মোঃ সহিদুল ইসলাম সুমন
শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের ইতিহাসের এক ক্রান্তিলগ্নে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বভার গ্রহণ করেন, যখন সদ্য স্বাধীন দেশটি চরম অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা, রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং সামাজিক নৈরাজ্যের শিকার। ১৯৭৫ পরবর্তী সেই সময়ে জাতি এক দিশেহারা অবস্থার সম্মুখীন হয়েছিল; কিন্তু জিয়াউর রহমান তাঁর সহজাত স্থিতিস্থাপকতা, অদম্য দেশপ্রেম এবং রূপান্তরমূলক দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে জাতিকে কেবল স্থিতিশীলতাই দেননি, বরং স্বনির্ভরতার এক নতুন মন্ত্রে দীক্ষিত করেছিলেন । তাঁর নেতৃত্ব ছিল একজন বিচক্ষণ রাষ্ট্রনায়কের প্রতিচ্ছবি, যিনি দূরদর্শী পরিকল্পনার মাধ্যমে দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ছিলেন। তিনি বিশ্বাস করতেন, একটি জাতির সত্যিকারের উন্নয়ন কেবল অবকাঠামোগত নির্মাণে নয় বরং মানবসম্পদ উন্নয়ন এবং তৃণমূল পর্যায়ে গণজাগরণের মাধ্যমেই সম্ভব। এই বিশ্বাস থেকেই তিনি একটি উদ্যোগী গণশিক্ষা অভিযান চালু করেন এবং গ্রামীণ অর্থনীতির পুনরুজ্জীবন ঘটাতে মনোযোগ দেন। তাঁর আমলে (১৯৭৬-৭৮) গড় বার্ষিক জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৬.৪ শতাংশ অর্জিত হয়েছিল , যা প্রমাণ করে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রেখেই তিনি তাঁর সামাজিক সংস্কারের কাজগুলো এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন। তিনি শুধুমাত্র ভোটের রাজনীতির জন্য স্লোগান দেননি বরং ১৫০০-এরও বেশি খাল খনন ও পুনঃখনন কর্মসূচির মাধ্যমে গ্রামীণ জনগণকে সরাসরি উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় যুক্ত করেছিলেন । এই বৃহৎ কর্মযজ্ঞের ফলে গ্রামীণ সমাজ সংগঠিত হয়, যা পরবর্তীতে গণশিক্ষা অভিযান এবং গ্রাম সরকার (Gram Sarkar) ও গ্রাম প্রতিরক্ষা দল (VDP) প্রবর্তনের মাধ্যমে সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টির সাথে এক গভীর সমন্বয় সাধন করে। খাল খনন কর্মসূচিতে শ্রমদানকারী জনগণ বুঝতে পারে যে স্বনির্ভরতার জন্য শুধু কঠোর শ্রমই যথেষ্ট নয়, নিরক্ষরতার শৃঙ্খল ভাঙাও অপরিহার্য। ফলে, তাঁর গণশিক্ষা অভিযান নিছক একটি একাডেমিক প্রোগ্রাম না থেকে জাতীয় সেবার অংশ হিসেবে জনগণের মনে গভীর প্রভাব ফেলেছিল ।
জিয়াউর রহমানের গণশিক্ষা আন্দোলন ছিল নিরক্ষরতার বিরুদ্ধে এক দীর্ঘমেয়াদী যুদ্ধ। এই গণশিক্ষা অভিযান বাস্তবায়নে স্থানীয় পর্যায়ে গ্রাম সরকার এবং ভিডিপি-কে কাজে লাগানো হয়, যা শিক্ষার প্রসারে এক অভিনব সাংগঠনিক ভূমিকা পালন করে । তাঁর শাসনামলে প্রাপ্তবয়স্ক স্বাক্ষরতার হার ১৯৭৫ সালের ২৫.৮ শতাংশ থেকে বেড়ে ১৯৮০ সালে ২৯.৫ শতাংশে উন্নীত হয় । স্বাক্ষরতার এই বৃদ্ধি শুধু নিছক সংখ্যার পরিবর্তন ছিল না, এটি ছিল একটি সুসংগঠিত প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর ফসল। শিক্ষাব্যবস্থাকে দীর্ঘমেয়াদী টেকসই ভিত্তির ওপর দাঁড় করানোর লক্ষ্যে ১৯৭৮-৮০ সালের দুই বছর মেয়াদী পরিকল্পনার (TYP) অধীনে তিনি প্রাথমিক শিক্ষায় যুগান্তকারী নীতি সংস্কার শুরু করেন । এর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিকটি ছিল ন্যাশনাল একাডেমি ফর প্রাইমারি এডুকেশন (NAPE) প্রতিষ্ঠা এবং ৫২টি প্রাইমারি ট্রেনিং ইনস্টিটিউট (PTI) উন্নয়ন ও পুনর্গঠন । NAPE প্রতিষ্ঠা নিশ্চিত করে যে শিক্ষার গুণগত মান কেবল গণ-অভিযানের উপর নির্ভরশীল না হয়ে একটি টেকসই প্রশিক্ষণ ব্যবস্থার মাধ্যমে সুরক্ষিত থাকবে। যদিও স্বাক্ষরতার হারে তাৎক্ষণিক প্রবৃদ্ধি সামান্য মনে হতে পারে, কিন্তু এই প্রাতিষ্ঠানিক ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনই পরবর্তী দশকগুলিতে (যেমন ১৯৯০ সালে স্বাক্ষরতার হার ৩৫.৩ শতাংশে উন্নীত হওয়া) শিক্ষার প্রসারে দ্রুত গতি এনে দেয় । বর্তমান বাংলাদেশে শিক্ষা খাতে যে ব্যাপক প্রসার এবং গুণগত উৎকর্ষতা অর্জনের প্রচেষ্টা দেখা যায়, তার মূল চালিকাশক্তি হিসেবে এই প্রাথমিক ভিত্তিমূলক প্রতিষ্ঠানগুলো (NAPE, PTI) এখনো কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করছে।
শিক্ষা ও আর্থসামাজিক সংস্কারের ক্ষেত্রে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের নেতৃত্ব একটি বিষয়ে বিশেষভাবে দূরদর্শী ছিল, আর তা হলো নারীর ক্ষমতায়ন। তিনি দৃঢ়ভাবে অনুভব করেছিলেন যে, দেশের বৃহত্তর অগ্রগতির জন্য নারী সমাজকে অর্থনৈতিক ও প্রাতিষ্ঠানিক প্রক্রিয়ায় মূলধারায় নিয়ে আসা আবশ্যক। এর সবচেয়ে সুস্পষ্ট প্রমাণ মেলে যখন তিনি উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে এক বৈপ্লবিক পদক্ষেপ নেন। মেডিক্যাল কলেজসমূহে নারী শিক্ষার্থীদের জন্য ২০ শতাংশ আসন সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়। এই সিদ্ধান্ত সেসময় নারীদের জন্য সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ পেশায় প্রবেশের পথ প্রশস্ত করে এবং সমাজকে এই বার্তা দেয় যে নারীরা কেবল প্রাথমিক শিক্ষাতেই নয় বরং রাষ্ট্রের উচ্চতর পেশাদার ক্ষেত্রেও সম-অংশগ্রহণ করবে। তাঁর এই দূরদর্শী নীতি কেবল সামাজিক পরিবর্তন আনেনি বরং পেশাদার সমাজে নারী চিকিৎসকদের সংখ্যা বৃদ্ধি নিশ্চিত করেছে, যা পরবর্তীতে গ্রামীণ স্বাস্থ্যসেবা এবং পরিবার পরিকল্পনার ক্ষেত্রে নারীর নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠিত করতে সহায়ক হয়েছে। একইসাথে ১৯৭৬ সালে জাতিসংঘের নারী দশকের সাথে সামঞ্জস্য রেখে রাষ্ট্রপতির সচিবালয়ে নারী বিষয়ক বিভাগ প্রতিষ্ঠা করা হয় । এই পদক্ষেপের মাধ্যমে নারীর অধিকার এবং উন্নয়নের এজেন্ডাকে নিছক সমাজকল্যাণের গণ্ডি থেকে বের করে এনে রাষ্ট্রীয় মূলধারার জাতীয় নীতিগত বিষয়ে পরিণত করা হয় । এই বিভাগ প্রতিষ্ঠার ফলে আন্তর্জাতিক মহলের কাছে বাংলাদেশের উন্নয়ন প্রকল্পের গ্রহণযোগ্যতা বাড়ে এবং পরবর্তীতে জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতিমালা প্রণয়নের জন্য একটি স্থায়ী প্রাতিষ্ঠানিক ভিত্তি স্থাপিত হয় ।
প্রাতিষ্ঠানিক ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে জিয়াউর রহমান এমন কিছু পদক্ষেপ নিয়েছিলেন যা বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম। তিনি প্রথম নারী পুলিশ সদস্য, আনসার এবং গ্রাম সরকার প্রতিরক্ষা বাহিনীতে (ভিডিপি) নারীদের নিয়োগের উদ্যোগ চালু করেছিলেন । এটি ছিল নারীর ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সাংগঠনিক পদক্ষেপ যা লিঙ্গভিত্তিক পেশাগত বিভেদকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ জানায়। এর আগে নারীরা সাধারণত শিক্ষকতা বা চিকিৎসা পেশার মতো চিরায়ত কর্মক্ষেত্রেই সীমাবদ্ধ ছিলেন। রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীতে নারীর সফল প্রবেশ সমাজের চিরায়ত ধারণা ভঙ্গ করে এবং নারীকে কেবল পরিবারের সদস্য হিসেবে নয়, রাষ্ট্রের রক্ষক ও প্রশাসনিক শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে। গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীতে নারীর অন্তর্ভুক্তি তাদের কেবল নিরাপত্তার জন্যই প্রস্তুত করেনি বরং গ্রাম সরকার কাঠামোর মাধ্যমে সক্রিয় নাগরিক হিসেবে ভূমিকা পালনের সুযোগ করে দেয় । এই ঐতিহাসিক উদ্যোগের ফলেই বর্তমান বাংলাদেশে পুলিশ, সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী এবং বিচার বিভাগসহ উচ্চ বেসামরিক প্রশাসনে নারীরা ব্যাপক এবং গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন হতে পেরেছেন। বর্তমানে বাংলাদেশের নারীরা জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করছেন, তার মূল চালিকাশক্তি ছিলেন জিয়াউর রহমান, যিনি ১৯৭৮-৮০ সালের দিকে এই প্রক্রিয়ার সূচনা করেন। সামরিক ও বেসামরিক নিরাপত্তা বাহিনীতে নারীর উপস্থিতি নিশ্চিত করেন ।
নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভূমিকা ছিল বিশেষভাবে কৌশলগত এবং সুদূরপ্রসারী। তাঁর অর্থনৈতিক উদারীকরণ নীতির ফলেই বাংলাদেশে রপ্তানিমুখী পোশাক শিল্পের প্রাথমিক ভিত্তি স্থাপিত হয়। ১৯৭৮ সালে প্রথম চারটি রপ্তানিমুখী পোশাক কারখানার ১৩০ জন কর্মীকে ব্যবস্থাপনার প্রশিক্ষণের জন্য কোরিয়ায় পাঠানো হয়েছিল। এই খাত দ্রুতই গ্রামীণ, স্বল্পশিক্ষিত নারীদের জন্য কর্মসংস্থানের প্রধান উৎসে পরিণত হয়। পোশাক শিল্প খুব কম সময়েই লাখ লাখ নারীর অর্থনৈতিক স্বাধীনতার দুয়ার খুলে দেয় । যদিও বর্তমানে এই খাতে নারী কর্মীর হার কিছুটা কমেছে (৬৬ শতাংশের নিচে), প্রাথমিক পর্যায়ে এটি ছিল মূলত নারী-নিয়ন্ত্রিত খাত (যা ৮০ শতাংশ পর্যন্ত ছিল) । জিয়াউর রহমানের এই অর্থনৈতিক দূরদর্শিতার সামাজিক প্রভাব ছিল বিশাল; এই শিল্পায়নের নীতি গ্রামীণ নারীদের জন্য নগরে জীবিকা অর্জনের সুযোগ তৈরি করে, তাদের আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করে এবং সমাজে তাদের দৃশ্যমানতা বাড়িয়ে তোলে । এই অর্থনৈতিক স্বাধীনতা নারীদের পারিবারিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতাকেও প্রভাবিত করে, যা গ্রামীণ সমাজে পুরুষতান্ত্রিক বিধিনিষেধকে চ্যালেঞ্জ জানায়। এই অর্থনৈতিক পরিবর্তন গ্রামীণ দারিদ্র্য হ্রাসে এবং নারীর ক্ষমতায়নে এক বৈপ্লবিক ভূমিকা রেখেছে, যার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপিত হয়েছিল জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বাধীন সরকারের শিল্পনীতিতে। আজকের বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রধান চালিকাশক্তি এই আরএমজি শিল্প, যেখানে নারীর বিপুল অংশগ্রহণ দেশের জিডিপি বৃদ্ধিতে কেন্দ্রীয় ভূমিকা রাখছে, তা সেই সময়কার দূরদর্শী নীতিরই অবিচ্ছিন্ন ফল।
শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের শাসনামলে গৃহীত প্রতিটি নীতিই ছিল একটি সামগ্রিক ও সমন্বিত কৌশলের অংশ। শিক্ষা, প্রতিষ্ঠান, এবং অর্থনীতির ক্ষেত্রে তাঁর নেওয়া পদক্ষেপগুলো আজকের আধুনিক বাংলাদেশের টেকসই মানব উন্নয়নের ভিত্তি রচনা করেছে। ১৯৭৬ সালের নারী বিষয়ক বিভাগ প্রতিষ্ঠা এবং ২০ শতাংশ মেডিক্যাল আসন সংরক্ষণ এই দুটি পদক্ষেপ উচ্চশিক্ষা এবং পেশাদার জীবনে নারীর অংশগ্রহণকে একটি নিয়মতান্ত্রিক রূপ দেয়। এর ফলস্বরূপ, বর্তমানে বাংলাদেশ জেন্ডার সমতার বিভিন্ন সূচকে প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায় অনেক এগিয়ে আছে। অনুরূপভাবে, NAPE ও PTI-এর মতো প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে শিক্ষার গুণগত মান বৃদ্ধির যে প্রক্রিয়া তিনি শুরু করেছিলেন, তা আজকের বাংলাদেশকে জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতির দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করছে। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান, বিশেষ করে সামরিক ও বেসামরিক নিরাপত্তা বাহিনীতে নারীর অংশগ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি করায় বর্তমানে বাংলাদেশে নারীরা নেতৃত্বের আসনে আসীন হতে সক্ষম হয়েছেন। এই প্রাতিষ্ঠানিক সমর্থন ছাড়া শুধু সামাজিক আন্দোলন দিয়ে এত দ্রুত এই পরিবর্তন আনা সম্ভব ছিল না। স্বাক্ষরতার হার বৃদ্ধি এবং প্রাথমিক শিক্ষার প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো সুদৃঢ় করার মাধ্যমে তিনি যে শিক্ষিত জনগোষ্ঠী তৈরি করেছিলেন, তারাই পরবর্তীতে আরএমজি শিল্পের মতো অর্থনৈতিক সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে সক্ষম হয়েছে, যা নারী ক্ষমতায়নের প্রক্রিয়াকে আরও মজবুত করেছে। জিয়াউর রহমানের কৌশল ছিল বহুমাত্রিক তিনি একযোগে তৃণমূলের উন্নয়নকে (খাল খনন, ভিডিপি) গণশিক্ষার (NAPE/PTI) সাথে সংযুক্ত করেন এবং নারীর জন্য প্রতিষ্ঠান (নারী বিষয়ক বিভাগ, পুলিশে নিয়োগ) ও সুযোগ (আরএমজি শিল্প) সৃষ্টি করেন।
শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান কেবল একজন সফল সামরিক নেতা বা রাজনীতিক ছিলেন না; তিনি ছিলেন একজন অদম্য রাষ্ট্রনায়ক, যিনি জাতি গঠনের জটিল সময়ে দেশকে কেবল স্থিতিশীলতাই দেননি বরং এমন সব বীজ বপন করেছিলেন, যা আজকের বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক সাফল্যের বৃক্ষ হয়ে উঠেছে । তাঁর নেতৃত্ব জাতিকে স্বনির্ভরতার মন্ত্রে দীক্ষিত করেছিল এবং নারীর ক্ষমতায়নকে কেবল স্লোগান না রেখে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছিলেন। অর্থনৈতিক উন্নতির জন্য আরএমজি-এর মতো বৈশ্বিক খাত উন্মোচন করা তাঁর সুদূরপ্রসারী কৌশলগত দৃষ্টিভঙ্গিরই প্রমাণ। বর্তমান বাংলাদেশ, বিশেষ করে নারী শিক্ষা, নারীর কর্মসংস্থান এবং প্রশাসনিক পদে নারীর অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে যে উচ্চতা অর্জন করেছে, তা ১৯৭৫-৮১ সালের সেই ভিত্তিগত পদক্ষেপগুলোরই অনিবার্য ফল। জিয়াউর রহমানের এই অবিচ্ছিন্ন উত্তরাধিকার বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য স্বনির্ভরতা, সাহস এবং প্রগতির প্রতীক হয়ে থাকবে। তাঁর দূরদর্শিতা আজও বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রার প্রতিটি ধাপে উজ্জ্বলভাবে প্রতিফলিত।
লেখক : অর্থনীতি বিশ্লেষক,কলামিস্ট ও সদস্য, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ