ফরিদপুরে আঁখি আক্তার (১৯) নামে এক প্রসূতিকে ভিন্ন গ্রুপের রক্ত দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ফলে ওই রোগী শরীরে অসহ্য যন্ত্রণা নিয়ে হাসপাতালে ছটফট করছেন। শনিবার (২৮ আগস্ট) ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে বলে দাবি স্বজনদের। বর্তমানে নবজাতক ও প্রসূতি হাসপাতালের গাইনি ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছেন। আঁখি আক্তার ফরিদপুরের সালথা উপজেলার খারদিয়া গ্রামের আল আমীন শেখের স্ত্রী। প্রসূতির স্বজনরা জানান, ২৭ আগস্ট সন্তান প্রসবের পর আঁখি আক্তারের রক্ত শূন্যতা দেখা দেয়। ওইদিনই তাকে ভর্তি করা হয় ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। এ সময় দুই ব্যাগ রক্ত দেওয়ার পরামর্শ দেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। পরামর্শ অনুযায়ী দুই রক্তদাতাকে তারা হাসপাতালে নিয়ে আসেন।
আঁখির রক্তের গ্রুপ ও ক্রস ম্যাচিং করার আগে প্যাথলজি বিভাগের ইনচার্জ মো. নুরুল আমীন পরীক্ষা করে জানান, আঁখির রক্তের গ্রুপ এ পজিটিভ। কিন্তু তার রক্তের গ্রুপ বি পজিটিভ বলে স্বজনরা জানান। বিষয়টি যাচাই করতে গিয়ে ২৭ আগস্ট হাসপাতাল থেকে দেওয়া রক্তের চাহিদাপত্রে দেখা যায়, সেখানে আঁখির রক্তের গ্রুপ বি পজিটিভ লেখা। পরে সেটা কেটে লেখা হয় এ পজিটিভ। এরপর ৩০ আগস্ট দেওয়া রক্তের আরেকটি চাহিদাপত্রে বি পজিটিভ লেখা দেখা যায়। এছাড়া ১০ মার্চ আঁখি আক্তার বোয়ালমারী সূর্যের হাসি ক্লিনিকে রক্ত পরীক্ষা করান। সেখানেও তার রক্তের গ্রুপ বি পজিটিভ বলা হয়। অথচ আঁখিকে এ পজিটিভ রক্ত দেওয়া হয় বলে অভিযোগ স্বজনদের। গৃহবধূর স্বামী আল আমীন শেখ বলেন, আমার স্ত্রীকে বি পজিটিভ রক্ত না দিয়ে এ পজিটিভ রক্ত দেওয়া হয়। একে তো অপারেশনের রোগী আবার ভুল রক্ত শরীরে দেওয়া হয়েছে। ফলে এখন সে পাগলের মতো হয়ে গেছে। বিছানায় ছটফট করছে। আমরা রক্ত দেওয়ার আগে বারবার বলেছি তার রক্তের গ্রুপ বি পজিটিভ। কিন্তু নুরুল আমীন সাহেব আমাদের কথা কর্ণপাত করেননি। তিনি পরীক্ষা করে এ পজিটিভ রক্তের কথা বলেছেন এবং আমাদের কাগজপত্রও দিয়েছেন। এখন আমার স্ত্রী ও নবজাতক ছেলের অবস্থা খুবই খারাপ। আমি নুরুল আমীনের বিচার দাবি করছি। গৃহবধূ আঁখি আক্তারের বাবা সামরান মিয়া (৪৭) বলেন, আমরা এর আগে আমার মেয়েকে একাধিকবার রক্ত পরীক্ষা করিয়েছি। সে অনুযায়ী তার রক্তের গ্রুপ বি পজিটিভ। রক্ত দেওয়ার আগে আমি নুরুল আমীনকে জানাই আঁখির রক্তের গ্রুপ বি পজিটিভ। কিন্তু উনি আমার কথা শোনেননি। আমার সম্পর্কে আত্মীয় এবং আমার একই গ্রামের সিরাজ মাতুব্বরের ছেলে জাহিদ মাতুব্বরকে রক্ত দেওয়ার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যাই। তার রক্তের গ্রুপ এ পজিটিভ। ফলে জাহিদের শরীর থেকে এক ব্যাগ ও ফরিদপুর সন্ধানী ব্লাড ব্যাংক থেকে আরও এক ব্যাগ রক্ত এনে দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক সাইফুর রহমান বলেন, এখনও রোগীর স্বজনরা কোনো লিখিত অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সম্পাদকঃ এম. শাহীন আলম।। প্রকাশকঃ উম্মে হাবিবা
যোগাযোগ: ০১৬৪৭-৬২৭৫২৬/ ০১৮২৩-৯১৯০৯৫ whatsapp
parbattakantho@gmail.com
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধনের জন্য আবেদিত
পার্বত্য কন্ঠ © ২০১৮-২০২৪ সংরক্ষিত