জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাতে বাংলাদেশ সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হতে যাচ্ছে। অথচ জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ কোনো মতে দায়ী নয় বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বৃহস্পতিবার (২৬ মে) সকালে রাজধানীর হোটেল প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁওয়ের বলরুমে আয়োজিত বাংলাদেশ ডেলটা প্ল্যান-২১০০ ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স: 'বাস্তবায়নে সমস্যা ও প্রতিবন্ধকতা' শীর্ষক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। সম্মেলনে গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়েছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ’জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষেত্রে সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। অথচ বাংলাদেশ কোনো মতে দায়ী নয়। কিন্তু বাংলাদেশকে এ আঘাতটা সহ্য করতে হবে। সে ক্ষেত্রটা চিন্তা করে আমরা কিছু স্বল্প মেয়াদি, কিছু মধ্য মেয়াদি ও কিছু দীর্ঘ মেয়াদি পদক্ষেপ নিয়েছি। বাংলাদেশকে যাতে আমরা সুরক্ষিত করতে পারি সেজন্য সুদূর প্রসারী পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি।’
তিনি আরও বলেন, ’আমাদেরকে প্রতি নিয়ত বন্যা, খরা, ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, নদী ভাঙন, লবণাক্ততা, পাহাড় ধস মোকাবিলা করতে হচ্ছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রণীত দুর্যোগ মোকাবিলা নীতিমালা আমরা অনুসরণ করে চলি। কিন্তু আমাদের নদী-মাতৃক দেশ, আমাদের দেশের ভেতর দিয়ে প্রায় ৭০০ নদী আছে। এ ছাড়া আমাদের জলাভূমি আছে। বাংলাদেশ একটি ব-দ্বীপ। এই ব-দ্বীপ আমাদের এমনভাবে গড়ে তুলতে হবে যাতে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম সুন্দরভাবে বাঁচতে পারে। সেদিকে লক্ষ রেখে আমরা পদক্ষেপ নিয়েছি।’
জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবিলায় বন্ধুপ্রতীম দেশ ও উন্নয়ন সহযোগীদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ’ব-দ্বীপ পরিকল্পনা একটি তথ্য-প্রযুক্তি ও বিজ্ঞানভিত্তিক টেকনো ইকোনমিক মহাপরিকল্পনা পর্যায়ক্রমিক বাস্তবায়নে ২০২৫ সাল নাগাদ জিডিপির প্রায় ২ দশমিক ৫ শতাংশ অর্থের প্রয়োজন হবে। ফলে অর্থায়ন থেকে শুরু করে জ্ঞান, প্রযুক্তি ও অভিজ্ঞতা বিনিময়ের প্রতিটি ক্ষেত্রে আমাদের বন্ধুপ্রতীম দেশ এবং উন্নয়ন সহযোগীদের অংশগ্রহণ একান্তভাবে অপরিহার্য।’
বাংলাদেশকে সহায়তার জন্য এগিয়ে আসায় প্রধানমন্ত্রী নেদারল্যান্ডকে ধন্যবাদ জানান। সেই সঙ্গে তিনি অন্য দেশগুলো এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে এবং আমরা সেটা প্রমাণ করেছি। প্রাকৃতিক দুর্যোগ, করোনাভাইরাসের আঘাত, ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ। যার ফলাফল বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা। এর মধ্যেও আমরা প্রচেষ্টা চালাচ্ছি আমাদের দেশের মানুষের যেন কোনো রকম কষ্ট না হয়। তাদের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, অর্থনীতিকে গতিশীল রাখা এবং দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার। আমরা নানা ধরনের প্রণোদনা দিচ্ছি এবং প্রণোদনা দিয়ে অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে সক্ষম হয়েছি। আমাদের মাথাপিছু আয় বেড়েছে ২ হাজার ৮২৪ মার্কিন ডলার। জিপিপি প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ২ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। আমরা চাই, আমাদের দেশ আরও উন্নত হবে। এমডিজি যেমন আমরা সফলভাবে বাস্তবায়ন করেছিলাম, এসডিজি বাস্তবায়নে আমরা পদক্ষেপ নিয়েছি।’
সম্মেলনের সফলতা কামনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ’আজকের কনফারেন্সে কী কী বিষয় গুরুত্বপূর্ণ, কী কী চ্যালেঞ্জ আমাদের মোকাবিলা করতে হবে, কীভাবে বাস্তবায়ন করলে আমরা সফলভাবে এগিয়ে যেতে পারবো সে বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হবে। আমি আশা করি, এর মধ্য দিয়ে আমাদের ডেলটা প্ল্যান বাস্তবায়নের পথ আরও সুগম হবে। আমরা অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করতে পারবো এবং দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবো।’
এম/এস
সম্পাদকঃ এম. শাহীন আলম।। প্রকাশকঃ উম্মে হাবিবা
যোগাযোগ: ০১৬৪৭-৬২৭৫২৬/ ০১৮২৩-৯১৯০৯৫ whatsapp
parbattakantho@gmail.com
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধনের জন্য আবেদিত
পার্বত্য কন্ঠ © ২০১৮-২০২৪ সংরক্ষিত