আলী আজীম, মোংলা (বাগেরহাট):
খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ও মহানগর আ’লীগের সভাপতি আলহাজ্ব তালুকদার আ: খালেক বলেছেন, ১৫ই আগস্ট আমাদের জন্য লজ্জা, ঘৃণা ও অপমানের চাবুক। এর চাইতে বড় কোনো চাবুক বাঙালির পিঠে পড়েছে কি না তা আমার জানা নেই। আজকে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে কোনো লাভ হবে না। কেউ রাজনীতির নামে মানুষ মারতে পারে না। বিশ্বের কোথাও রাজনীতির নামে মানুষ পোড়ানো হয়নি। যেটি আমাদের দেশে হয়েছে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের স্বাধীনতার মহানায়ক এ কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর জীবন মানেই বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাস। তাই বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ সমার্থক। আর বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের মহাসড়কে। বাংলাদেশের উন্নয়ন ও শেখ হাসিনা এখন সমার্থক। এই উন্নয়নের গতিকে আরো বেগবান ও গতিময় করতে হবে। তবেই বিশ্বের বুকে ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ উন্নত একটি দেশে রূপান্তর হবে।
শনিবার (১৯ আগস্ট) বিকালে চাঁদপাই মেছেরসাহ্ মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে বঙ্গবন্ধুর ৪৮তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবসের আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, ১৫ই আগস্ট বাঙালি জাতির জন্য একটি কালো অধ্যায়, আজকের এই দিনে জাতির পিতা সহ তার সকল পরিবারের সদস্যদের নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে আর এই হত্যার পিছনে মূল নায়ক হিসাবে কাজ করেছে বিএনপি’র জিয়াউর রহমান। আমরা এমনই এক দেশে বাস করি যে দেশটি এনে দিয়েছেন আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তাকে বাংলায় কথা বলা ও বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করা লোকই কিন্তু হত্যা করেছে। তারপর থেকে একের পর এক দৃশ্যপট যে পরিবর্তন হয়েছে তাতেই বাঙালির অশুভ আঁতাতের ঘটনা ফুটে উঠেছে। কিন্তু তারপরও বাঙালি ঐক্যবদ্ধ হয়ে জাতির পিতার কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে এসেছেন।
এত রক্ত ও বাঁধার মধ্যে শেখ হাসিনা যেভাবে ফিরে এসেছেন সেভাবেই তিনি পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়নে, মানুষের মৌলিক অধিকার বাস্তবায়নে সর্বতোভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। শেখ হাসিনা মানুষের মৌলিক অধিকার অন্ন, বস্ত্র, শিক্ষা, চিকিৎসা ও বাসস্থান বাস্তবায়নে সর্বতোভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। পাশাপাশি সেগুলো বাস্তবায়নেও কাজ করে চলেছেন। আজকে শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত মানুষের এই মৌলিক অধিকারের নিশ্চয়তা পৌঁছে গেছে।
তিনি বলেন, জনগণ যেমন শেখ হাসিনার সঙ্গে ছিল তেমনি শেখ হাসিনাও কখনও জনগণকে দূরে রাখেননি। শুধু ৭৫ এর হত্যাকাণ্ড নয়। এরপরও শেখ হাসিনা যাতে দেশে না আসতে পারে তার প্রচেষ্টাও নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু জনগণের শক্তিতে হাজার বাধার মধ্যেও শেখ হাসিনা ফিরে এসেছেন। তাকে কেউ আটকিয়ে রাখতে পারেনি।
পদ্মা সেতুর মাধ্যমে বৃহত্তর বাঙালি জনগোষ্ঠীর স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। এই সেতু আমাদের ২০৪১ সালের স্বপ্ন পূরণে আরও একটি বড় ধাপ এই নিয়ে কারও সন্দেহ নেই। পদ্মা সেতু আজ আর স্বপ্ন নয়, বাস্তবতা। অর্থনৈতিক ও সামাজিক বাস্তবতার জন্য পদ্ম সেতু বাংলাদেশের গর্ব। বিশ্বব্যাংক এবং তার সঙ্গে আরও কয়েকটি দাতা গোষ্ঠী যখন পদ্মা সেতুতে অর্থায়ন করল না তখন এ দেশের সাহসী রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা সুচিন্তিতভাবে দেশে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করেন।
বর্তমানে বিএনপির জামাত এদেশের মধ্যে একটি বিশৃঙ্খলা এবং নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চাচ্ছে, তাই আমাদের সকলের উচিত এই সকল বিএনপি জামাতকে এদেশের মাটি থেকে উচ্ছেদ করে দেশের মাটিতে শান্তি বিরাজ করে আওয়ামী লীগ সরকারকে শক্তিশালী করে দেশের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখা। এছাড়া আগামী জাতীয় নির্বাচনে সকল আওয়ামী সদস্যদের ঐক্যবদ্ধ ভাবে কাজ করতে হবে যাতে নৌকার বিজয় সুনিশ্চিত হয় এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে আরো শক্তিশালী করে দেশের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা আরো অগ্রগতি লাভ করে।
আমরা জানি— মানুষের চাহিদার কোনো শেষ নেই, উন্নয়নেরও কোনো শেষ নেই। সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য এই উন্নয়নের চাহিদা অবশ্যই থাকবে। না হলে মানুষ এগোতে পারবে না। মানুষই তার উন্নয়ন নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। শেখ হাসিনা সর্বতোভাবে সে উন্নয়নের কাজ করে যাচ্ছেন এবং যাবেন। এখন আমাদের শুধু তার সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। তবেই সে আমাদের স্বপ্ন পূরণ করতে পারবেন।
এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবু তাহের হাওলাদার, ১নং চাঁদপাই ইউপি চেয়ারম্যান মোল্যা মো: তারিকুল ইসলাম, উপজেলা আ’লীগের সভাপতি সুনিল কুমার বিশ্বাস, সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহীম হোসেন, পৌর মেয়র ও পৌর আ’লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ আ: রহমান, সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব শেখ কামরুজ্জামান জসিম, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ইস্রাফীল হাওলাদার, সহকারী পুলিশ সুপার (মোংলা সার্কেল অফিস) মুশফিকুর রহমান তুষার, থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ সামসুদ্দীন, পৌর আ’লীগের সাবেক সভাপতি আলহাজ্ব শেখ আ: সালাম, পৌর ১নং ওয়ার্ড আ’লীগের সাবেক সভাপতি বেল্লাল হোসেনসহ সকল সহযোগী সংগঠনের নের্তৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে সিটি মেয়র জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুসহ তাঁর পরিবারের সকল শহীদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পরে বঙ্গবন্ধুসহ তাঁর পরিবারের সকল শহীদের রূহের মাগফেরাত কামনায় বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করেন।