লামায় দলবল নিয়ে জোর করে জমি দখলের চেষ্টার ঘটনায় বিবাদীর মারধরে অন্তস্বত্বা নারীসহ আহত হয়েছে ৬ জন। এ ঘটনায় আহত জাহেরা বেগম বর্তমানে লামা হাসপাতালে মূমুর্ষু অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছে। ঘটনাটি নিয়ে গত ১ বলেন, জানুয়ারী রীমাআক্তার(২০)স্বামী নবী হোসেন বাদী হয়ে লামা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
জানাগেছে, আমার মৃত দাদা আব্দুর রব ফকিরের নামে লামা রূপসীপাড়া ইউনিয়নে ২নং ওয়ার্ডের দরদরী মাষ্টারপাড়ায় ২৯৪নং দরদরী মৌজার আর/১১৮নং হোল্ডিং এর আন্দর ৫.০০ (পাঁচ) একর জমি স্থীত আছে। উক্ত জায়গা বর্তমানে আমরা ওয়ারিশ সূত্রে ভোগ দখলে স্থীত আছি। উপরোক্ত বিবাদীগণ লোভের বশবর্তী হয়ে জবর দখল করার উদ্দেশ্যে বিভিন্ন অপচেষ্টা ও মারাত্মক প্রাণ নাশের হুমকি প্রদর্শন করে আসছে। তারই ধারাবাহিকতায় ঘটনার তারিখ ও সময়ে অর্থ্যাৎ গত৩১/১২/২০২৪ইং তারিখ, সকাল অনুমান ১০:০০ ঘটিকায় সময় মোঃ কাউছার (৫৫)পিতা- মৃত দেলোয়ার হোসেন এর নেতৃত্বে অপরাপর বিবাদীগণ মোঃ তারেক (২৮), পিতা- মৃত বাবুল, আব্দুর রহিম (৪০), পিতা- কোরবান আলী, আকরাম আলী (৬৫), পিতা- নুর জামাল, মরিয়ম বেগম (৪০), স্বামী- মোঃ কাউছার, আছমা বেগম (২০), স্বামী- মোঃ তারেক, সর্ব সাং- দরদরী মাষ্টার পাড়া, ০২নং ওয়ার্ড, ০৬নং রূপসী পাড়া ইউপি, থানা- লামা, বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরস্পর যোগসাজসে একই উদ্দেশ্য সাধনকল্পে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হইয়া যথাক্রমে ধারালো দা, লোহার রড়, লাঠিসোটা ইত্যাদি নিয়ে ঘটনাস্থলে আমাদের জায়গা তাহাদের বলিয়া দাবি করে জোর পূর্বক জায়গা জবর দখলের উদ্দেশ্যে ঘর নির্মানের চেষ্টা চালায়। বিবাদীগণের উক্ত জবর দখল কর্মকান্ডে বাঁধা প্রদান করতে আমার মা- নাছিমা আক্তার (৪০) এবং আমার জেঠি- জাহেরা বেগম (৪৫) গেলে বিবাদীগণ আমার মা ও জেঠি কে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে অতর্কিত ভাবে হামলা করে এলোপাতাড়ি লাথি, কিল, ঘুষি মারিয়া সর্বাঙ্গে থেতলানো নিলাফুলা জখম করে। বিবাদীগণের মারধরের ফলে আমার মা ও জেঠির আত্মচিৎকারে তাহাদের উদ্ধার করতে আমি ও আমার স্বামী ঘটনাস্থলে আগাইয়া আসিলে ১নং বিবাদী আমার সন্তান নষ্ট করার উদ্দেশ্যে তলপেটে সজোরে লাথি মারে। আমি বাদী বর্তমানে ৯ মাসের অন্তসত্বা। আমার স্বামী আমাকে উদ্ধার করার চেষ্টা করলে ৫নং বিবাদীর হাতে থাকা লাঠি দিয়ে এলোপাতাড়ি সর্বাঙ্গে বারি মেরে থেতলানো নিলাফুলা জখম করে। ২নং বিবাদী দু'হাত দ্বারা আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে আমার গলা চেপে ধরে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যার চেষ্টা করলে আমার স্বামী আমাকে উদ্ধার করে। ঘটনার একাপর্যায়ে বিবাদীগণ কর্তৃক এহেন কর্মকান্ড ও মারধরের ফলে আমরা আত্মচিৎকার করিলে আমাদের আত্মত্মচিৎকার শুনিয়া আশপাশের লোকজন ঘটনাস্থলে আগাইয়া আসিলে সকল বিবাদীগণ আমাদের পরিবারের লোকজনকে হুমকি দিয়ে বলে যে, "ঘটনার বিষয় নিয়ে বেশি বাড়াবাড়ি করিলে কিংবা মামলা মোকদ্দমা করিলে তোকে সহ তোর পরিবারের লোকজনকে প্রাণে হত্যা করিয়া লাশগুম করিয়া ফেলিব, জায়গা জবর দখল করিয়া নিব, মিথ্যা মামলায় জড়াইয়া হয়রানী করিব, ঘরবাড়ি আগুন দিয়া জ্বালাইয়া দিব" মর্মে মারাত্মক প্রাণনাশের হুমকি প্রদর্শন করে। স্থানীয় লোকজন আমাদের ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করিয়া লামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে এসে চিকিৎসা করায়। এই সুযোগে বিবাদীগণ আমাদের জায়গায় জোর পূর্বক ঘর নির্মানের কাজ অব্যহত রাখে। চিকিৎসা শেষে কিছুটা সুস্থ হয়ে গত ১জানুয়া লামা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করি।
এদিকে এ ঘটনায় মোঃ কাউছার(৫৫) বলেন, আব্দু রব ফকিরের দ্বিতীয় স্ত্রী ফাতেমা খাতুনকে ঘর নির্মানে ঘটনার দিন সহায়তা করতে গিয়েছিলাম। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে। অন্য দিকে ১নং বিবাদী মোঃ তারেক বলেন, আমার শশুর মোঃ কাউছার আব্দু রব ফকিরের দ্বিতীয় স্ত্রী ফাতেমা খাতুনের কাছ থেকে জমি কিনে। ঐ জায়গা দখলে নিতে ঘর বাঁধতে গেলে মারামারির ঘটনা ঘটে।
মাষ্টারপাড়া সমাজ সরদা মোঃ মোজাম্মেল হোসেন প্রকাশ বেচু মাঝি বলেন, বিবাদীগন আব্দু রব ফকিরের জায়গা দখল করতে গেলে তার ওয়ারিশরা বাঁধা দেয়। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের মধ্যে মারামারি হয়। এ ঘটনায় বিবাদীদের উক্ত জমি জবর দখলে না করতে আমিও বাঁধা দিই। তারা শুনেনি।
এ ব্যাপারে লামা থানার তদন্তকারী কর্মকর্তা এমরান হোসেন বলেন, ঘর নির্মানের ঘটনাকে কেন্দ্র করে উভয় পক্ষের মাঝে হাতাহাতি হয়। তবে জমির মালিকানা নিয়ে রয়েছে বিরোধ।
সম্পাদকঃ এম. শাহীন আলম।। প্রকাশকঃ উম্মে হাবিবা
যোগাযোগ: ০১৬৪৭-৬২৭৫২৬/ ০১৮২৩-৯১৯০৯৫ whatsapp
parbattakantho@gmail.com
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধনের জন্য আবেদিত
পার্বত্য কন্ঠ © ২০১৮-২০২৪ সংরক্ষিত