সাইফুর রহমান পারভেজ গোয়ালন্দ(রাজবাড়ী)প্রতিনিধিঃ
গোয়ালন্দ উপজেলার মঙ্গলপুর মহিলা দাখিল মাদ্রাসার সুপার বিরুদ্ধে ইসমাইল হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই। উন্নয়ন তহবিল, নিয়োগ বানিজ্য,টিউশন ফি,অতিরিক্ত রেজিষ্ট্রেশন ফি,অতিরিক্ত পরীক্ষার ফির নামে লাখ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে।
সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে মাদ্রাসার উন্নয়ন কাজের ৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছিল সরকার। শিক্ষা সামগ্রী ও লাইব্রেরির জন্য বরাদ্দ পেয়েছিল আরো ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা। উন্নয়ন বরাদ্দের সাড়ে ৭ লাখ টাকা কোথায় ব্যয় করা হয়েছে এবং কি কি কাজ করা হয়েছে জানতে চাইলে ইসমাইল হোসেন কোনো সদুত্তর দিতে পারেনি। নৈশ প্রহরী নিয়োগ দিয়েছেন অর্থের বিনিময়ে। টাকা দিয়ে চাকরি পাওয়া প্রহরী দায়িত্ব পালন করতেন না। সম্প্রতি মাদ্রাসার কয়েকটি ফ্যান চুরির পর বিষয়টি জানাজানি হলে অর্থের বিনিময়ে চাকরি দেওয়ার খবর প্রকাশ পায়।
মাদ্রাসার একজন সিনিয়র সহকারী শিক্ষক বলেন, এক যুগের বেশি সময় ধরে এখানে শিক্ষাগতা করছি। শিক্ষকদের জন্য বরাদ্দকৃত ভাতার টাকা আমিসহ কোনো শিক্ষকই পায় না। মাদ্রাসা ব্যবস্থাপনার কমিটির সাথে সমঝোতার মাধ্যমে সুপার ভাতার টাকা আত্নসাৎ করেন। তিনি আরো বলেন, উন্নয়নের জন্য বরাদ্দ কৃত অর্থের কোন কাজ হতে দেখি নাই। কিছু দিন আগে মাদ্রাসার সহকারী সুপার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। কিভাবে নিয়োগ পেয়েছেন সুপার ছাড়া কেউই জানেন না। পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছি কি-না জানিনা। বিষয়টি নোটিশ বোর্ডেও টানানো হয়নি। নিজের পছন্দের প্রার্থীকে নিয়োগ দেওয়া জন্য অন্য প্রার্থীদের আবেদনের সুযোগ দেওয়া হয়নি।
মাদ্রাসার অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী মোছাঃ মাহিয়া ইসলাম বলেন,আমাদের রেজিষ্ট্রেশন র্ফি বাবাদ ৫০০ নেওয়া হয়। সরকারি বিধি অনুযায়ী ১০০ টাকা ও পরিক্ষা ফি বাবদ নেওয়া হয় অতিরিক্ত আরো ৩৫০ টাকা।
অভিবাবক কমিটির সদস্য সুজাদউদ্দিন (সুজাদ) বলেন, নানা রকম অনিয়মে জর্জরিত মাদ্রাসা সুপার। ব্যবস্থা কমিটির সবাইকে ম্যানেজ করে সব অপকর্ম করছে। কোন শিক্ষক সুপারের বিরুদ্ধে কথা বললে তাকে বিভিন্ন ভাবে হয়রানী করা হয়।মাদ্রাসার বিভিন্ন খাতে উন্নয়ন বাবদ যে অর্থ বরাদ্দ হয়। সেটা শুধু শোনা যায় বাস্তবে কোন উন্নয়ন হয় না।কিছু দিন আগেও গোপনে শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অনুমোদনের জন্য আবেদন করেন। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসার আমাদেরকে জানানোর পর নিয়োগ বন্ধ করা হয়েছে।
মাদ্রাসা সুপার ইসমাইল হোসেন তার বিরুদ্ধে ওঠা সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, নিয়োগের বিষয় সকল শিক্ষক না জানলেও ব্যবস্থা কমিটি জানে।
এ বিষয়ে গোয়ালন্দ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার জয়ন্ত কুমার দাস বলেন, ওই সুপারের বিরুদ্ধে পাওয়া অভিযোগ তদন্ত করে আইন অনুযায়ী ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।
জানতে চাইলে গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)মোঃ নাহিদুর রহমান কালবেলা কে বলেন,ইসমাইল হোসেনের বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ প্রমাণিত হলে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।