পার্বত্য চট্টগ্রাম মন্ত্রণালয়ের নজিরবিহীন বৈষম্যের প্রতিবাদ জানিয়ে পার্বত্য উপদেষ্টা সু-প্রদীপ চাকমার জুতার মালা পরিহিত কুশপুত্তলিকা দাহ করে ও টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেছে সচেতন ছাত্র-জনতা, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা।
রাঙামাটি পৌরসভা চত্বরের সামনে ২৯ শে মার্চ শনিবার সকাল ১১.০০ টার দিকে রাঙামাটির বৈষম্যের শিকার বাঙালি সহ পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর সমন্বয়ে এক বিক্ষোভ মিছিল পৌরসভা চত্বর থেকে শুরু হয়ে বনরূপা সিএনজি চত্বরে এসে সমাবেশে মিলিত হয়। সমাবেশে পার্বত্য উপদেষ্টা সু-প্রদীপ চাকমার কুশপুত্তলিকা দাহ করেছে ও জুতা নিক্ষেপ করেছে সচেতন ছাত্র-জনতা রাঙামাটি পার্বত্য জেলার ব্যানারে বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর স্থানীয় বাসিন্দারা।
বিক্ষোভ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন পিসিসিপি কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি ও রাঙামাটি জেলা সভাপতি মো: আলমগীর হোসেন, এতে আরো বক্তব্য রাখেন,
সচেতন নাগরিক সমাজের আহ্বায়ক কামাল উদ্দিন, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি শ্যামল বড়ুয়া, এছাড়াও এনসিপির নেতৃবৃন্দ, বড়ুয়া নেতৃবৃন্দ, মারমা নেতৃবৃন্দ সহ বিভিন্ন সংগঠন ও জাতিগোষ্ঠীর নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
ছাত্র প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাঙামাটি সরকারি কলেজ এর শিক্ষার্থী মো: শওকত হোসেন, মো: খলিলুর রহমান, মহিউদ্দিন নুহাশ, ইসমাঈল গাজী, মো: আরিফুল ইসলাম, রাঙামাটি পৌর পারভেজ মোশাররফ হোসেন, মো: জাহিদুল ইসলাম রনি, রিয়াজুল ইসলাম বাবু প্রমুখ।
বিক্ষোভে পাহাড়ের বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর নেতৃবৃন্দরা বক্তব্যে বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণের প্রতি এক নজিরবিহীন বৈষম্য চালিয়ে সম্প্রতি যে চাকমা মার্কা বাজেট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে তা বাতিল করে পাহাড়ি-বাঙালি সকল জাতিগোষ্ঠীকে জনসংখ্যা অনুপাতে সমান ভাবে বরাদ্দের আওতায় আনতে হবে। পার্বত্য চট্টগ্রাম মন্ত্রণালয় কর্তৃক পাহাড়ের জনগণের সাথে বৈষম্য চালিয়ে সম্প্রতি যে বাজেট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে তা সংবিধানের সাম্যের নীতির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রকাশিত সাম্প্রতিক বাজেট বরাদ্দ তালিকা পর্যালোচনা করলে স্পষ্ট হয়, এই বরাদ্দ প্রক্রিয়া উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, পক্ষপাতদুষ্ট এবং এক বিশেষ জনগোষ্ঠীর স্বার্থ রক্ষায় কেন্দ্রীভূত। রাষ্ট্রের সম্পদ কোনো নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের জন্য নয়, এটি সকল নাগরিকের সমান অধিকার। অথচ পার্বত্য মন্ত্রণালয়ের সাম্প্রদায়িক উপদেষ্টা সু-প্রদীপ চাকমা পাহাড়ি অঞ্চলের জনসংখ্যার প্রকৃত চিত্র ও প্রয়োজন উপেক্ষা করে একপাক্ষিক বরাদ্দ প্রদান করেছে, যা চরম বৈষম্যমূলক।
বিক্ষোভে পাহাড়ের সকল জাতিগোষ্ঠীরা জোর দাবি জানিয়ে বলেন,
১. পার্বত্য মন্ত্রণালয়ের বৈষম্যমূলক সাম্প্রদায়িক চাকমা বরাদ্দ অবিলম্বে বাতিল করতে হবে।
২. বান্দরবানসহ সকল জেলার জন্য ন্যায্য বরাদ্দ নিশ্চিত করতে হবে।
৩. বাঙালি, মারমা, ত্রিপুরা, তঞ্চঙ্গ্যা, সাঁওতালসহ সকল জনগোষ্ঠীর সমান অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে।
৪. একই ব্যক্তি বা গোষ্ঠীকে একাধিকবার বরাদ্দ দেওয়ার অনৈতিক প্রবণতা বন্ধ করতে হবে।
৫. জনসংখ্যার অনুপাতে ও প্রকৃত প্রয়োজনের ভিত্তিতে বরাদ্দ প্রদান করতে হবে।
বিক্ষোভে সরকারের প্রতি হুঁশিয়ারি জানিয়ে বলেন,
পার্বত্য চট্টগ্রাম কোনো নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠীর সম্পত্তি নয়, এটি সকল জাতিগোষ্ঠীর আবাসভূমি। এখানে বরাদ্দের নামে কোনো পক্ষপাতমূলক আচরণ ছাত্র সমাজ মেনে নেবে না। এই বৈষম্যমূলক বাজেট অবিলম্বে সংশোধন করা না হলে পার্বত্য চট্টগ্রামের ছাত্র-জনতা ঐক্যবদ্ধ হয়ে কঠোর আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করতে বাধ্য হবে।
বিক্ষোভে আরো বলেন, আমরা সরকারকে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিতে চাই—পার্বত্য মন্ত্রণালয়ের এই চাকমা মার্কা বরাদ্দ অবিলম্বে বাতিল করে পাহাড়ি-বাঙালি সকল জাতিগোষ্ঠীকে জনসংখ্যা অনুপাতে সমান ভাবে বরাদ্দের আওতায় আনতে হবে। অন্যথায় পার্বত্য উপদেষ্টা সু-প্রদীপ চাকমাকে পার্বত্য চট্টগ্রামে অবাঞ্চিত ঘোষণা করে তাকে পার্বত্য অঞ্চলের কোথাও ডুকতে দেওয়া হবে না। পার্বত্য চট্টগ্রামে যেখানে আসবে সেখানেই প্রতিরোধ করবে বৈষম্যের বিরুদ্ধে সদাজাগ্রত ছাত্র-জনতা।
সম্পাদকঃ এম. শাহীন আলম।। প্রকাশকঃ উম্মে হাবিবা
যোগাযোগ: ০১৬৪৭-৬২৭৫২৬/ ০১৮২৩-৯১৯০৯৫ whatsapp
parbattakantho@gmail.com
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধনের জন্য আবেদিত
পার্বত্য কন্ঠ © ২০১৮-২০২৪ সংরক্ষিত