খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের দুর্গম নবরায়পাড়ার বাসিন্দা মো. কামাল হোসেন। দুই ছেলে-দুই মেয়ের জনক মো. কামাল হোসেন পেশায় দিনমজুর। বিবাহযোগ্য মেয়ের বিয়ের দিনক্ষন ঠিক হলেও আর্থিক অনটনের বিয়ের আয়োজন নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। এমন খবরে অসহায় এ পরিবারের পাশে এসে দাঁড়ায় সেনাবাহিনীর ১৫ ফিল্ড রেজিমেন্ট আর্টিলারী।
শুক্রবার (১৩ অক্টোবর) দুপুরের দিকে সেনাবাহিনীর মাটিরাঙ্গা জোনের আয়োজনে ধুমধাম করে বিয়ে হয় কনে কাজল আক্তারের।
সেনাবাহিনীর মাটিরাঙ্গা জোনের পক্ষে মেজর জিএম হাসান শাহরিয়ার জিন্নাহ বিয়ের অনুষ্ঠানের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত নিজে দাঁড়িয়ে থেকে ব্যাতিক্রমী এ বিয়ের দেখভাল করেন। অনুষ্ঠানে বরপক্ষের ৩০জন সহ ১০০জন অতিথিকে পোলাও-রোস্ট-গরুর মাংস ও পায়েস দিয়ে আপ্যায়নসহ ধুমধাম আয়োজনে সম্পন্ন করা হয় বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা। মাটিরাঙ্গা জোনের পক্ষ থেকে নব দম্পতিকে দেয়া হয় উপহার সামগ্রী।
ব্যাতিক্রমী এ বিয়ের আয়োজনে মাটিরাঙ্গা জোনের সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার মো. গোলাম মোস্তফা, মাটিরাঙ্গা পৌরসভার মেয়র মো. শামছুল হক, মাটিরাঙ্গা পৌরসভার ২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোহাম্মদ আলী, নবজাগরন যুব সংগঠনের সভাপতি মো. আলমগীর হোসেন ও নতুনপাড়া জামে মসজিদের ইমাম মুফতী মাওলানা জুলফিকার ছাড়াও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যাক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
কন্যা দায়গ্রস্থ পিতা মো. কামাল হোসেনের স্বপ্ন বাস্তবায়ন হওয়ার খুশি পরিবারটি। সেনাবাহানীর সহায়তায় মেয়ের বিয়ে দিতে পেরে খুশি আর আবেগের কমতি ছিলনা হতদরিদ্র বাবার। সেনাবাহিনীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানালেন দিনমজুর মো. কামাল হোসেন।
মাটিরাঙ্গা পৌরসভার ২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোহাম্মদ আলী বলেন, অর্থভাবে একটি মেয়ের বিয়ে যখন অনিশ্চিত হয়ে পড়ে তখন দেবদুত হিসেবে এ পরিবারের পাশে দাড়িয়ে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন মাটিরাঙ্গা জোন অধিনায়ক লে. কর্ণেল মো. কামরুল হাসান।
এমন আয়োজন অন্যদের অনুপ্রান্তি ও উৎসাহিত করবে মন্তব্য করে মাটিরাঙ্গা পৌরসভার মেয়র মো. শামছুল হক বলেন, মাটিরাঙ্গা জোন কমান্ডার মহোদয়ের দেখানো পথ অনুসরন করে ভবিষ্যতে আমরাও এমন মানিবক কাজে নিজেদের যুক্ত করবো। আজকের দিনটি মাটিরাঙ্গা পৌরসভার জন্য স্মরনীয় দিন হয়ে থাকবে।
বিয়ের অনুষ্ঠানে উপস্থিত মেজর জিএম হাসান শাহরিয়ার জিন্নাহ বলেন, পাহাড়ের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার পাশাপাশি এখানকার মানুষের সামাজিক সুরক্ষায় মানবিক দায়িত্ববোধ থেকেই সেনাবাহিনী কন্যাদায়গ্রস্থ পিতার পাশে দাড়িয়েছে। সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে সেনাবাহিনী সবসময়ই সাধারন মানুষের পাশে ছিল এবং ভবিষ্যতেও থাকবে।
সেনাবাহিনীর এমন মানবিক কর্মকান্ডকে সাধুবাদ জানিয়েছে স্থানীয়রা। ব্যাতিক্রমী এই মানবিক কর্মকান্ডের মাধ্যমে ভবিষ্যতেও সেনাবাহিনী অসহায় মানুষের পাশে থাকবে এমনটাই প্রত্যাশা স্থানীয়দের।