রাজশাহী মহানগরীর ভাটাপাড়ায় অবস্থিত তাহফিজুল কুরআন নূরানী কিন্ডার গার্ডেনে হালিমা নামে এক ৯ বছরের শিশুকে ছাদ থেকে ফেলে দেয়ার অভিযোগ উক্ত কিন্ডার গার্ডেনের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার বেলা ১১টার দিকে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান,হঠাৎ করে কিছু মাটিতে পড়ার শব্দ, চিৎকার তাদের কানে আসে। শব্দ ও চিৎকার শুনে দৌড়ে গিয়ে দেখেন ৮-৯ বছরের একটি কন্যা শিশু মাটিতে পড়ে আছে। তারা চিৎকার করলে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ ঐ শিক্ষার্থীকে তুলে নিয়ে যায়। স্থানীয় একাধিক নারী পুরুষ জানান এই মাদ্রাসায় প্রায় এই ধরনের ঘটনা ঘটে।
এ নিয়ে এলাকাবাসী থানায় ও সাংবাদিকদের খবর দিলে রাজপাড়া থানা পুলিশের এস.আই মাহফুজসহ বিভিন্ন মিডিয়ার সাংবাদিকগণ ঘটনাস্থলে পৌঁছান।
কর্তৃপক্ষকে গেট খোলার কথা বলা হলে তিনি না খুলে পুলিশের বড় কর্তার ঘনিষ্ট আছে বলে ভয় দেখান। সেইসাথে প্রয়োজনে এই ঘটনা নিয়ে হাইকোর্টে যাবেন উল্লেখ করেন। পুলিশ প্রায় দুই ঘন্টা মাদ্রাসার দরজার সামনে দাঁড়িয়ে থেকে বার বার খুলতে বললেও মাদ্রাসার দ্বিতীয় মালিক ও শিক্ষক জাকিয়া ভিতর থেকে দরজা খোলেন নি।
এরপর রাসিক ৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর নুরুজ্জামান টুকু ঘটনাস্থলে এসে বার বার দরজা খোলার কথা বললেও তাঁর কথায় সায় না দিয়ে তাঁকেও ভয় দেখান এবং এই বিষয় নিয়ে যতদুর যাওয়া লাগবে তত দূর যাবেন বলে জানান জাকিয়া। পরে উপায় না দেখে পুলিশের উপস্থিতিতে দরজা ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করেন কাউন্সিলর, পুলিশ ও সাংবাদিকবৃন্দ। ভিতরে গিয়ে জখম অবস্থায় খাটের উপরে শিশুটিকে শুয়ে কাতরাতে দেখা যায়।
এসময় ৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর নুরুজ্জামান টুকু বলেন, এই মাদ্রাসা সম্পর্কে তাঁর নিকট একাধিক অভিযোগ রয়েছে। প্রতিনিয়ত মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানষিক নির্যাতন করা হয়। এছাড়াও মাদ্রাসার মালিক ছানাউল্লাহ- জাকিয়া দম্পতি অত্যন্ত চতুর ও খারাপ প্রকৃতির মানুষ। তারা বাড়ি ভাড়া ঠিকমত দেয়না। এখনো বাড়ির মালিক লক্ষাধিক টাকা পাবেন। তবে একমাস সময় দেয়া হয়েছে। একমাসের মধ্যে বাড়ির সমুদ্বয় টাকা দিয়ে মাদ্রাসা নিয়ে ৬নং ওয়ার্ড থেকে চলে যেতে বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে এস.আই মাহফুজ বলেন, প্রায় দুই ঘন্টা ধরে মাদ্রাসার প্রধান ফটকে দাঁড়িয়ে থাকলেও দরজা না খোলায় পরে আরো পুলিশ নিয়ে আসা হয়। সেইসাথে স্থানীয় কাউন্সিলরকে ডেকে দরজা ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করে মারাত্বক জখম অবস্থায় শিশু হালিমাকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন তিনি। মাদ্রাসার মূল মালিক ছানাউল্লাহ এসময়ে বাহিরে থেকে আসেন বলেন জানান মাহফুজ।
পুলিশের আরেক এস.আই কাজল কুমার বলেন, ঘটনাস্থল তিনি পরিদর্শন করেছেন। তবে যে জানালার ফাঁক দিয়ে মেয়েটি লাফ দিয়েছে বলে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন আসলে সেখান দিয়ে সবার আড়ালে এটা করা সম্ভব নয়। তবে বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। তদন্ত সাপেক্ষে মেয়ের অভিভাবকগণ অভিযোগ করলে মামলা হবে বলে জানান তিনি।
এত বড় একটা ঘটনায় দায়ী ব্যক্তিদের নামে কোন মামলা ও তাদের আটক না করায় পুলিশের কাজ নিয়ে উপস্থিত এলাকবাসী বিরুপ মন্তব্য করতে শুরু করেছেন। তারা বলছেন অভিযোগকারী না থাকলেও পুলিশের কাজে বাধা প্রদান করার অভিযোগে মাদ্রাসার কর্ণধারদের বিরুদ্ধে মামলা করা যেত। এলাকায় এখন বিষয়টি মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়েছে। সেইসাথে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। তারা আরো বলছেন, মেয়েটির মাকে জাকিয়া ভয়ভীতি দেখিয়ে এবং মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে মুখ বন্ধ করেছে এবং তাদের পক্ষে কথার বলার ব্যবস্থা করেছেন।
এ বিষয়ে রাজপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, মেয়েটির অভিভাবকগণ বাদী না হলে তাদের করার কিছুই নাই। বাধী হলে মামলা হবে। সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।
এম/এস
সম্পাদকঃ এম. শাহীন আলম।। প্রকাশকঃ উম্মে হাবিবা
যোগাযোগ: ০১৬৪৭-৬২৭৫২৬/ ০১৮২৩-৯১৯০৯৫ whatsapp
parbattakantho@gmail.com
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধনের জন্য আবেদিত
পার্বত্য কন্ঠ © ২০১৮-২০২৪ সংরক্ষিত