• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:৫৯ অপরাহ্ন
শিরোনাম
তীব্র দাবদাহ বিদ্যুৎ বিভ্রাট পোল্ট্রি খামারে হাঁসফাঁস অবস্থা! খাগড়াছড়ি পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের সম্মেলন ২০ এপ্রিল ব্যাংকে হামলা: ১৮ নারীসহ ৫৩ কেএনএফ সন্ত্রাসীর রিমান্ড মঞ্জুর মানিকছড়িতে মোবাইল কোর্টে জরিমানা নতুন বাজার আনন্দ মেলা খেলার মাঠে গোলবার প্রদান করলেন কাপ্তাই সেনা জোন চন্দ্রঘোনা থানা পুলিশ এর অভিযানে সি আর মামলার ৭ আসামী গ্রেপ্তার পাইপ লাইনে ফাটল : ৩ দিন ধরে কেপিএম এ পানি সরবরাহ বন্ধ বাঘাইছড়িতে প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহের শুভ উদ্বোধন কাপ্তাইয়ে প্রাণীসম্পদ সেবা সপ্তাহের উদ্বোধন রাষ্ট্রীয় ও সামরিক মর্যাদায় বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলামের দাফন সম্পন্ন

ফেরির ই-টিকিট না থাকায় ভোগান্তি, সুবিধা নিচ্ছে দালাল চক্র

সাইফুর রহমান পারভেজ,গোয়ালন্দ প্রতিনিধিঃ / ২২৬ জন পড়েছেন
প্রকাশিত : শুক্রবার, ১৭ জুন, ২০২২

বর্তমানে তথ্য-প্রযুক্তি এগিয়েছে অনেক দুর। কিন্তু এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে সেবা প্রদানে অগ্রসর হয়নি বাংলাদেশ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডবিøউটিসি)। ফেরিতে নদী পাড়ি দিতে ফেরির টিকিট নিয়ে যানবাহন চালকদের হয়রানির অভিযোগ দীর্ঘদিনের। অথচ প্রযুক্তি ব্যবহার করে অনলাইন টিকিটিং ব্যবস্থা চালুর উদ্যোগ গ্রহন করেনি বিআইডবিøউটিসি। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রবেশদ্বার খ্যাত দেশের গুরুত্বপূর্ণ দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুট ব্যবহার করে ফেরিতে প্রতিদিন সাড়ে ৩ থেকে ৬ হাজার যানবাহন পদ্মা নদী পারাপার হয়। ব্যাস্ততম এই নৌরুটে ফেরির টিকিট পেতে যানবাহন চালকদের ভোগান্তির অভিযোগ দীর্ঘ দিনের। অভিযোগ আছে দৌলতদিয়া ঘাট থেকে দালাল ছাড়া মেলে না ফেরির টিকিট। বিশেষ করে পণ্যবাহি ট্রাকের টিকিট সংগ্রহ করতে ট্রাক চালকদের একমাত্র ভরসা দালাল চক্র। দীর্ঘদিন ধরে গোয়ালন্দের দৌলতদিয়া ঘাটে ফেরির টিকিট কাউন্টার ঘিরে গড়ে উঠেছে শক্তিশালী দালাল চক্র। এই দালাল চক্র যানবাহনের চালকদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা নেয়ার পাশাপাশি জাল টিকিট বিক্রির গুরুতর অভিযোগও রয়েছে। বিভিন্ন কারণে ফেরি চলাচল ব্যহত হওয়ায় দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় নদী পাড়ের অপেক্ষায় আটকা পড়ে শত শত যানবাহন। নদী পারের অপেক্ষায় যানবাহনের সারি যত লম্বা হয়, ফেরির টিকিটের জন্য যানবাহন চালকদের গুনতে হয় তত বেশী টাকা। অভিযোগ রয়েছে, শুধু দৌলতদিয়া ঘাট থেকে ফেরির টিকিট দালাল চক্র প্রতিদিন অবৈধ ভাবে আদায় করে অর্ধ কোটি টাকা। সেই সাথে দূর্ভোগ তো রয়েছেই। দৌলতদিয়া ঘাটে দালাল চক্র নিয়ন্ত্রণে সব সময় হিমসিম খেতে হয় স্থানীয় প্রশাসনের। প্রায়ই আটক করা হয় দালাল চক্রের সদস্যদের। ভ্রাম্যমান আদালতের লঘু দন্ড মোকাবেলা করে তারা আবার সেই একই কাজে নেমে পড়েন।

দীর্ঘদিন ধরে এই পরিস্থিতি চলে আসলেও অদৃশ্য কারণে ফেরির টিকিট অনলাইন বা ই-টিকিটিং ব্যবস্থা চালু করেনি বিআইডবিøউটিসি কর্তৃপক্ষ। অনেক আগেই বিমান, ট্রেন, বাসসহ অন্যান্য টিকিট অনলাইনে পাওয়া গেলেও ফেরির টিকিটিং ব্যাবস্থা সেই পুরনোই রয়ে গেছে। এতেকরে কাটছে না ফেরির টিকিট নিয়ে নৈরাজ্য ও অনিয়ম।
দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুট দিয়ে যাতায়াতকারী ট্রাক (নং ঢাকা মেট্টে ড-১৪৬৮৫৫) চালক মো. রাসেল জানান, প্রতি সপ্তাহে অন্তত দুই দিন দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুট দিয়ে তিনি পারাপার হন। প্রতিবারই ফেরির টিকিট বাবদ নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে আড়াই শ থেকে তিনশ টাকা বেশী দিয়ে দালালদের মাধ্যমে ফেরির টিকিট পেতে হয়। আর ঘাট এলাকায় যানবাহনের চাপ বেশী থাকলে আরো কয়েকগুণ বেশী টাকা দিতে হয়। সাথে নানান রকমের ভোগান্তি তো রয়েছেই। অনলাইনে টিকিট পাওয়া গেলে রওনা দেয়ার আগেই আমরা টিকিট হাতে পেতাম। তাহলে অতিরিক্ত টাকাও লাগত না, কোন ভোগান্তির শিকারও হতে হতো না।
রয়েল এক্সপ্রেস পরিবহনের সুপারভাইজার শামীম কবির জানান, তাদের পরিবহনের নদী পারাপার হওয়ার ফেরির টিকিটের মূল্য ১৮২০ টাকা, প্রতিটি টিকিট বাবদ বকশিস দিতে হয় ১০ টাকা, টিকিট সংগ্রহ করার জন্য কোম্পানীর নির্ধারিত লোক রয়েছে, যাকে প্রতি ট্রিপে ৬০ টাকা হারে প্রদান করতে হয়, টোল বাবদ নেয়া হয় ৭৫ টাকা। এ হিসেবে ১৯৬৫ টাকা হলেও ২হাজার টাকা দিলে বেশীর ভাগ সময় বাকি টাকা ফেরত পাইনা। সেই টাকা অনেক সময় নিজের বেতন থেকে দিতে হয়।
গোয়ালন্দ ঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) স্বপন কুমার মজুমদার বলেন, ‘ফেরির টিকিট সংগ্রহ করা নিয়েই যানবাহনের চালক ও দালালদের মধ্যে যোগাযোগটা হয়ে যায়। ফেরির টিকিট অনলাইনে পাওয়া গেলে দালালদের নিয়ন্ত্রণ করা অনেকটা সহজ হয়ে যাবে। আমি এখানে যোগ দেয়ার পরে ফেরি টিকিট দালাল চক্রের শতাধিক সদস্যকে আটক করে মামলা ও ভ্রাম্যমান আদালতে শাস্তি দেয়া হয়েছে। তারপরও সম্পুর্ণ বন্ধ করা সম্ভব হয়নি। দৌলতদিয়া ঘাটের ফেরির টিকিটের দালাল চক্রকে নিয়ন্ত্রণ করতে পুলিশের স্বাভাবিক কাজের পাশাপাশি অতিরিক্ত কাজের চাপ বাড়ে। ইটিকিটিং ব্যবস্থা চালু হলে সেই চাপ অনেকাংশে কমে যাবে।

গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী অফিস সূত্র জানায়, গত ১২ জুন পদোন্নতি পেয়ে বদলি হওয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার আজিজুল হক খান মামুন ফেরির টিকিটিংয়ের দালাল চক্র নিয়ন্ত্রণে আইটি বিশেষজ্ঞদের মতামত সহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি প্রস্তাবনা প্রেরন করেছেন।

বিআইডবিøউটিসি’র চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত সচিব) আহমদ শামীম আল রাজী ফোনে জানান, ফেরিতে যানবাহন পারাপারের টিকিট অনলাইন করার বিষয়ে নানা জটিলতা রয়েছে। এ সকল বিষয় বিবেচনা করে ফেরির টিকিট অনলাইন করার জন্য চিন্তা ভাবনা চলছে।

এম/এস


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ