ফেলনা কাগজ আর ফেলনা নয়, ফেলে দেয়া পরিত্যক্ত আর টোকানো কাগজে তৈরি হচ্ছে নতুন বোর্ড। বই খাতার কাভার, বাইন্ডিং, মিষ্টিসহ বিভিন্ন ধরনের খাবারের প্যাকেট, জুতা, স্যান্ডেলের বক্স, বিভিন্ন পণ্যের মোড়ক তৈরি হচ্ছে এই বোর্ড দিয়ে।
খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গায় তৈরী এসব বোর্ড কাগজ সরবরাহ করা হচ্ছে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়। এ খাতে কর্মসংস্থান হয়েছে স্থানীয় বেকার নারী-পরুষের। এতে স্বচ্ছলতা ফিরেছে তাদের পরিবারে।
২০০৫ সালের দিকে খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গার পলাশপুর এলাকায় পলাশপুর এলাকায় নতুন বোর্ড তৈরির কারখানা স্থাপন করেন চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী মো. শামছুদ্দিন। তিন বছর আগে তিনি মারা গেলে এ কারখানার দায়িত্ব নেন তাঁর ছেলেরা। পুরাতন খবরের কাগজ, প্রেসের পরিত্যাক্ত ও ছাট কাগজ, বাসাবাড়ি থেকে সংগ্রহ করা পুরাতন বই, কাগজ ও ছিন্নমূল মানুষদের টোকানো কাগজ ক্রয় করেই তৈরি হচ্ছে বোর্ড কাগজ।
পাঁচ বছরের বেশী সময় ধরে বোর্ড কাগজ তৈরীর কারখায় কাজ করেন পলাশপুরের শামীম। তিনি বলেন, একসময় বিভিন্ন কাজ করলেও গত ৫ বছরের বেশী সময় ধরে এখানে কাজ করি। বেতন যা পাই তা দিয়ে ভালো ভাবেই আমার সংসার চলে যায়।
বোর্ড তৈরী কারখানার শ্রমিক মো. ফারুক হোসেন বলেন, এখানে কাজ করেই আমার সংসার চলে। সেখানে কর্মরত নারী শ্রমিক হালিমা বেগম বলেন, আগে বিভিন্ন জনের জমিতে কাজ করতাম। কখনো কাজ না থাকলে পরিবার নিয়ে কষ্টে থাকতাম। এখন এখানে মাসিক বেতনে কাজ করি। সেই বেতন দিয়ে ছেলে-মেয়ে নিয়ে ভালোই আছি।
পুরাতন ও পরিত্যাক্ত কাগজে নতুন বোর্ড তৈরী কারখানার সহকারী ম্যানেজার মো. আবুল কালাম বলেন, এখানে ১৫/১৬জন শ্রমিক মাসিক বেতনে কাজ করে। সকলেই স্থানীয়। এ কারখানার কারণে স্থানীয়দের স্থায়ী কর্মসংস্থান হয়েছে। এ কারখানায় প্রতিদিন গড়ে ৭‘শ থেকে ৮‘শ কেজি বোর্ড উৎপাদন করা হয়। আর প্রতি কেজি ১৮ থেকে ২০ টাকা দরে বিক্রি করা হয়।
কারখানার হেড মিস্ত্রি মো. এনামুল হক বলেন, পুরাতন, পরিত্যাক্ত ও বাসাবাড়ি থেকে সংগ্রহ করা কাগজ এই বর্জ্য হাউজের পানিতে ভিজিয়ে রাখা হয়। বিশেষ ব্যবস্থায় হাউজের পানিতেই মন্ড তৈরি করা হয়। এরপর মেশিনে এই মন্ড সাইজ করে বোর্ড কাগজ তৈরি হয়। তারপর টুকরো বোর্ডগুলো রোদে শুকিয়ে ফিনিশিং ও কাটিং করে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হয়।
কারখানাটির মালিক শোয়েব বলেন, পুঁজির অভাবে মিলটি প্রায় বন্ধ হবার উপক্রম হয়েছিল। কিন্তু কার্টুন বোর্ডের চাহিদা আর এলাকার শ্রমজীবি মানুষের কর্মসংস্থানের কথা বিবেচনা করে পুনরায় চালু করা হয়। সরকারি ঋন সহায়তা পাওয়া গেলে কারখানাটি সম্প্রসারন করা যাবে বলে মনে করছেন কারখানার মালিক শোয়েব। ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের কারণে উৎপাদন প্রক্রিয়া ব্যহত ব্যাহত হয়ে কাঁচামাল নষ্ট হয় বলেও জানান তিনি।
এম/এস
সম্পাদকঃ এম. শাহীন আলম।। প্রকাশকঃ উম্মে হাবিবা
যোগাযোগ: ০১৬৪৭-৬২৭৫২৬/ ০১৮২৩-৯১৯০৯৫ whatsapp
parbattakantho@gmail.com
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধনের জন্য আবেদিত
পার্বত্য কন্ঠ © ২০১৮-২০২৪ সংরক্ষিত