সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলায় বসতঘরে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে মা ও মেয়ের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় দগ্ধ হয়ে ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউট এবং সিলেটের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন একই পরিবারের আরও ৪ সদস্য।
রোববার (২০ আগস্ট) রাত সাড়ে ১২টার দিকে গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলংয়ের রসুলপুর গ্রামের ইয়াকুব মিয়ার দোকানসংলগ্ন বাড়িতে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। প্রথমে দগ্ধ চারজনকে সিলেটের নর্থ ইস্ট হাসপাতালে পরে সেখান থেকে গতকাল রাতে ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে দুজনকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসা হয়।
অগ্নিদগ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা গেছেন ইয়াকুব মিয়ার স্ত্রী জেসমিন বেগম (৩০) ও মেয়ে সুমাইয়া আক্তার (১৩)। দগ্ধ হয়েছেন ইয়াকুব আলী(৪০), তার মা মোসাম্মত হাপতা বেগম(৬০) এবং আরও দুই শিশু সন্তান জুনাইদ(৪) এবং জুবাইর (২)
শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক তরিকুল ইসলাম জানান, সিলেট থেকে দগ্ধ অবস্থায় গতরাতে দুইজনকে জরুরী বিভাগে নিয়ে আসা হয়েছে। তাদের মধ্যে মোঃ ইয়াকুব শতকরা ১৫% ও শিশু জুবায়ের শতকরা ১৫% দগ্ধ হয়েছে। বর্তমানে তাদেরকে জরুরি বিভাগে আবজারভেশনে রাখা হয়েছে।
স্থানীয় রিয়াজ মেম্বার জানান, ইয়াকুব আলী তার মুদি দোকান সংলগ্ন বাড়ির একটি কক্ষে স্ত্রী-সন্তানসহ পরিবার নিয়ে বসবাস করতেন। রোববার দিবাগত রাতে যথারীতি দোকান বন্ধ করে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। একপর্যায়ে রাত সাড়ে ১২টার দিকে ইয়াকুব মিয়ার ঘর থেকে চিৎকার শুনে পাশের বাড়ির লোকজন এসে তাদের বাড়িতে ভয়াবহ আগুন দেখতে পান। তাৎক্ষণিক তারা আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। দোকানে রাখা গ্যাস সিলিন্ডারে আগুন লেগে আগুনের তীব্রতা ভয়াবহ রূপ ধারণ করলে তারা ফায়ার সার্ভিস ও থানা-পুলিশকে খবর দেন। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ সদস্যরা স্থানীয়দের সহযোগিতায় প্রায় দুই ঘণ্টা পরে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এসময় অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় চারজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে প্রেরণ করে এবং জেসমিন বেগম ও তার মেয়ে সুমাইয়া আক্তারের মরদেহ উদ্ধার করে।
একই পরিবারের চারজনকে দগ্ধ অবস্থায় প্রথমে সিলেটের স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।পরে সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ইয়াকুব আলী ও তার শিশু ছেলে জুবায়েরকে ঢাকার শেখ হাসিনা বার্নে নিয়ে আসি।
তিনি আরো জানান, এই ঘটনায় গোয়ানঘাট উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মৃতদের দাফন-কাফনের জন্য ২০ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে। আহত প্রত্যেককে চিকিৎসার জন্য ১০ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে।