৬৪ টি জেলা নিয়ে ৫৬ হাজার বর্গ মাইলের বাংলাদেশে ৬১ টি জেলা পরিষদ। বাকি ৩টি আমাদের কাছে পরিচিত “পার্বত্য চট্টগ্রাম” নামে।
ইন্দোনেশিয়ার পূর্ব তিমুর বা হাল আমলের দক্ষিণ সুদানের গল্প নিশ্চয় শুনেছেন। আপনার দেশেও কিন্তু একেবারে আড়ালে আবড়ালে তৈরি হয়ে চলেছে “জুম্ম ল্যান্ড” নামক স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন।
যাই হোক , ঘোল না পাকিয়ে মূল জায়গায় আলোকপাত করি।
সময় টা ১৯৭০ সাল। রাতের আঁধারে তৈরি হয়ে যায় রাঙ্গামাটি কম্যুনিস্ট পার্টি । তারই ধারায় ‘৭২ এ আসে চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি। সমিতির কার্যকালের ১ বছরের মাথায় তারা হাজির হলেন নিজস্ব সশস্ত্র বাহিনী, “শান্তিবাহিনী” নিয়ে। দলটি হেলাফেলার, এমন ভুলেও ভাববেন নাহ। তাদেরই মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা ( এম এন লারমা) ‘৭০ এর ঐতিহাসিক নির্বাচনে প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন , যিনি পদাধিকার বলে.১৯৭২ এ স্বাধীন বাংলার গণপরিষদ সদস্য ছিলেন। সদ্য স্বাধীন হওয়া বাংলার সংবিধানের নানা ধারায় বিদ্রোহের সুপ্ত বীজ দেখে এই রাজনীতিবিদ তখনই ভ্রূকুটি করেছিলেন। পার্বত্য চট্টগ্রাম সংক্রান্ত নানা ক্ল’সের প্রভাব বুঝে তিনি বারবার ঘোরতর আপত্তি জানাচ্ছিলেন এবং শেষতক সংবিধানে স্বাক্ষর করেননি। এহেন বাঁক প্রত্যক্ষ করে বঙ্গবন্ধু ১৯৭৩ এ রাঙ্গামাটি শহরে এক জনসভায় বলেন , ” আজ থেকে তোরা সব বাঙ্গালী” । কোন একভাবে এটি আগুনে ঘি ঢালার মতো হয়। ঢাকার অপরিনামদর্শী সিদ্ধান্তের ফল , ‘৭৫ এই প্রত্যক্ষ হয়ে পড়ে.১৯৭৫সালের ডিসেম্বর মাসে তারা আক্রমন করে বাংলাদেশের সামরিক বাহিনী কে। সেই ডিসেম্বরের কনকনে ঠান্ডাকে গণগণে গরমে পরিণত করে শান্তিবাহিনী (?)। সেই শুরু । তারপর থেকে কেবল তাদের সন্ত্রাসের গল্প। সাবেক সেনা প্রধান ও রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বাঙালীদের নিয়ে পাহাড়ে বসবাসের সুযোগ করে দেন, না হলে অনেক আগেই জুম্ম ল্যান্ড নামক স্বাধীন রাষ্ট্র জম্ম নিত।১৯৮৮-১৯৮৯ মনে আছে ? এরশাদ আমলে, বাঙ্গালীর রক্তে স্নান করেছিল তারা। এখনো পার্বত্য চট্টগ্রাম উত্তাল। প্রত্যেক বাঙ্গালীর জন্যই একেকটি রাত শংকার, ভয়ের।
এই তো গেলো উত্থানের গল্প, এবার শুনুন তাদের এগিয়ে যাওয়ার গল্প। আদিবাসীদের সেই পাঁচ দফা দাবি তে তারা নিজেদের উল্লেখ করেছেন “জম্মু জাতি” নামে। ভূখন্ড তাদের “স্বাধীন জম্মু ল্যান্ড”। তাদের জাতির জনক কে জানেন ? সেই তুখোড় এম.এন.লারমা । ভেবে দেখুন তারা নিজেদের আর্মি জে.এল.এ. গঠন করছে , যেখানে রয়েছে বিদেশী মদদ।
সাম্প্রতিক কালে ঘটা করে আদিবাসী দিবস পালন আর রায় সাহেবের “জাতিসঙ্ঘ আদিবাসী ফোরাম” এর সদস্যপদ – সবই ঐ দক্ষিন সুদান প্রতিষ্ঠার স্বপ্নকেই নির্দেশ করে।
তাদের শক্তিমত্তা নিয়ে ভুলেও হেলাফেলা করবেন নাহ। বিদেশী প্রভূর গোপন সহায়তা তারা প্রায়শই পেয়ে থাকে। ১৯৮৪ সালে বাঘাইছড়ি তে শেল অয়েল কোম্পানীর প্রকৌশলী অপহরন, নানিয়ার চরে ড্যানিশ প্রকৌশলী অপহরণ কিংবা তাদের গোলাবারুদের ভান্ডার – সবই বাংলার থিঙ্ক ট্যাঙ্কের জন্য বিশাল কন্সার্ন। সম্প্রতি সেনাবাহিনীর উপর আক্রমন করে, নিহত হয় বাংলার সাহসী জোয়ান।
তাই সময় থাকতেই বাংলার ভূখন্ডের অখন্ডতা রক্ষায় সচেতন হতে হবে, অন্যথায় পরিনতি অপ্রত্যাশিত দিকে মোড় নিবেই।
পার্বত্যকন্ঠ নিউজ/এমএস