দেশে এবার মোট ডেঙ্গু রোগীর অন্তত ৩০ ভাগ ৬২ জেলার। এ ছাড়া রয়েছে প্রত্যন্ত অঞ্চলের রোগীও। জটিলতা বাড়ায় চিকিৎসা নিতে ঢাকামুখী হচ্ছেন তাঁরা। কীটতত্ত্ববিদদের ধারণা, এডিস এলবোপিকটাস মশার মধ্যমে গ্রামাঞ্চলে ডেঙ্গু ছড়াচ্ছে। এ মশার বিস্তৃতি বাড়লে গ্রামাঞ্চলে আক্রান্ত ও মৃত্যুঝুঁকি বাড়বে বলে শঙ্কা করছেন তাঁরা।
ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে এসেছেন ফেনীর পশুরাম থেকে রাজধানীর মুগদা জেনারেল হাসপাতালে এসেছেন মিজানুর রহমান। জটিলতা বাড়ায় চিকিৎসা নিতে এখানে এসেছেন তিনি ।
মিজানুর রহমান সঙ্গে আসা তাঁর এক স্বজন বলেন, অবস্থা খারাপ হওয়ায় এলাকার হাসপাতাল থেকে আমাদের ঢাকা মেডিকেল নেওয়ার জন্য বলে। কিন্তু মুগদা নিয়ে আসছি।
সরকারি তথ্য মতে, মোট ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ছাড়িয়েছে ১৭ হাজার। এর মধ্যে প্রায় সাড়ে ৫ হাজার রোগী ঢাকার বাইরে। চট্টগ্রাম, বরিশালে প্রাদুর্ভাব বেশি থাকলেও ৬২ জেলাতে পাওয়া গেছে ডেঙ্গু রোগী। এসব জায়গায় এরই মধ্যে মারা গেছেন ১৯ জন। এদিকে এরই মধ্যে জটিলতা নিয়ে অনেকেই রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে আসছেন চিকিৎসা নিতে।
মুগদা জেনারেল হাসপাতাল ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডা. নিয়াতুজ্জামান বলেন, প্রায় ৫ শতাংশের মতো ঢাকার বাইরের রোগী আছে। এমনকি মুন্সিগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লা, হবিগঞ্জ, ব্রাক্ষণবাড়িয়াসহ আশপাশের প্রায় সব জেলা থেকে আমাদের এখানে রোগী আছে।
তিনি আরও বলেন, কোনো সাধারণ অবস্থা নিয়ে আমাদের কাছে রোগী আসেনি। যারা এসেছেন তাদের অবস্থা জটিল। কারো আইসিইউ লেগেছে, কারো লাগেনি।
এদিকে জনস্বাস্থ্যবিদেরা মনে করেন, নগরায়নের ফলে জেলা শহরেও বাড়ছে ডেঙ্গুর বিস্তার। সিটি করপোরেশনের বাইরের এলাকাগুলোতে মশা নিধনের তেমন সক্ষমতা না থাকায় বাড়ছে শঙ্কা।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সাবেক পরিচালক বে-নজির আহমেদ বলেন, মফস্বলেও এখন নগরায়ণ হচ্ছে। কনটেনার, প্লাস্টিক সারা দেশজুড়ে ব্যবহৃত হচ্ছে। এর ফলে যেখানে ঝুকিপূর্ণ জনগণ ছিল এক দেড় কোটি সেটি এখন হয়েছে ১৭-১৮ কোটি। তার মানে ডেঙ্গু আমাদের সামনের দিনগুলোতে আরও বড় সমস্যা হিসেবে আসছে।
কীটতত্ত্ববিদদের ধারণা, প্রত্যন্ত অঞ্চলে ডেঙ্গুর বিস্তারে ভূমিকা রাখছে এডিস এলবোপিকটাস মশা। জঙ্গলে বেড়ে ওঠা এ মশার বিস্তৃতি যদি বেড়ে যায় তবে গ্রামাঞ্চলে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ অসম্ভব হয়ে পড়বে বলে শঙ্কা তাদের।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার বলেন, গ্রামে বাশ কেটে রাখে অল্প স্থানে যে পানি জমে থাকে সেখানে এডিস এলবোপিকটাস হয়। এই মুহূর্তে আমাদের গবেষণা করে দেখা দরকার কোন মশাটির ভেক্টোরিয়াল ক্যাপাসিটি কত পারসেন্ট।
পার্বত্যকন্ঠ নিউজ/এমএস