অসীম রায় (অশ্বিনী) বান্দরবানঃ
সরিষা ফুলের মনোমুগ্ধকর গন্ধ দিলো মোরে আনন্দ। দিন শেষে, ঘরে এসে ভোরে আবার যেতাম এভাবে ফুল নিয়ে, অনেক মজা পেতাম
পৌষের শেষ লগ্নে পার্বত্য জেলা বান্দরবান আকাঁ বাঁকা পথ ঘুরে সরিষার হলুদ ফুলে অপরূপ সাজে সেজে উঠেছে। যেন চোখ ধাঁধানো হলুদ সাম্রাজ্য।মনে হচ্ছে প্রকৃতির গায়ে যেন হলুদ। এখন মাঠ-ঘাট শুধুই হলুদের সমারোহ।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে জেলা সদরে – সাঙ্গু নদীর চড়ে চড়ে, ডলুপাড়া ও রেইচা এলাকা সরজমিনে রেইচা গোয়ালিয়াখোলা, ক্যামলং, বাঘমারা, হানসামাপাড়া সহ
, সরষে ফুলের উপর খেলায় মাতোয়ারা বিভিন্ন প্রজাতির মৌমাছি, ভ্রমর, ফড়িং, প্রজাপতিসহ নানা কিট-পতঙ্গ। সরিষে ফুলের হলদে রঙ কয়েক’শ গুণ বাড়িয়ে দিয়েছে প্রকৃতির শোভা।
হলুদ ফুলে যখন হাওয়া লাগে তখন ফুলগুলো মাতাল করা দোল দিয়ে হলুদ তরঙ্গের জোয়ারে প্লাবিত করে প্রকৃতি প্রেমীদের হ্রদয়।ঋতুবৈচিএ্যের সঙ্গে সঙ্গে রূপ বদল হয় প্রকৃতিরও।এখন শীতকাল।
সরিষা ফুলের মৌসুম।এই যেন প্রকৃতির স্বর্গীয় আরেক রূপ।এই সময়ে প্রকৃতি পানে চোখ মেলে যদি কেউ একবার তাকায় সে প্রকৃতির প্রেমে পড়তে বাধ্য।প্রান্তর জুড়ে উষ্ণ হলুদ ফুলের তোড়া নিয়ে যেন প্রকৃতি আপনারই অপেক্ষায়।
প্রকৃতি প্রেমীদের প্রাণ আকৃষ্ট করে নেয় দৃশ্য ও মুগ্ধতায়।প্রকৃতি প্রেমীদের ভালবাসর মাত্রা কয়েকগুণ বৃদ্ধি করে দেয়। কুয়াশা ভেজা হাড় কাপানো শীতের সকাল কিংবা বিকেল বেলায় হলুদ ফুলের ডগায় ডগায় এবং পাপড়িজুড়ে ছোট ছোট শিশির কণাগুলো দেখতে অবিকল মুক্তোর মত লাগে।
তখন প্রকৃতি আরো আকৃষ্ট ও মুগ্ধ করে কাছে টানে প্রকৃতি প্রেমীদের। বান্দরবান জেলা সদরসহ সর্বত্র মাঠে মাঠে হলুদ আভা ছড়িয়েছে সরিষা ক্ষেতগুলো। ক্রমেই সরিষা ফুলের হলুদ রঙে অপরূপ হয়ে উঠেছে প্রকৃতি। শীতের রিক্ততায় সরষে ফুলের হলুদ রঙ যেন প্রাণের স্পন্দন নিয়ে আসে। শীতে সরষে ক্ষেত গ্রাম-বাংলার রুপকে আরও বেশী অপরুপ করে তুলেছে।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়,এই এলাকার বেশিরভাগ শস্য খেতেই এখন সরিষা চাষ হচ্ছে। সরিষা গাছের হলুদ ফুলে উড়ে বেড়াচ্ছে ঝাঁকে ঝাঁকে মৌমাছি।
উপজেলার -ইউনিয়নের চেমীপাড়া এলাকার সরিষা চাষি মোঃ শাহাবউদ্দিন, মংপুং মামাসহ বেশ কয়েক জন চাষিরা বলেন, ধান ও সবজির পাশাপাশি এখন প্রতি মৌসুমে সরিষা চাষ করি।এতে ভালোই লাভ হচ্ছে। তাদের ভাষ্যমতে, এক বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করতে এক হাজার থেকে দুই হাজার টাকা খরচ হয়। ফলন ভাল হলে বিঘাপ্রতি চার থেকে পাঁচ মণ সরিষা উৎপাদন সম্ভব।আর প্রতি মণ সরিষার মূল্য তিন থেকে চার হাজার টাকা। মূলতঃসরিষা একটি তৈল বীজ জাতীয় অর্থকরী ফসল।
কৃষকরা নিজের চাহিদা মিটিয়ে অবশিষ্ট ফসল বিক্রি করে অর্থ উপার্জন করে।সাধারণত বছরের নভেম্বর থেকে জানুয়ারি মাস পর্যন্ত সরিষা ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করা হয়।সরিষা ঝড়ে পড়া পাতা ও ফুল থেকে জৈব সার তৈরি করা যায়।