লামা-রূপসীপাড়া সড়ক: রাস্তার ভূমি অধিগ্রহণ হয়েছে তিন বছরেরও বেশি সময়। প্রকল্পের কাজ ইতিমধ্যে সমাপ্ত, হয়েছে অসংখ্য চিঠিপত্র চালাচালি। কিন্তু নানা জটিলতায় এখনো ভূমি অধিগ্রহণের ক্ষতিগ্রস্থ মালিকদের ক্ষতিপূরণ বাবদ কোন অর্থ পরিশোধ করা হয়নি। ক্ষতিগ্রস্থ লোকজন তদবির করেও মিলছেনা কোন সমাধান। বলছিলাম বান্দরবান জেলার লামা উপজেলার রূপসীপাড়া ইউনিয়নের লামা-রূপসীপাড়া-মংপ্রু পাড়া সড়কের কথা।
বান্দরবান জেলা প্রশাসকের এলআর শাখা ও ক্ষতিগ্রস্থদের সূত্রে জানা যায়, পার্বত্য চট্টগ্রাম পল্লী উন্নয়ন ২য় পর্যায় (পিএমও অংশ) শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় বান্দরবান জেলা প্রশাসকের চাহিদা অনুযায়ী লামা-রূপসীপাড়া রাস্তার জন্য ভূমি অধিগ্রহণ করা হয়। যার এল.এ মামলা নং- ০১/২০১৮। রাস্তার ভূমি অধিগ্রহণে রূপসীপাড়া ইউনিয়নের ২৯৪নং দরদরী মৌজার ২০ জন এবং ২৯৮নং লৈক্ষ্যং মৌজার ১২ জন লোকের জায়গা পড়েছে। উক্ত প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করে এলজিইডি লামা।
পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের গত ১৪ নভেম্বর ২০২১ইং ৪৩৩নং স্মারকে দেয়া এক পত্রে জানা যায়, এই প্রকল্পের ক্ষতিপূরণ বাবদ ১ কোটি ৪৪ লক্ষ ৫৭ হাজার ৩২৬ টাকা (২০০% হারে) ইতিমধ্যে বান্দরবান জেলা প্রশাসকের কাছে গত ২৪ নভেম্বর ২০২০ তারিখে ন্যস্ত করা হয়েছে। দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও এই ক্ষতিপূরণের টাকা পৌঁছায়নি ভূমি ক্ষতিগ্রস্থ ৩২জনের কাছে।
জানা যায়, লামা-রূপসীপাড়া রাস্তার ভূমি অধিগ্রহণ মামলাটি ১১ জুলাই ২০১৮ইং তারিখে রুজু করা হয়। গত ২০ ডিসেম্বর ২০১৮ইং এক সার্কুলার মতে ভূমি অধিগ্রহণের ক্ষতিপূরণ ২০০% দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে সরকার। তার আগে ১১৫% টাকা দেয়ার নিয়ম রয়েছে। ইতিমধ্যে ক্ষতিপূরণের টাকা ২০০% হারে আসলেও কোন হারে দেয়া হবে, সে বিষয়ে মতামত জানতে চেয়ে গত ১২ এপ্রিল ২০২১ইং বর্তমান জেলা প্রশাসক ভূমি মন্ত্রণালয়ে এক পত্র প্রেরণ করেছেন। পত্রের কোন জবাব এখনো না আসায় ঝুলে আছে ক্ষতিগ্রস্থদের ক্ষতিপূরণের টাকা।
রাস্তার ভূমি অধিগ্রহণে জায়গা পড়েছে এমন একজন হলেন রূপসীপাড়া পুলিশ ক্যাম্প পাড়ার বাসিন্দা ও সাবেক মেম্বার আবুল হোসেন। তিনি বলেন, ৩ বছর ৪ মাসের অধিক সময় পেরিয়ে গেলেও আমরা ক্ষতিপূরণের টাকা পাচ্ছিনা। অসংখ্যবার তদবির করেও সমাধান মিলছেনা। একই ভোগান্তির কথা জানালেন আরেক ভূমি মালিক ধূঅং মার্মা।
লামা উপজেলা প্রকৌশলী মাহফুজুল হক বলেন, রাস্তার প্রকল্পের শেষ হয়েছে অনেক আগে। ক্ষতিগ্রস্থ লোকজন এখনো ক্ষতিপূরণের টাকা পায়নি। তাদের জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে যোগাযোগের ব্যাপারে পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
এই বিষয়ে মুঠোফোনে কথা হয় বান্দরবান জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিরবীজি’র সাথে। তিনি বলেন, দ্রুত টাকা পেতে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। অতিরিক্তি জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) কে ভূমি মন্ত্রণালয়ের সাথে যোগাযোগের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, একই প্রকল্পের আওতায় লামা উপজেলার গজালিয়া-বানিয়ারচরা সড়কের ভূমি অধিগ্রহণ ক্ষতিপূরণের এল.এ মামলা নং- ০২/২০১৮ এর ৩ কোটি ৪ লক্ষ ৮৯ হাজার ৫৮৪ টাকা (২০০% হারে) বান্দরবান জেলা প্রশাসকের কাছে একই সময়ে ন্যস্ত করা হলে সেই টাকা এখনো ক্ষতিগ্রস্থ ভূমি মালিকরা পায়নি।
সম্পাদকঃ এম. শাহীন আলম।। প্রকাশকঃ উম্মে হাবিবা
যোগাযোগ: ০১৬৪৭-৬২৭৫২৬/ ০১৮২৩-৯১৯০৯৫ whatsapp
parbattakantho@gmail.com
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধনের জন্য আবেদিত
পার্বত্য কন্ঠ © ২০১৮-২০২৪ সংরক্ষিত