• শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারী ২০২৫, ০৯:১৪ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
রামগড়ে গভীর রাতে পাহাড় কাটার দায়ে ২ ব্যক্তির তিন লাখ টাকা জরিমানা  মহালছড়ি থানা পুলিশের বিশেষ অভিযান, আওয়ামীলীগ নেতা গ্রেফতার পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক উপদেষ্টার সাথে ঢাকায় নিযুক্ত কোরিয়ান রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ বান্দরবানে ৩০ জানুয়ারি উদ্বোধন হতে যাচ্ছে গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট বান্দরবানে ওএমএস কার্যক্রম পরিদর্শনে জেলা প্রশাসক মাইসছড়িতে আগুনে ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে আর্থিক সহায়তা প্রদান জেলা প্রশাসকের খাগড়াছড়িতে আসছেন সাঈদীর কন্ঠের ওয়ায়েজ মাওলানা গোলাম আযম সিন্দুকছড়ি জোনের মানবিক সহায়তা ও বিনামূল্যে মেডিক্যাল ক্যাম্পেইন পরিচালনা খাগড়াছড়ির দুর্গম জনপদে মাটিরাঙ্গা সেনা জোনের ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পেইন ইউএনওর আন্তরিকতায় ভারসাম্যহীন শিরিনকে খুঁজে পেলেন অভিভাবক! লামায় অস্ত্রসহ ইউপিডিএফ গণতান্ত্রিক দলের সদস্য আটক দীঘিনালায় সহকারী উপ পুলিশ পরিদর্শক গ্রেফতার

প্রথম মহিলা ফরেষ্টার হলেন বান্দরবানের মিতা তংচঙ্গ্যা

অসীম রায় (অশ্বিনী) বান্দরবানঃ / ৬৬ জন পড়েছেন
প্রকাশিত : বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী, ২০২৫

 

দেশের প্রথম মহিলা ফরেষ্টার হিসেবে সুপারিশ প্রাপ্ত হয়েছেন মিতা তংচঙ্গ্যা।  তিনি হবেন দেশের বন অধিদপ্তরের প্রথম মহিলা ফরেষ্টার।

সূত্রে জানা যায়, মিতা তংচঙ্গ্যা পার্বত্য জেলা বান্দরবানের সদর উপজেলার সুয়ালক ইউনিয়নের বঙ্গপাড়ার গুনধর তংচঙ্গ্যার মেয়ে। মিতা রাঙামাটি জেলার রাজস্থলী উপজেলার তাইতংপাড়া সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০১৮ সালে এসএসসি পাশ করেন। এফএসটিআই এর ২০১৮-১৯ শিক্ষা বর্ষের শিক্ষার্থী হিসাবে ২০২৩ সালের সমাপনি পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করেন।

২০২৩ সালের জুন মাসে কারিগরি শিক্ষা বোর্ড থেকে ফরেস্ট ডিপ্লোমা থেকে প্রথম স্থান অধিকার করেন। তিনি চট্টগ্রামের ফরেস্ট্রি সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি ইনস্টিটিউট হতে ২৪তম ব্যাচে ডিপ্লোমা ইন ফরেস্ট্রি কোর্স সম্পন্ন করেছেন। সমাপনী পরীক্ষা ফলাফল বের হওয়ার পর ইতোমধ্যে আরো একবার বন অধিদপ্তরের ফরেষ্টার পদের পরীক্ষায় অংশগ্রহন করে। দ্বিতীয়বার ফরেষ্টার হিসেবে সুপারিশ প্রাপ্ত হয়।

আরোও জানা যায়, পাহাড়ের দূর্গম পথ পাড়ি দেওয়ার মতো শিক্ষা জীবনের কঠিন দিনগুলো তার পাড়ি দিতে হয় তার। পরিবারে ৫ ভাই বোনের মধ্যে মিতা সবার ছোট। বড় দিদি সহকারী শিক্ষক ও অন্য ভাইরা ব্যবসা বাণিজ্য করেন, মাতা ছিলেন গৃহিনী।

মিতা তংচঙ্গ্যা বলেন, ফরেস্টি নিয়ে পাহাড়ের আদিবাসী মেয়েদের পড়ার অভিজ্ঞতা ছিলোনা, পরে এক বড় ভাইয়ের মাধ্যমে ভর্তি হন তিনি, ফরেস্ট বিষয়ে মেয়েরা পড়ালেখা করতে এগিয়ে এসেছে এমন নজির খুব কম।

তিনি আরো বলেন, আগে ফরেস্ট নিয়ে ছেলেরা পড়ালেখা করলেও বিগত সময়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, শুধু ছেলেরা কেন ফরেস্টে সুযোগ পাবে, মেয়েদেরও সুযোগ দেওয়া উচিত। তারপর থেকে মূলত মেয়েরা এই ফরেস্ট ডিপ্লোমাতে শিক্ষা গ্রহনের সুযোগ পায়।

শিক্ষা অর্জনের সময় ছেলেরা কটু কথা বলতো, কারন এই বিষয়ে পড়ালেখা করতে মেয়েরা ছিলোনা। আমাদের আদিবাসী মেয়েরা অনেক ক্ষেত্রে পিছিয়ে আছে, আমি চাই এই কঠিন পেশায় পাহাড়ের আদিবাসী মেয়েরা আরো এগিয়ে আসুক, এগিয়ে যাক।

তিনি বলেন, পরিক্ষায় মেয়েদের উচ্চতা ৫ ফুট ৪ ইঞ্চি লাগতো, দেখা গেছে ৫ ফুট ২-৩ ইঞ্চি ছিলো, যার কারনে পরীক্ষায় উত্তীর্ন হলেও ভাইভা’য় উচ্চতার কারনে বাদ পড়ে যেত। তাই উচ্চতার বিষয় শিথীল করলে এই পেশায় অনেক মেয়ে এগিয়ে আসবে। তিনি আরো বলেন, উচ্চতার কারনে শুধু আদিবাসী বলে কথা নেই, বাঙ্গালী মেয়েরাও ঝড়ে পড়ছে, তাই বিষয়টি সরকারের দ্রুত বিবেচনা করা উচিত।

এদিকে সুপারিশ প্রাপ্ত হওয়ার পরেই মিতা গত ১৫ জানুয়ারি বিকালে ছুটে আসেন তার প্রিয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ফরেস্ট্রি সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি ইনস্টিটিউটে। এসেই তিনি প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকদের সাথে সৌজন্য সাক্ষাত করেন। পরে প্রতিষ্ঠানের পরিচালক রফিকুল ইসলাম চৌধুরীকে ফুলের তোড়া দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।

এটা আমার এবং আমার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য নিঃসন্দেহে একটি গৌরবের বিষয়। আগামীতে আরো মহিলা ফরেষ্টার হিসেবে নিয়োগ প্রাপ্ত হোক এটা আমি আশা করি।

এ ব্যাপারে প্রতিষ্ঠানের পরিচালক রফিকুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, আমার প্রতিষ্ঠানের ছাত্রী দেশের প্রথম নারী ফরেষ্টার হিসেবে সুপারিশ প্রাপ্ত হওয়ায় আমি গর্বিত। আগামীতে যাতে এ প্রতিষ্ঠানের ছাত্রীরা ফরেষ্টার পদে আরো সুপারিশ প্রাপ্ত হতে পারে তার জন্য নিয়োগ বিধি সংশোধনসহ মহিলাদের ক্ষেত্রে শারিরীক যোগ্যতার বিষয়টি শিথিল করার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহনের জন্য উর্ধ্বতন মহলের কাছে দাবী জানাচ্ছি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ