খাগড়াছড়ি জেলার মহালছড়ি মাইসছড়ি ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের জয়সেন পাড়ার পশ্চিমে ৫একর নামক এলাকায় অগ্নিকান্ডের স্থানটি পরিদর্শন গিয়ে উক্ত এলাকায় কয়েকটি অস্থায়ীভাবে নির্মিত জুমঘর বা কুঁড়েঘর পোড়া অংশ বিশেষ দেখতে পা তবে পুড়ে যাওয়া সেই ঘরগুলো পাহাড়ের ছন, বাঁশ দিয়ে তৈরি দৈর্ঘ্য ৬ফুট প্রস্থে ৫ফুট দিয়ে সদ্য নির্মিত জুমঘর বা কুঁড়েঘর।
এমতাবস্থায় একটি নিরপেক্ষ তদন্ত অত্যন্ত প্রয়োজন বিধায় এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিগণ, সাংবাদিক এবং সরকারী কর্মকর্তাসহ একটি দল উক্ত স্থানে সরেজমিনে পরিদর্শন করে আসেন ও সকলের মতামত নিয়ে আসেন। পরিদর্শনে প্রতীয়মান হয় যে উক্ত ঘটনাটি নেহায়েতই মিথ্যা ও বানোয়াট এবং উদ্দেশ্য প্রণোদীত।
আরো পরিলক্ষিত হয় যে, উক্ত পাহাড়ের মালিক দাবিকারী জৌতিচন্দ্র চাকমা(৬৫) বলেন যে আমি এই পাহাড়ী জমির মালিক এই জায়গা আমার বাবার নামে সরকারি কোষাগারে রেকর্ড রয়েছে তা ৮০ দশকের সময়ে পরিবর্তন ঘটেছে তবুও আমি সরকারি নিয়ম অনুসরণ করে খাজনা পরিশোধ করে আসছি। বর্তমানে জুমচাষ করার জন্যে আমার নিকটতম ভূমিহীন (ভাগিনা ও ভাগনি জামাই) আত্মীয়দের চাষাবাদ করে থাকার জন্যে পাহাড়ের ভূমিগুলো তাদের দিয়েছি বিভিন্ন কিন্তু তিনি একটি বারও বলেন নাই যে, এই সদ্য নির্মিত ঘরগুলো কে বা কারা পুড়ে দিয়েছে। মোদ্দা কথা এই অগ্নিকান্ডের বিষয়ে মালিক কর্তৃক কারোর প্রতি আক্ষেপ নাই। অপরদিকে ৮০/৮২ সালে আসা কাগজধারী পাহাড়ের মালিক মোঃ মোহর আলী তিনিও বলছেন চৌহদ্দি অনুয়ায়ী এই মালিক আমি। এছাড়া স্থানটি দূর্গম এবং জনমানবহীন এলাকায় হওয়ায় সেখানে নয়টি ঘরের কোন অস্থিত্ব বলে এমন তথ্য প্রমান পাওয়া যায় নি। পাশাপাশি উক্ত জায়গাটির নথিপত্র চাওয়া হলে স্থানীয়দের মধ্যে শুধুমাত্র স্থানীয় বাঙ্গালীরাই তাদের রেকর্ডকৃত কবুলিয়ত নামার কপি প্রদর্শন করতে সমর্থ হয় যা সঠিক বলে প্রমানিত হয় ও স্থানীয় হেডম্যান ও ইউনিয়ন চেয়ারম্যান কর্তৃক তা সঠিক বলে দাবি করা হয়। তবুও বাস্তবতার নিরিখে উপজেলা ভূমি অফিস কর্তৃক তদন্ত স্বাপেক্ষে শান্তি সম্প্রীতি বজায় রাখার প্রয়োজনে পাহাড়ের সমস্যা সমাধানে অগ্রণী ভূমিকা রাখতে পারে।
উপস্থিত মালিক দাবিকারী মোহর আলি বলেন যে, কিছু দিন পূর্বে এই জমিটি কয়েকজন পাহাড়ের কিছু দূর্বৃত্ত আমাদের জমি দখলের অপচেষ্টা করে। তারা উক্ত জমির বাঙালি মালিকদের উপর নির্যাতন করেন ও সূর্য ভানু নামক একজনের মাথা ফাটিয়ে দেন। যার পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৮ শে ফেব্রুয়ারি বাঙ্গালি জনগণ উপজেলা ভূমি কমিশনার বরাবর তদন্ত স্বাপেক্ষে সঠিক সুষ্ঠু ন্যায় আশু সমাধানের জন্য আবেদনপত্র প্রেরণ করেন। পাহাড়ের কিছু জনগোষ্ঠী শান্তিপূর্ণ পরিবেশের পরিস্থিতি ঘোলাটে করার উদ্দেশ্যে গত ১৪ই মার্চ আনুমানিক রাতে ১০.০০ঘটিকায় অস্থায়ী ভাবে তাদের নির্মিত কয়েকটি ঘরে নিজেরাই আগুন ধরিয়ে দেয় এবং বাঙ্গালীদের উপর দোষ চাপিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করতে থাকে।
তবে এই বিষয়ে ৪নং ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সাজাই মারমা বলেন এই মাইসছড়ি ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের পরিবেশ সম্পূর্ণ পরিস্থিতি বিবেচনা করে প্রতিয়মান হয় যে অত্র এলাকার সার্বিক শান্তি এবং সম্প্রীতি নষ্ট করার উদ্দেশ্যে সাধারণ শান্তিপ্রিয় জনগণের মাঝে ভেদাভেদ সৃষ্টি করার উদ্দেশ্যে কতিপয় দূর্বৃত্ত কর্তৃক এমন ঘটনা ঘটাতে পারে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।
এই বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও ভূমি কমিশনার বলেন উক্ত এলাকার ঘটনাটি ঘটেছে তবে জায়গাটি আমি সরেজমিনে দেখে আসবো,যথাযথ আশু সমাধানের লক্ষ্যে সকলকে নিয়ে পাহাড়ের শান্তি সম্প্রীতি বজায় রাখতে কাজ করবো।
উল্লেখ্যে যে, গত ১৫ মার্চ ২০২২ তারিখ হতে বেশ কিছু অনলাইন ভিত্তিক পত্রিকা ও নিউজ পোর্টাল এবং সামাজিক মাধ্যমে দিবাগত রাত আনুমানিক ২.০০ ঘটিকায় মাইসছড়ি ইউনিয়নের জয়সেনপাড়া এলাকার পশ্চিমে ৪নং ওয়ার্ডে কিছু স্থানীয়দের নির্মিত জুমঘর বা কুঁড়েঘরে আগুন লাগানোর ঘটনাকে নিয়ে বিভ্রান্তিমূলক অপপ্রচার চালাচ্ছে।
পরিশেষে উক্ত ওয়ার্ডের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি বলেন সাধারণ জনগনকে দূর্বৃত্তদের অপপ্রচার দ্বারা বিভ্রান্ত না হয়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি এবং শান্তি বজায় রাখার জন্য অনুরোধ করা হয়।
এই বিষয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ হারুনুর রশিদ বলেন আমার পরিদর্শন টিম পুড়ে যাওয়ার জুমঘর বা কুঁড়েঘর পরিদর্শন করে আসেন কিন্তু এখন পর্যন্ত কোন অভিযোগ বা মামলা করা হয় নি। তবে তিনি আরো বলেন ঘটনার বিষয়টি অধিকতর গুরুত্ব দিয়ে তদারকি করা হচ্ছে।
এম/এস
সম্পাদকঃ এম. শাহীন আলম।। প্রকাশকঃ উম্মে হাবিবা
যোগাযোগ: ০১৬৪৭-৬২৭৫২৬/ ০১৮২৩-৯১৯০৯৫ whatsapp
parbattakantho@gmail.com
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধনের জন্য আবেদিত
পার্বত্য কন্ঠ © ২০১৮-২০২৪ সংরক্ষিত