মাগুরা পৌর প্রতিনিধি
মাগুরায় জাল পিএইচডি ডিগ্রিধারী ডাঃ মকবুল হোসেন জীবন মানবিক শাখায় এইচ এস সি পাশ করে মাগুরা ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড টেকনোলজি কলেজ ও অক্সফোর্ড নার্সিং ইনস্টিটিউটের প্রফেসর ও ডাক্তার পরিচয় দিয়ে ১ যুগ ধরে চাকুরী করিয়া আসছেন। তার বিরুদ্ধে প্রতারনা, ধাপ্পাবাজি, বিভিন্ন জাল সার্টিফিকেট, সনদ তৈরিসহ নানা অপকর্মের অভিযোগ রয়েছে। সে মাগুরা সদর উপজেলার নিশ্চিন্তপুর গ্রামের আব্দুল সাত্তারের ছেলে। মাগুরা এজি একাডেমি হতে এসএসসি পাশ পরে মাগুরা আদর্শ ডিগ্রি কলেজ থেকে মানবিক শাখায় এইচএসসি পাশ করে যশোর নড়াইল, ঝিনাইদাহ, মাগুরা, ফরিদপুর অঞ্চলে প্রতারনা করে এমবিবিএস, এমডি, এফআরসিএস ও পিএইচডি অর্থাৎ চিকিৎসাশাস্ত্রের সর্বোচ্চ ডিগ্রী গুলো ব্যবহার করে ডাক্তারী করার অভিযোগ রয়েছে। গত ৪ঠা সেপ্টেম্বর শুক্রবার জুম্মার নামাজের সময় ফরিদপুরের ল্যাব এশিয়া ডায়াগনিষ্ট সেন্টার থেকে র্যাবের হাতে আটক হয়। ল্যাব এশিয়ার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ব্যাক্তি জানান ডা. মকবুল হোসেন জীবন দীর্ঘদিন ধরে আমাদের এখানে পিএইচডি ডিগ্রি আমেরিকা নিউরোমেডিসিন ও মেডিসিন কনসালটেন্ট হিসাবে রোগী দেখে আসছেন। আমাদের এখানে উনার কাগজপত্র দেখে প্রাকটিস করার অনুমতি নিয়ে রোগী দেখছেন, যদিও উনার কোন বিএমডিসি নিবন্ধন নেই। তবে প্রতি শুক্রবার স্যার তো ঢাকা বিমানে যশোর নেমে প্রাইভেট কারে করে ফরিদপুর ল্যাবে আসেন। রোগীদের মধ্যে আস্থা অর্জনের জন্য মকবুল হোসেন প্রতি সপ্তাহের শুক্রবারে মাগুরা থেকে নিজস্ব মোটরসাইকেলযোগে মধুখালী গিয়ে সেখান থেকে একটি মাসিক ভাড়াকৃত প্রাইভেটকার যোগে ফরিদপুরে ল্যাব এশিয়াতে নামেন। এদিকে গোপনে র্যাব ৮ এর একটি টিম শুক্রবার মধুখালি বাজার হতে ডা মকবুলের গতিবিধি লক্ষ্য করে প্রাইভেট কারের পিছু নেয়। পরে বেলা দেড়টার দিকে র্যাবের একটি দল ল্যাবএশিয়া ডায়াগনোস্টিকে এসে ডা মকবুল হোসেন জীবনকে খোঁজ করেন। উনি তখন প্যারালাইসিস রোগী দেখছিলেন। মাগুরার পারলা গ্রামের মীর হাশেম আলী জানান, গত বছর ২০১৮ সালে মধুখালি র্যাবে অভিযান চালানোর সময় ডায়াগনিষ্টক সেন্টারের পিছনের দরজা দিয়ে ডা. মকবুল পালিয়ে গিয়েছিলেন।
ডাঃ মকবুল হোসেন জীবন মাগুরায় বঙ্গবন্ধু স্মৃতি সংসদ ও বঙ্গবন্ধু ছাত্র ফেডারেশন নামে নামসর্বস্ব দুটি সংগঠন গঠন করে বঙ্গবন্ধুর নামকে নিজ ব্যক্তি স্বার্থে ব্যবহার করে বঙ্গবন্ধুর নাম কলুষিত করছেন। ছাত্রলীগের একজন সদস্য জানান এই দুটি সংগঠন অনিবন্ধিত এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কোন অনুমোদিত সংগঠন নয়। তার নিজ প্রতিষ্ঠানে অক্সফোর্ড নার্সিং ইনস্টিটিউটের ছাত্রছাত্রীদের নিয়ন্ত্রণ করার উদ্দেশ্যে নিজস্ব আঙ্গিকে এই সংগঠনগুলো তিনি তৈরি করেন, যদিও আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার আগে তিনি বিএনপি’র একজন কট্টর সমর্থক ছিলেন বলে জানা গেছে।
মকবুল হোসেন মূলত ইন্টারনেট থেকে সার্টিফিকেট ডাউনলোড করে সেটা হুবহু প্রিন্ট করে মানুষকে দেখিয়ে থাকেন, ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা যায় এরকম সনদ তিনি একাধিক মানুষের কাছে বিক্রি করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এই চক্রটি এখন বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিশেষজ্ঞ ডাক্তার হিসেবে কাজ করছে।
যশোর, ঝিনাইদাহ, মাগুরা ও ফরিদপুর অঞ্চলে বাহারী বাহারী ভুয়া ডিগ্রি কখনো মেডিসিন, কখনো নিউরো ,গ্যাষ্ট্রো ও বক্ষব্যাধী বিশেষজ্ঞ হিসাবে মানুষের চোখ ফাঁকি দিয়ে প্রতারনা করে রোগী দেখে আসছিলেন। এ ছাড়া সে মাগুরা শান্তি ক্লিনিক প্রাইভেট হাসপাতালে সপ্তাহে একদিন রোগী দেখতে শহরের ভায়না মোড় থেকে প্রাইভেট ভাড়া করে অভিনব কায়দায় শান্তি ক্লিনিকে নামতেন বলে প্রচার করতেন স্যার ঢাকা থেকে এলেন । রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত এই প্রতারক মকবুল ফরিদপুর জেল হাজতে আটক রয়েছেন।