মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় জঙ্গি আস্তানায় গ্রেফতার ২৭ জঙ্গির মধ্যে নটরডেম কলেজের শিক্ষার্থীসহ চীনফেরত প্রকৌশলী ও চিকিৎসকও রয়েছেন। তারা সবাই নতুন জঙ্গি সংগঠন ‘ইমাম মাহমুদ কাফেলার’ সদস্য।
মঙ্গলবার (১৫ আগস্ট) রাতে তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইমের (সিটিটিসি) প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান।
তিনি বলেন, কুলাউড়া থেকে ১২ ও ১৪ আগস্ট দুদফা ইমাম মাহমুদ কাফেলার ২৭ জঙ্গিকে গ্রেফতার করা হয়। এর মধ্য দুজন চীনফেরত প্রকৌশলী ও একজন চিকিৎসক রয়েছেন। রাহাত মণ্ডল ও মেহেদী হাসান ওরফে মুন্না চীনের ইয়াংজু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে স্নাতক করেন; আর সোহেল তানজিম সিরাজগঞ্জের খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক।
তিনি আরও জানান, রাহাত ও মুন্না চীনেই থাকতেন। সম্প্রতি দেশে ফিরে বিমানবন্দর থেকে নিজ বাড়ি না ফিরে সোজা চলে যান সিরাজগঞ্জে জঙ্গি সংগঠন ‘ইমাম মাহমুদ কাফেলা’র অন্যতম সদস্য চিকিৎসক সোহেল তানজিমের কাছে। চীনে লেখাপড়ার সময় সোহেল তানজিমের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ ছিল। পরে সোহেলের সঙ্গে তারা কুলাউড়ার টাট্টিউলি এলাকার আস্তানায় চলে যান। সোহেল সংগঠন থেকে মাসে এক লাখ টাকা বেতন পেতেন।
এদিকে, ১৪ আগস্ট আটক ১৭ জনের মধ্যে এক কিশোরও রয়েছে। সে যশোর জিলা স্কুল থেকে এসএসসি পরীক্ষায় গোল্ডেন ফাইভ পেয়ে ঢাকার নটরডেম কলেজে ভর্তি হয়। দ্বাদশ শ্রেণিতে উঠে জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে জড়িয়ে যায় সে। পরে স্বজনদের ছেড়ে জঙ্গি আস্তানায় চলে আসে।
এর আগে, গত ১৪ আগস্ট মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার কালো পাহাড়ে অভিযান চালিয়ে ১৭ জঙ্গিকে আটক করে সিটিটিসি।
আটক জঙ্গিরা হলেন: নাটোরের বাগাতিপাড়ার গাঁওপাড়ার মৃত আব্দুলের ছেলে জুয়েল মাহমুদ (২৮), সিরাজগঞ্জের পুরাবাড়ির মো. হেলাল উদ্দিনের ছেলে ডা. সোহেল তানভীর রানা (৩০), কক্সবাজারের রামুর দক্ষিণ শ্রীকুল গ্রামের হামিদুল হকের ছেলে সাদমান আরেফিন ফাহিম (২১), রামুর মধ্যম মংনোয়া গ্রামের মো. এনামুল হকের ছেলে মো. ইমতেজার হাসনাত নাবীব (১৯), যশোরের মোল্লাপাড়া গ্রামের আইয়ুব খান বাবুর ছেলে ঢাকার নটরডেম কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র ফাহিম খান (১৭), পাবনার আতাইকোলা গ্রামের আব্দুল্লাহর ছেলে মো. মামুন ইসলাম (১৯), গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের চাদপাড়া গ্রামের আব্দুর রহিম মণ্ডলের ছেলে রাহাত মণ্ডল (২৪), জামালপুর বকশিগঞ্জের পূর্ব দত্তেরচর গ্রামের মো. নূর আলমের ছেলে সোলাইমান মিয়া (২১), নারায়ণগঞ্জ রূপগঞ্জের সেকান্তা শেখের ছেলে আরিফুল ইসলাম (৩৪), বগুড়া সারিয়াকান্দির হাটশিপুর গ্রামের আব্দুল লতিফের ছেলে মো. আশিকুল ইসলাম (২৯), পাবনার আতাইকুলার ফজলু মল্লিকের ছেলে মামুন ইসলাম (২৬) এবং একই উপজেলার শ্রীপুর কয়জুড়ি গ্রামের ইসলাম মণ্ডলের ছেলে রফিকুল ইসলাম (৩৮), ঝিনাইদহের ছয়াইল গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে তানভীর রানা (২৪), সাতক্ষীরার তালার দক্ষিণ নলতা গ্রামের জহুরুল শেখের ছেলে জুয়েল শেখ (২৫), মেহেদী হাসান মুন্না (২৩) চিয়াইপাড়া গ্রামের মো. রেজাউল করিমের ছেলে ও টাঙ্গাইলের ধনবাড়ীর মুমিনপুর গ্রামের সাখাওয়াত হোসেনের ছেলে কোয়েল (২৫)।
এর আগে, ১২ আগস্ট কুলাউড়ায় ‘অপারেশন হিলসাইডে’ ১০ জঙ্গিকে গ্রেফতার করা হয়।