নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
পার্বত্য চট্টগ্রামকে বিচ্ছিন্নতাবাদী ও ভারতের ষড়যন্ত্র থেকে রক্ষার আহবান জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে সিএইচটি সম্প্রীতি জোট। আজ রবিবার সকাল ১১ ঘটিকায় চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে এস রহমান হলে এটি অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ইঞ্জিনিয়ার থোয়াই চিং মং শাক বলেন,খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি ও বান্দরবান জেলা বাংলাদেশের অবিচ্ছেদ্য অংশ। অথচ দীর্ঘদিন ধরে পার্বত্য চট্টগ্রামকে অশান্ত রাখার জন্য দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র চলছে। কখনো বাঙালি ও অ-বাঙালির মধ্যে দাঙ্গা, কখনো বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনগুলোর আধিপত্য বিস্তারের লড়াই, কখনো আবার আমাদের দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী ও সাধারণ জনগণের ওপর বর্বরোচিত হামলা ঘটছে।
সবচেয়ে দুঃখজনক হলো—ভারতীয় সহযোগিতায় চাকমা জাতি পরিচালিত ইউপিডিএফ ও জেএসএস নামক সংগঠনসমূহ পার্বত্য চট্টগ্রামকে বাংলাদেশের মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন করার ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে। তারা সাধারণ মানুষকে ভয়ভীতি, লোভ ও প্রলোভন দেখিয়ে ভারত থেকে অস্ত্র প্রশিক্ষণ গ্রহণে উৎসাহিত করছে বলে বক্তারা দাবি করেন।
ইঞ্জিনিয়ার থোয়াই চিং মং শাক বলেন, প্রতিবছর এসব সংগঠন কোটি কোটি টাকা চাঁদাবাজি করে ব্যবসায়ী, ঠিকাদার, এমনকি সাধারণ কৃষক পর্যন্ত জিম্মি করছে। সেই অর্থ দিয়ে ভারত থেকে অস্ত্র আনা হয়। আবার অনেক নেতা পালিয়ে ভারতে গিয়ে স্থায়ীভাবে বসবাস করছে এবং সেখান থেকেই “জুম্মল্যান্ড” প্রতিষ্ঠার নীলনকশা আঁকছে।
প্রতিনিয়ত পাহাড়ে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা, নির্যাতন, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে এসব সংগঠন। ইউটিউব, ফেসবুক ও অন্যান্য মাধ্যমে মিথ্যা প্রচারণা চালিয়ে সেনাবাহিনী ও বাঙালিদের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তুলতে চেষ্টা করছে। মূল লক্ষ্য হলো—বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করা এবং সার্বভৌমত্বকে প্রশ্নবিদ্ধ করা।
সিএইচটি সম্প্রীতি জোট এর মুখ্য সমন্বয়ক পাইশিখই মারমা দৃঢ়ভাবে ঘোষণা করেন
বাংলাদেশ আমাদের সবার। পাহাড়-সমতলের প্রতিটি নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আমাদের দায়িত্ব।
সিএইচটি সম্প্রীতি জোট এর প্রধান সমন্বয়ক থোয়াই চিং মং শাক কিছু প্রস্তাবনা ও করণীয় তুলে ধরেন,
১. জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলা – বাঙালি ও অ-বাঙালি জনগোষ্ঠীর মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি রুখে দিয়ে সম্প্রীতির বন্ধন দৃঢ় করতে হবে।
২. ষড়যন্ত্র প্রতিহত করা – বিদেশি অর্থায়ন ও প্রভাবিত সংগঠনগুলোর কার্যক্রম দৃঢ়ভাবে দমন করতে হবে।
৩. রাষ্ট্রীয় নজরদারি বৃদ্ধি – সীমান্ত এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি শক্তিশালী করতে হবে।
৪ . শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও উন্নয়ন – স্থায়ী শান্তির জন্য শিক্ষা, কর্মসংস্থান ও স্বাস্থ্যসেবার সুযোগ বাড়াতে হবে।
৫. সেনা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি – পার্বত্য এলাকায় স্থায়ী সেনা ক্যাম্প বৃদ্ধি ও পুলিশ বাহিনীর দক্ষতা বাড়াতে হবে।
৬. সংস্কার কমিশনের ভূমিকা – আদিবাসী, উপজাতি, জুম্ম, সেটলার বাঙালি ইত্যাদি বিভাজনমূলক শব্দ বাতিল করে জাতীয় পরিচয়ে ঐক্যবদ্ধ করা জরুরি।
তিনি আরো বলেন, ভারতপন্থী ইউপিডিএফ ও জেএসএস কর্তৃক পরিচালিত সব ধরনের সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, হত্যা, গুম ও বিদেশি ষড়যন্ত্র অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। পাহাড়ে শান্তি ও উন্নয়ন প্রতিষ্ঠায় সরকার ও দেশপ্রেমিক জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন পাইশিখই মারমা, রাকিব হোসাইন নওশাদ, মোঃ আজাদ, আব্দুল্লাহ আল চাউদ , অ্যাড. পারভেজ তালুকদার, প্রমুখ।