আব্দুল মান্নান, স্টাফ রিপোর্টার খাগড়াছড়িঃ
দেশে দীর্ঘ সময় ঊর্ধমুখী আলুর বাজারমূল্য নিয়ে এবার মানুষের হৃদয়কম্পন হয়েছে! ফলে প্রান্তিক কৃষকেরা বুকভরা আশা নিয়ে এবার আলু চাষে মনোযোগ বেশি দিয়েছে। এমন চাষিদের মধ্যে খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি উপজেলায় গত ৩ দশকে আলু চাষে সফল প্রান্তিক কৃষক আবদুল সোবহান। চলতি বছর তিনি বাজার থেকে ৬০০ কেজি আলু বীজ কিনে নিঃস্ব হয়েছেন! সাড়ে ৪ কানি(১৮০শতক) জমিতে সৃজিত আলু বীজের অর্ধেক
অঙ্কুরিত হয়নি এবং যেগুলো গজিয়েছে সেগুলোর গোড়ায় বীজ পচে গাছ মরা শুরু হয়েছে! এতে কয়েক লাখ টাকার ক্ষতিরমুখে এই আলু চাষি! নিন্মমানের বীজে বিশাল আর্থিক ক্ষতির বিষয়ে উপজেলা প্রশাসনে অভিযোগ দায়ের করেছেন আবদুল সোবহান।
সরজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার চেঙ্গুছড়া এলাকায় হালদা খালের উপশাখার চরে নিজস্ব জমিতে গত ৩ দশক ধরে আলুসহ মওসুমি সবজি চাষে সফল আবদুল সোবহান। বিশেষ করে আলু চাষে তার খ্যাতি উপজেলার সর্বত্র। বিগত সময়ের ন্যায় এবারও তিনি ১.৮০ একর জমিতে আলু চাষে স্থানীয় বাজারের ' প্রকাশ বীজ ভান্ডার' থেকে এসিআই কোম্পানির এ গ্রেডের ৫৪ হাজার টাকায় ৬০০ কেজি আলু বীজ সংগ্রহ করেন। তা সৃজন করার পর অর্ধেক অঙ্কুরিত হয়নি এবং যেগুলো গজিয়েছে সেগুলোর গোড়ায় বীজ আলুতে পচে গেছে ! আলু খেতের এমন অবস্থায় সোবহানের স্বপ্ন চুরমার হতে যাচ্ছে! এ বিষয়ে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক আবদুল সোবহান সম্প্রতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিসে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। যা পরবর্তীতে কৃষি অফিসে প্রেরণ করা হয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জহির রায়হান বলেন, উপজেলার প্রান্তিক কৃষক আবদুল সোবহানের একটি আবেদন ইউএনও অফিসের মাধ্যমে আমার অফিসে জমা হওয়ায় আমি সহকারী কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা উথোয়াইপ্রু মারমাকে প্রধান ও উপসহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা মো. ইউনূচ নূরকে সদস্য সচিব এবং ব্লকের দায়িত্বশীল উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. তামিম আজিজকে সদস্য করে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা আগামী ৪ কর্ম দিবস (১০ জানুয়ারী) এর মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিবেন।
এছাড়া আমি গত ৬ জানুয়ারী সরেজমিন পরিদর্শন করে কৃষকের বক্তব্য শুনেছি, আলু বীজ দেখেছি। এতে প্রাথমিকভাবে আমার মনে হয়েছে বীজে ত্রুটি ছিল।
এছাড়াও উপজেলার একাধিক ব্লকেও আলু বীজে কৃষক ক্ষতিগ্রস্তের তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। ব্লকের দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের এ বিষয়ে খোঁজ-খবর নিতে বলা হয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক আবদুল সোবহান বলেন, আমি ৩০-৩৫ বছর আলু চাষ করেছি। বাজারের 'বীজ ভান্ডার' থেকে এবার এ গ্রেডের এসিআই কোম্পানির আলু বীজ কিনে আমি এখন নিঃস্ব! সব বীজ, অঙ্কুরিত না হওয়া এবং গাছের গোড়ায় থাকা বীজ আলুতে পচন ধরার বিষয়ে অভিযোগ করতে গিয়ে দোকানদারের হাতে আমি লাঞ্ছিত, অপমানিত হয়েছি! এখন পর্যন্ত আলুতে ২লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে। গত বছর সাড়ে ৩লাখ টাকার আলু বিক্রি করেছিলাম। এবার মনে হচ্ছে সবই মাটি! মানিকছড়ি বাজারের ' প্রকাশ বীজ ভান্ডার' মালিক দুলাল চন্দ্র মজুমদার বলেন, আমি এসিআই কোম্পানির একজন স্বীকৃতি ডিলার। উপজেলার প্রান্তিক কৃষকেরা বিগত সময়ের ন্যায় এবারও বীজ নিয়েছে। আবদুল সোবহান ব্যতিত আর কেউ বীজের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেনি। মনে হচ্ছে আলু বীজ বপনে ত্রুটি হয়েছে! তবে বীজে ত্রুটি ছিল না।
সম্পাদকঃ এম. শাহীন আলম।। প্রকাশকঃ উম্মে হাবিবা
যোগাযোগ: ০১৬৪৭-৬২৭৫২৬/ ০১৮২৩-৯১৯০৯৫ whatsapp
parbattakantho@gmail.com
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধনের জন্য আবেদিত
পার্বত্য কন্ঠ © ২০১৮-২০২৪ সংরক্ষিত