মোঃ দস্তগীর সিকদার মানিক. লামা. (বান্দরবান) বান্দরবান পার্বত্য লামা উপজেলা সরই ইউনিয়নে গভীর রাতে অগ্নিকান্ডে ১৬টি জুম ঘর ভস্মীভূত হয়েছে। মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) রাত আনুমানিক সাড়ে বারোটা থেকে পৌনে একটার মধ্যে পূর্ববেতছড়া টঙ্গঝিরি নামক স্থানে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে।
অগ্নিকান্ডের সুনির্দিষ্ট কারণ এখনো জানাযায়নি। ক্ষতিগ্রস্থ ১৬টি ত্রিপুরা পরিবার এখন নিঃস্ব। ক্ষয়ক্ষতির পরিমান অর্থের মাপকাঠিতে কম হলেও প্রান্তিক মানুষগুলোর জন্য অনেক বিশাল।
মাথা গোঁজার ঠাঁই হারিয়ে তারা খোলা আকাশের নিচে থাকতে হতে পারে। বুধবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (অ:দা) রুপায়ন দেব।
তিনি ক্ষতিগ্রস্থদেরকে জেলা প্রশাসনের পক্ষে সহযোগিতার আশ্বাস দেন এবং তাৎক্ষনিক একটি করে কম্বল ও ১ বস্তা চাউল প্রদান করেন। লামা থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি তদন্ত) এনামুল হক অগ্নিকান্ডে ১৬টি জুমঘর পুড়ে যাওয়ার সত্যতা স্বীকার করে জানান, এই ঘটনায় এখনো কোনো অভিযোগ হয় নাই। অভিযোগ পাইলে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
স্থানীয়দের মাধ্যমে জানাযায়, পূর্ববেতছড়া টঙ্গঝিরিতে পুলিশের সাবেক আইজিপি পলাতক বেনজির আহমেদ এর একটি বাগান বাড়ি ছিল, যা এসপির বাগান নামে পরিচিত। বেনজির আহমেদ এর সেই জায়গায় বিভিন্ন এলাকা থেকে বেশ কিছু ত্রিপুরা পরিবার গিয়ে ছোট ছোট জুমঘর করে বসবাস শুরু করে।
ওই জায়গার দখল কর্তৃত্ব নিয়ে ত্রিপুরা সম্প্রদায় নিজেদের মধ্য দ্বন্দ্ব দেখা দেয়। গত ১৯ নভেম্বর গুঙ্গামনি ত্রিপুরা, পিতা- মৃত আস্তা নিয়া ত্রিপুরা, সাং- টঙ্গঝিরি পূর্ব বেতছড়া পাড়া, ৮নং ওয়ার্ড, ৫নং সরই ইউনিয়ন, থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। ডায়েরিতে ৮ জনকে চিহ্নিত সন্ত্রাসী, অস্ত্র, চাঁদাবাজ হিসেবে উল্লেখ করা হয়। ওই ডায়েরিতে অভিযুক্তরা হলো, স্টিফেন ত্রিপুরা, পিতা- জগমন, সাং- ছবিচন্দ্র পাড়া, ২। মসৈনিয়া, পিতা- গবিন্দ্র ত্রিপুরা, সাং- টঙ্গঝিরি পাড়া, ৩। যোয়াকিম ত্রিপুরা, পিতা- জগমন, সাং- হবিচন্দ্র পাড়া, ৪। সুরেন্দ্র ত্রিপুরা, পিতা- বাশাত ত্রিপুরা, সাং- কলাঝিরি পাড়া, আলীকদম, বর্তমান সাং- গাজন পাড়া, ৫। শিমিয়ন ত্রিপুরা, পিতা- স্টিফেন ত্রিপুরা, সাং- ছবিচন্দ্র পাড়া, সর্ব ইউনিয়ন- ৫নং সরই, সর্ব ওয়ার্ড নং- ০৮, সর্ব থানা- লামা, বান্দরবান পার্বত্য জেলা সহ অজ্ঞাতনামা আরও ৭/৮ জন।
ডায়েরিতে আরো উল্লেখ করেন, ‘পাহাড়ী সন্ত্রাসী গ্রুপ তৈরি করে দীর্ঘদিন যাবৎ উল্লেখিত ঘটনাস্থলের পাড়ায় এসে পাড়ার বাসিন্দাদের অস্ত্রের ভয়ভীতি দেখাইয়া বিভিন্ন সময়ে মোটা অংকের অর্থ দাবী করে আসছে। ইতিপূর্বেও একাধিকবার বিবাদীগণ পাড়ার অসহায় লোকদেরকে ভয়ভীতি দেখিয়ে বিভিন্নজনের নিকট হতে অর্থ আদায় করে নিয়ে যায়। সেখানকার স্থানীয় একজন জানান, অগ্নিকান্ডের ঘটনা তারাই ঘটিয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন সমাজপতি জানান, অগ্নিকান্ডের ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে একটি মহল।