খাগড়াছড়ি জেলার গুইমারা উপজেলার অনগ্রসর একটি জনপদ আগা ওয়াকছড়ি। হাফছড়ি ইউপির দুই নম্বর ওয়ার্ডের এই গ্রামটিতে অর্ধশত মারমা জনগোষ্ঠী পরিবারের দুর্বিসহ জীবন-যাপন।৫/৭ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বসবাসরতরা একমাত্র ঝিরির ময়লাক্ত পানিতে খাওয়া, গোসল, রান্নাবান্না। আর ৮০% মানুষ ছন ও বেড়ার ছাপরা নিচে দুর্বিসহ জীবন-যাপন।যা মানবতার চরম বির্পযয়রুপ। মানিকছড়ি উপজেলার জামতলা থেকে পূর্বদিকে ৮/৯ কিলোমিটার দুর্গম রাস্তা পেরিয়ে আগা ওয়াকছড়ি। সেখানে এক, একটি টিলায় একটি মারমা পরিবার ছোট্ট, ছোট্ট, ছনের ঘরে বসবাস। কোন, কোন ঘরের চারপাশ খোলা।
আর এই বিশাল এলাকায় অর্ধশত পরিবার বসবাস করলে কোথাও টিউবওয়েল বা কূয়া বা ছড়াও নেই। একটি মাত্র ঝিরি থেকে মগ,থাল দিয়ে পানি তুলে কলসি বা পাতিলে ভরতে হয়। এক কলস পানিতে ভরতে ৫/৭ মিনিট সময় লাগে। আবার আরেকজন ৫ মিনিট অপেক্ষা করে কলস ভরতে যেতে হয়! কারণ একটাই পানির উৎসে পর্যাপ্ত পানি নেই। এভাবে সকাল-সন্ধ্যা এমনকি রাত ১০টায়ও কেউ, কেউ পানি সংগ্রহে থাকতে হয়।
এমন দুর্বিসহ পরিবেশে মানবেতর জীবনযাপন করা এসব মারমা পরিবারগুলো এখনো যেন আদিযুগে বসবাস।
রাপ্রু মারমা ও তার স্ত্রী পাইম্রাউ মারমা ২ কন্যা সন্তান নিয়ে অত্যন্ত মানবেতর জীবনযাপন করার খবরের সন্ধানে গেলে কথা হয় পাইম্রাউ মারমার সাথে। তিনি বাংলায় তেমন কথা বলতে না পারলেও খাদ্য, বস্ত্র, পানি ও খোলা ঘরে রাত্রি যাপনসহ দুর্বিসহ কষ্টের কথা সহজেই বুঝে নেওয়া যায়। এর কথা শুনে শরীর শিহরিত হয়ে উঠে। বললেন, এই এলাকায় কাজ-কর্ম নেই, স্বামীর একটি চোখ অন্ধ। বাচ্চাদের মুখে ঠিকমত ভাত দিতে পারি না। আর ভাত দিলেও পানি খেতে চাইলে মরে যেতে ইচ্ছা করে। কারণ পানির একমাত্র উৎস ওই দূরের ঝিরি। জঙ্গলে ঢাকা ঢালুতে গিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকে পানি তোলা খুব কষ্টদায়ক।
গ্রামের যুবক অংহ্লাপ্রু মারমা জানালেন, বাড়িতে মেহমান আসলে ভাত,তরকারী কম-বেশি খাওয়াতে পারি। কিন্তু পানি দিতে পারি না। নির্বাচন এলে মেম্বার, চেয়ারম্যান প্রার্থীরা আসে। ভোট শেষে, সব শেষ। আর কেউ আসে না। জঙ্গল মঙ্গল হয় না।
জনপদ অনগ্রসর ও পিছিয়ে থাকা মারমা জনগোষ্ঠীর দুর্ভোগের বিষয়টি স্বীকার করে ইউপি সদস্য উগ্য মারমা বলেন, এই দুর্গম এলাকায় বরাদ্দ আনার চেষ্টা করছি।
এম/এস