মাগুরা বহিরাগত মেকানিকাল সহকারীর কাজ করে মাত্র সাত বছরেই কোটিপতি বনেগেছেন লিটন বিশ্বাস । তিনি এখন মাগুরা শহরে ৪ টি বহুতলা বাড়ি ও শত বিঘা জমির মালিক। কিভাবে তিনি এক অল্প সময়ে এত সম্পদের মালিক হলেন তার হিসাব মিলছে না কিছুতেই। লিটন বিশ্বাস মাত্র সাত বছর আগেও অন্যের গাড়িতে ড্রাইভার চাকুরী করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। এখন তার লাইফ স্টাইল দেখে মনে হয় তিনিই মাগুরা বিআরটিএ অফিসের পরিচালক।
কিভাবে তিনি মাত্র সাত বছরে কোটপতি বনেগেলেন তার নেপথ্য কারণ অনুসন্ধানে জানাগেছে, আজ থেকে সাত বছর আগে ঘটনা ক্রমে পরিচয় হয় মাগুরা বিআরটএ অফিসের সেই সময়ের দুর্নীতিবাজ সহকারী পরিচালক বিলাস সরকার এর সাথে। তিনি লিটন বিশ্বাসকে মাগুরা বিআরটিএর কার্যালয়ে মেকানিক হিসেবে নিয়োগ দেন। । এরপর তদবির ও অবৈধভাবে ড্রাইভিং লাইসেন্স পাইয়ে দেওয়ার কাজ এই লিটন বিশ্বাস এর মাধ্যমেই শুরু হয়। অল্প কিছুদিনের মধ্যেই লিটন বিশ্বাস পুরো বিআরটিএ অফিসে রাম রাজত্ব কায়েম করেন। হাতে পেয়ে যান টাকা বানানোর আলাদিনের চেরাগ। এরপর আর পিছনে তাকাতে হয়নি। বর্তমানে তিনি বিপুল অর্থ-বিত্তের মালিক। মাগুরা মোল্লাপাড়া নিজে বসবাস করেন একটা টিনের বাড়িতে, মাগুরা পুলিশ সুপারের বাসভবনের পাশে একটা প্লট কিনে বিশাল অট্টালিকা তৈরি করছেন এবং মাগুরা জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি তানজেল হোসেন খানের বাড়ির সামনে একটা বাড়ি কিনেছেন সেটাও কোটি টাকার উপরে। মোল্লাপাড়াতে কিনেছেন ১০ শতকের একটা প্লট। তারপাশেই আর একটা কিনেছেন ৪ শতকের একটা প্লট। এই লিটন বিশ্বাসের দুইখানাা প্রাইভেট কার আছে যার নাম্বার ঢাকা মেট্রো-খ ১১-৯০-৯৪ আর একটা নোয়া যার নাম্বার ঢাকা মেট্রো-চ ১১-৬৫-২৪। লিটন বিশ্বাসের খান পাড়ায় যে বহুতল ভবনটা সদ্য কেনা সেখানে এখন মাগুরায় কর্মরত বিআরটিএর ইন্সপেক্টর সজীব সরকার ভাড়া থাকেন। মাগুরা বিআরটিএর এডি এস এম মাহফুজুর রহমান বলেন, আমি মাগুরায় বদলি হয়ে আসার পর থেকেই এই লিটন বিশ্বাসকে অফিসে দেখছি। তবে লিটন বিশ্বাস বাড়ি গাড়ির মালিক কিভাবে হয়েছে আমার জানা নাই। মাগুরা বিআরটিএতে এখন সরকারি কর্মচারী আছেন মেকানিকাল অ্যাসিস্ট্যান্ট আবু জামাল ও অফিস সহায়ক ব্রজেন কুমার।
লিটন বিশ্বাসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি খান পাড়ার বাড়িটা বাদে সবগুলোই নিজের বলে স্বীকার করেন। খান পাড়ার বাড়িটা বোনের নামে ক্রয় করে থাকতে পারেন বলে সবার ধারনা । মাগুরা মাইক্রো স্ট্যান্ডের এক চালক বলেন, লিটন ভাই আমাদের সঙ্গে ড্রাইভারি করতেন বিআরটিএ-তে কাজ করার পরপরই তার ভাগ্য পরিবর্তন হয়ে গেল। হয়তো তিনি আরব্য উপন্যাসের আলাদিনের চেরাগ পেয়েছেন । আমাদেরও খুব ইচ্ছা করে ড্রাইভারি বাদ দিয়ে বিআরটিএ অফিসে দালালী কাজ করার।
সরোজমিনে লিটন বিশ্বাসের গ্রামের বাড়ি চরচৌগাছি যেয়ে দেখা যায়, তিনি গ্রামে প্রচুর টাকা দান খয়রাত করেন । অনেকে তাকে গ্রামের হাতেমতাঈ হিসেবে আখ্যায়িত করেন। এক সময় তার দাদা ভাদু বিশ্বাসের অনেক জমি জাতি ছিল কিন্তু লিটন বিশ্বাসের বাবা কাছেম বিশ্বাস একজন ভবঘুরে মানুষ ছিলেন এবং ৫টা বিয়ে করেছিলেন। তার দাদাকে লাঠিপেটা করে মেরে ফেলেছিলেন বলে গুন্জন রয়েছে।। এর ফলে তার বাবা পৈত্রিক সম্পত্তি অধিকাংশ খুঁইয়ে ফেলেন ।
এ বিষয়ে ড্রাইভার লিটন বিশ্বাসের সাথে কথা বললে তিনি জানান, এই সব সম্পদ তিনি নিজে পরিশ্রম করে অর্জন করেছেন। তার ইনকামট্যাক্স ফাইলে সব হিসাব দেওয়া আছে। মাগুরা সাধারন মানুষ অবিলম্বে এইসব দুর্নীতিবাজ দালাল চক্রের হাত থেকে বিআরটিএ কার্যালয়কে মুক্ত করার দাবী তুলেছেন।একই সাথে কিভাবে বা কোন পথে ড্রাইভার লিটন এত ধন সম্পদের মালিক হয়েছেন তা খতিয়ে দেখার জন্য দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন।
সম্পাদকঃ এম. শাহীন আলম।। প্রকাশকঃ উম্মে হাবিবা
বার্তা সম্পাদক : এম. লোকমান।
যোগাযোগ: ০১৬৪৭-৬২৭৫২৬/ ০১৮২৩-৯১৯০৯৫ whatsapp
parbattakantho@gmail.com
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধনের জন্য আবেদিত
পার্বত্য কন্ঠ © ২০১৮-২০২৪ সংরক্ষিত