ভালো কাটে, সুস্থভাবে কাটে এই প্রার্থনায় ফুল ভাসানো হয়।’ পার্বত্য চট্টগ্রামের ১২টি জনগোষ্ঠীর মধ্যে বাংলা বর্ষকে বিদায় জানানোর এ অনুষ্ঠান তাদের প্রধান সামাজিক উৎসব হিসেবে বিবেচিত। এই উৎসব চাকমা জনগোষ্ঠী বিজু নামে, ত্রিপুরা জনগোষ্ঠী মানুষ সাংগ্রাই, মারমা জনগোষ্ঠী বৈসুক, তঞ্চঙ্গ্যা জনগোষ্ঠী বিষু, কোনও কোনও জনগোষ্ঠী বিহু নামে পালন করে থাকেন। বৈসুকের ‘বৈ’, সাংগ্রাইয়ের ‘সা’ এবং বিজু, বিষু ও বিহুর ‘বি’ নিয়ে উৎসবটিকে সংক্ষেপে ‘বৈসাবি’ নামে পালন করা হয়।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ