মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, ব্যুরো প্রধান, বান্দরবানঃ
লামায় প্রতিদিন নির্বিচারে কাটা হচ্ছে বনজ গাছ। ব্যক্তি মালিকানাধীন ২৫ একরের বিশাল বাগান ও বন্য হাতির অভয়ারণ্য থেকে অপরিপক্ব গাছ কাটার মহোৎসব শুরু হয়েছে। অতিমাত্রায় গাছ কাটায় চলতি শুষ্ক মৌসুমে তীব্র তাপদাহে এ উপজেলার মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। এদিকে বিস্তৃীর্ণ এলাকা থেকে গাছ কাটায় হুমকির মুখে জীববৈচিত্র্য। উপজেলার আজিজনগর ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ড হাতির টিলা এলাকাটি বন্য হাতির বিচরণ কেন্দ্র। পরিবেশবাদী লোকজন চারা গাছ গুলো কাটা বন্ধ করতে বন বিভাগের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
বাগান মালিক বাবুল আক্তার জানিয়েছেন, আমার নামে ক্রয়কৃত ভোগদখলীয় ৩০৭নং চাম্বি মৌজার আর/২৮৭৩, আর/২৮৭৪, আর/২৯২ ও আর/২৮৭ নং হোল্ডিং সহ মোট ২৫ একর জায়গা দীর্ঘ ১০-১২ বছর পর্যন্ত ভোগদখলে আছি। উক্ত জায়গার উপর আজিজনগরের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ উল্লাহ আজম খানের সাথে যৌথ ভাবে গাছবাগান সৃজন করি। আজিজনগরস্থ ভাইয়া ম্যাচ ওয়ার্কের ব্যবস্থাপক মাহফুজুর রহমানের নির্দেশে তাদের কর্মচারী আবু তাহের ও বাগানের কেয়ারটেকার আব্দুল ছালাম সহ আরো ২০-২৫ জন লেবার মিলে আমার তিন বছর বয়সী বাগানের একাশি, ইউক্যালিপটাস (ম্যালেরিয়া) গাছ কেটে ফেলে। বিবাদীগণ লোহার রড, কিরিস, ধারালো কুড়াল এবং ভারী ভারী অস্ত্র নিয়ে গাছ কর্তনের সময় আমার লোকজন ও কেয়ারটেকার হানিফ বাধা দিলে বিবাদী তাদের হুমকি দমকি, মারধর করার চেষ্টা করে। জানের ভয়ে তারা পালিয়ে যায়। ১ম বার আমার সৃজন করার ৮ বছর পর একবার গাছের বাগান কর্তন করি এবং পুনরায় গাছের বাগান সৃজন করি। তিন বছর পর বিবাদীগণ লোভের বশভূত হয়ে আমার ক্ষতিসাধন করার উদ্দেশ্যে আমার সম্পত্তির প্রতি লোভের বশভূত হয়ে গত ১৭ ও ১৮/০১/২০২৫ইং তারিখ পর পর দুইদিন আমার যৌথ সৃজনকৃত গাছের বাগান হতে প্রায় ১ হাজারের অধিক একাশি, ম্যালেরিয়া গাছ কর্তন করে ৪০০ গাছ গাড়ি যোগে নিয়ে যায়। তারা আমার প্রায় ৫ লক্ষ টাকার ক্ষতিসাধন করে।
যৌথ ভাবে গাছবাগান সৃজনকারী মোহাম্মদ উল্লাহ আজম খান বলেন, গাছ কাটার বিষয়টি অবগত হওয়ার পর মোবাইল ফোনে লামা থানার আশ্রয় নিলে লামা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার আদেশে ঘটনাস্থলে একজন এস.আই রিয়াজ মোস্তফা ও একজন কনস্টেবল পাঠালে তারা স্বশরীরে গাছ কর্তনের সত্যতা পায়। বিবাদীগণ কর্তৃক কর্তনকৃত বাকী গাছ গুলো বিবাদী কেয়ারটেকার আব্দুল ছালামের হেফাজতে রেখে যান। বাদী বাবুল আক্তার দীর্ঘ বছর পর্যন্ত উক্ত গাছ বাগান ও গাছ বাগানের জায়গার মালিক হিসেবে ভোগ দখলে স্থিত থাকা সর্তেও কখনো বিবাদীগণ কর্তৃক বাধা বিপত্তি বা কোন ধরণের জটিলতা সৃষ্টি হয়নি। বর্তমানে বিবাদীগণ দেশের চলমান পরিস্থিতিতে জুলুম অত্যাচারের মাধ্যমে উক্ত জায়গা আত্মসাৎ করার মানসে জায়গা আত্মসাতের অপচেষ্টা ও জোরজুলুম চালাচ্ছে। তিনি আরো বলেন, যে লিজের কাগজে ভাইয়া ম্যাচ ওয়ার্ক এই জায়গা দাবী করছে, ৩/৪ বছর আগে ওই কাগজের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে।
ভাইয়া ম্যাচ ওয়ার্কের কর্মচারী আবু তাহের বলেন, এই জায়গা আমাদের। বিগত সরকারের আমলে জোর করে তারা আমাদের জায়গা দখল করে। এখন আমরা আমাদের লোকজন নিয়ে গাছ কাটছি। ভাইয়া ম্যাচ ওয়ার্কের বাগানের কেয়ারটেকার আব্দুল ছালাম বলেন, গাছ গুলো বাবুল আক্তারের পক্ষে মোহাম্মদ উল্লাহ আজম খান লাগিয়েছে, কথা সত্যি। কিন্তু এই জায়গা তাদের না।
লামা থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক রিয়াজ মোস্তফা বলেন, ওসি মহোদয়ের নির্দেশে সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে বাগানটি পরিদর্শন করি। বেশকিছু গাছ কাটা দেখতে পাই। কাটা গাছ গুলো কেয়ারটেকার আব্দুল ছালামের জিম্মায় দিয়ে আসি। নতুন করে গাছ কাটতে নিষেধ করা হয়েছে।
সম্পাদকঃ এম. শাহীন আলম।। প্রকাশকঃ উম্মে হাবিবা
যোগাযোগ: ০১৬৪৭-৬২৭৫২৬/ ০১৮২৩-৯১৯০৯৫ whatsapp
parbattakantho@gmail.com
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধনের জন্য আবেদিত
পার্বত্য কন্ঠ © ২০১৮-২০২৪ সংরক্ষিত