মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, নিজস্ব সংবাদদাতা লামা:
করোনা ভাইরাস সংকটে ক্ষতিগ্রস্ত ৫০ লক্ষ পরিবারের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী নগদ অর্থ সহায়তার ঘোষণা দিয়েছেন। ইতিমধ্যে অনেকে নগদ অর্থ সহায়তার টাকা পেয়েছেন আবার অনেকের নির্দিষ্ট মোবাইলে নাম্বারে টাকা চলে আসছে। সুবিধাভোগীরা অনেকে অশিক্ষিত ও মোবাইল ব্যবহার করতে না জানায় কিছু দুস্কৃতি প্রকৃতির লোক সে সুযোগকে কাজে লাগিয়ে অনেকের টাকা কৌশলে হাতিয়ে নিচ্ছে। এমন ঘটনা ঘটেছে বান্দরবানের লামা উপজেলার রূপসীপাড়া ইউনিয়নে।
রূপসীপাড়া ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের মেম্বার আব্দুল মান্নান বলেন, ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের গ্রাম পুলিশ (চকিদার) মোঃ বেলাল ‘দেখি বলে সহজ সরল পাহাড়ি বাঙ্গালী মানুষের মোবাইল হাতে নিয়ে পিন সেটআপ করে নিজের মোবাইল নাম্বারে মোবাইল ব্যাংকিং এর অ্যাকাউন্ট হতে টাকা ট্রান্সফার করে নিচ্ছে’। সে টাকা ট্রান্সফার করে নিয়েছে এমন ২৫/৩০ জন পাহাড়ি বাঙ্গালী লোকজন আমাকে অভিযোগ করেছে। তার মধ্যে ১১ জন সুবিধাভোগী পৃথক পৃথক লিখিত অভিযোগ নিয়ে রোববার দুপুরে লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে আসেন। অভিযোগকারী আসার বিষয়ে আমি মুঠোফোনে লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে জানালে তিনি অভিযোগ গুলো আমাকে নিয়ে রাখতে বলেন। আজ রোববার আশুরার কারণে অফিস বন্ধ থাকায় আগামীকাল সোমবার তিনি বিষয়টি দেখবেন। চকিদার বেলাল এইভাবে কমপক্ষে অর্ধশত মানুষের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে জানা গেছে। সে রূপসীপাড়া ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের টিয়ারঝিরি এলাকার এনছান বিশ্বাস এর ছেলে।
টাকা হাতিয়ে নেয়ার বিষয়ে বিচার চেয়ে ও নিজেদের টাকা ফেরত পেতে রোববার (৩০ আগস্ট) দুপুরে ১১ জন পাহাড়ি বাঙ্গালী নারী পুরুষ লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ নিয়ে আসেন। তারা হল, মামু খই মার্মানী, মমতাজ বেগম, কংইকামে মার্মানী, মোঃ ফারুক, থুইহ্লাচিং মার্মা, চোমাচিং মার্মানী, সুমারী মার্মানী, মাতুই মার্মানী, মোঃ চাঁন মিয়া, মোঃ বেলাল (২নং ওয়ার্ডের চকিদার) ও সুমন বড়ুয়া। রোববার আশুরার কারণে সরকারি অফিস বন্ধ থাকায় অভিযোগকারীরা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নির্দেশে অভিযোগ গুলো ওয়ার্ড মেম্বারের কাছে দিয়ে যায়।
অভিযোগকারী চোমাচিং মার্মানী বলেন, আমি রূপসীপাড়া বাজারে আসলে ৭নং ওয়ার্ডের চকিদার মোঃ বেলাল আমার মানবিক সহায়তার টাকা আসছে কিনা জিজ্ঞাসা করে। আমি বলি জানিনা। সে আসছে কিনা দেখার জন্য আমার মোবাইল নেয়। কিছুক্ষণ মোবাইলটি টিপাটিপি করে আমার মোবাইল ফেরত দিয়ে বলে তোমার টাকা আসেনি। পরে রূপসীপাড়া বাজারের মোবাইল ব্যাংকিং দোকানদারের মাধ্যমে জানতে পারি আমার টাকা তোলা হয়ে গেছে। মমতাজ বেগম, মোঃ চাঁন মিয়া ও আরেক গ্রাম পুলিশ বেলার সহ অনেকে বলেন, আমাদের মোবাইল থেকে ৭নং ওয়ার্ডের চকিদার মোঃ বেলাল তার মোবাইলে (০১৮২১৮৭৫৭০৮) টাকা ট্রান্সফার করে নিয়েছে। আমাদের কাছে বেলাল যে অনলাইলে টাকা ট্রান্সফার করেছে তার ডকুমেন্ট আছে। আমরা বিচার চাই।
৭নং ওয়ার্ডের চকিদার মোঃ বেলাল বলেন, আমি অনেকের মোবাইল হাতে নিয়েছে সত্যি। টাকার বিষয়ে জানিনা।
রূপসীপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান ছাচিং প্রু মার্মা বলেন, অনেকে আমার কাছে অভিযোগ নিয়ে আসলে আমি তাদের উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে যেতে পরামর্শ দিই।
এবিষয়ে মুঠোফোনে কথা হয় লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ রেজা রশীদের সাথে। তিনি বলেন, আমি অভিযোগকারীদের লিখিত অভিযোগগুলো ওয়ার্ড মেম্বারের কাছে রাখতে বলেছি। আগামীকাল আমি বিষয়টি দেখব।
প্রসঙ্গত, “মুজিব বর্ষে ‘করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত ৫০ লক্ষ পরিবারের মধ্যে নগদ অর্থ সহায়তা প্রদান কর্মসূচি হাতে নেয় সরকার। প্রকল্পের নির্দেশিকা মতে ভাসমান মানুষ, নির্মাণ শ্রমিক, গণপরিবহন শ্রমিক, রেস্টুরেন্ট শ্রমিক, ফেরিওয়ালা, রেলওয়ে কুলি, মজুর, ঘাটশ্রমিক, নরসুন্দর, দিনমজুর, রিকশা/ভ্যান গাড়িচালক এবং নিম্ন মধ্যবিত্ত আয়ের লোকসহ মানবিক সহায়তা পাওয়ার যোগ্য বলে বিবেচিত হয়।
সম্পাদকঃ এম. শাহীন আলম।। প্রকাশকঃ উম্মে হাবিবা
যোগাযোগ: ০১৬৪৭-৬২৭৫২৬/ ০১৮২৩-৯১৯০৯৫ whatsapp
parbattakantho@gmail.com
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধনের জন্য আবেদিত
পার্বত্য কন্ঠ © ২০১৮-২০২৪ সংরক্ষিত