আব্দুল মান্নান, স্টাফ রিপোর্টার খাগড়াছড়িঃ
১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে ১নম্বর সেক্টর চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, ফেনী, খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি ও বান্দরবান নিয়ে গঠিত ১নম্বর সেক্টরের কমান্ডার ছিলেন, মেজর জিয়াউর রহমান। পরবর্তীতে ১৯৭৮ সালে মেজর জিয়াউর রহমান প্রতিষ্ঠাতা করেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল( বিএনপি)। ১নম্বর সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার থাকার সুবাদে এ অঞ্চলে মেজর জিয়াউর রহমানের ব্যাপক পরিচিত ঘটে। পরবর্তী সময়ে এ অঞ্চলে বিএনপির রাজনীতিতে সাধারণ মানুষের পদভারে মুখরিত। ২০০১ সালে দল ক্ষমতায় থাকাকালীন জনভারে দল ভারী হলেও গত দেড় যুগে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের দমন-পীড়নে বিএনপি পরিবার অনেকটা এলোমেলো! ৫ আগস্ট ফ্যাসিবাদ সরকারের পতনের পর বিএনপি আবার সেকালে ফিরে যেতে নানামুখী তৎপরতা শুরু করেছেন। দুঃসময়ে দলে ত্যাগ, নেতাকর্মীদের আগলে রাখা এবং সজ্জন ব্যক্তিদের নিয়ে দল ঘোচাতে ইতোমধ্যে উদ্যোগ নিয়েছেন জেলা বিএনপি। ফলে আসন্ন কাউন্সিলকে ঘিরে সরগরম এখন উপজেলা বিএনপি পরিবার। কাউন্সিককে সামনে রেখে সামাজিক মাধ্যমে সাধারণ নেতাকর্মীরা যেমন সোচ্চার। তেমনি উদীয়মান ও সাবেক ছাত্র নেতারাও মাঠে নেমেছে জোরেশোরে!
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলা বিএনপির ১০১ সদস্য বিশিষ্ট দ্বিবার্ষিক কাউন্সিলে সর্বশেষ কমিটি হয়েছিল ২০২২ সালে। সাবেক ছাত্রদল ও যুবদল নেতা মো. এনামুল হক এনাম ২০০১-২০২২ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ সময় উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন! ২০২২ সালের কমিটিতে তিনি সভাপতি মনোনীত হন।
গেল রমজান মাসে উপজেলা বিএনপির ইফতার ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খাগড়াছড়ি জেলা বিএনপির সভাপতি এবং সাবেক সংসদ ওয়াদুদ ভূঁইয়া।
এ সময় তিনি ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের দুঃশাসনে ক্ষতবিক্ষত বিএনপির পরিবারের ত্যাগী নেতাকর্মী ও সর্মথকদের উদ্দেশ্যে বলেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামীলীগের দেড় যুগের দুঃশাসন, নির্যাতন,নিপীড়ন, জেল-জুলুম, মামলা-হামলা, গণহত্যাও বিএনপি নিশ্চিহ্ন হয়নি! হবেও না। বিএনপির সুদিনে দলের সুবিধাবাদীরা ৫ আগস্ট পরবর্তী একক সুবিধা নিতে আত্মীয়-স্বজনে দখল,লুটপাটে সক্রিয় হয়েছে! এতে দলের ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে! এটা হতে দেওয়া হবে না। আসন্ন কাউন্সিলের প্রস্তুতিতে তিনি নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত করতে আবারও এক সর্তক বার্তায় বলেন, ” মানিকছড়ি বিএনপির প্রিয় সংগ্রামী কাউন্সিলর বৃন্দ, আগামী জেলা ও জাতীয় কাউন্সিলকে সামনে রেখে, আগামী কিছুদিনের মধ্যে মানিকছড়ি উপজেলা বিএনপির কাউন্সিল ( ভোট প্রদানের মাধ্যমে কমিটি গঠন ) অনুষ্ঠিত হবে। আমি আপনাদেরকে কাছে বিনীতভাবে আশা করি, সেই কাউন্সিলে যাঁরা প্রার্থী হবেন, তাঁদের মধ্য যাঁরা চাঁদাবাজ, নির্যাতনকারী, ভূমি দখল, সালিশ বাণিজ্য বা এ জাতীয় নানাহ অপকর্মে জড়িত। তাদেরকে দলের সুনাম রক্ষার্থে এবং জনগণের প্রত্যাশার জায়গা বিবেচনায় রেখে প্রত্যাখ্যান করবেন। তাহলেই কেবল দল শক্তিশালী হবে এবং এখন থেকে অন্যায় – অনিয়মকারিদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলুন। এ বিষয়ে পাড়া মহল্লায় প্রতিরোধ কমিটি গঠন করে অন্যায়কারিদের প্রতিরোধ করুন সমাজ ও দলের স্বার্থে”।
এর পর পরই সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে সম্ভাব্য প্রার্থীদের নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে সরগরম হয়ে বির্তকিতদের তুলোধুনো করেন সাধারণ নেতাকর্মীরা!
এর পাশাপাশি সাবেক ছাত্র নেতা ও জেলা বিএনপির সভাপতি ওয়াদুদ ভূঁইয়ার এপিএস এবং জেলা বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মো. হাবিবুর রহমান দলে সৎ, যোগ্য ও সজ্জন ব্যক্তিদের আগামী কাউন্সিলে দলের কর্ণদ্বার করার বার্তা নিয়ে তৃণমূল চষে বেড়াচ্ছেন! দীর্ঘ সময় দলে নিষ্ক্রিয়, সুবিধাবঞ্চিত নেতাকর্মীরাও সাথে থেকে তৃণমূল ঝালিয়ে তুলছেন এবং তাকেই দলের শীর্ষ পদে প্রার্থী হয়ে আগামী দিনে বিএনপির কর্ণদ্বার হতে জোরালো দাবী তুলছেন। এর পাশাপাশি সভাপতি পদে বর্তমান সভাপতি মো. এনামুল হক এনাম, সাধারণ সম্পাদক পদে বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ও দলের আইডল খ্যাত মো. মীর হোসেন, বর্তমান কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মো. নূরেজ্জামান এর নামও উঠে আসছে নেতাকর্মীদের প্রস্তাবনায়। তবে এখন পর্যন্ত কেউই নিজ থেকে প্রার্থীতা সম্পর্কে কোন মন্তব্য করেনি।