অসীম রায় (অশ্বিনী) বান্দরবানঃ
বান্দরবানের লামার উপজেলার সরই পূর্ববেতছড়া পাড়া এলাকায় পূর্ব-বেতছড়া পাড়ায় ১৭টি ত্রিপুরা পরিবারের ঘরবাড়ি অগ্নিসংযোগে পুড়ে যাওয়া ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা। এসময় অগ্নিসংযোগে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করা হয়।
পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা বান্দরবানের লামায় অগ্নিসংযোগে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে যাচ্ছেন। সেখানকার ত্রিপুরা খ্রিস্ট্রান সম্প্রদায়ের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করবেন তিনি। বড়দিনের আগের রাতে বান্দরবানের লামায় ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের একটি পাড়ায় অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ১৭টি বসতঘর ভস্মীভূত হয়েছে।
২৬ শে ডিসেম্বর বিকেলে তিনি যাবেন বলে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে জানানো হয়েছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার সকালে বান্দরবান জেলা প্রশাসক শাহ মুজাহিদ উদ্দিন এবং পুলিশ সুপার শহীদুল্লাহ কাওসার ক্ষতিগ্রস্ত ১৯টি পরিবারের সঙ্গে দেখা করেছেন, যাদের অস্থায়ী বাড়িতে হামলার সময় আগুন দেওয়া হয়েছিল।
ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে তাৎক্ষণিক খাদ্য ও ত্রাণ সামগ্রী সরবরাহ করেছে জেলা প্রশাসন। জেলা কর্মকর্তারা জানান, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর লামার কাছে একটি গ্রামে স্থায়ী বাড়ি রয়েছে। আগুন দেওয়া ঘরগুলো ছিল তাদের অস্থায়ী ‘টং’।
অগ্নিসংযোগের ঘটনায় একটি এফআইআর দায়ের করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এফআইআর দায়ের করা ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের একজন প্রবীণ এই ঘটনার জন্য ছয় প্রতিদ্বন্দ্বী ত্রিপুরা খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের সদস্য এবং একজন বাঙালি মুসলমানকে আসামি করেছেন। এ ঘটনায় চারজনকে আটক করেছে পুলিশ।
প্রেস উইং থেকে জানানো হয়েছে, প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের সদস্যদের দু’টি গ্রুপের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে শত্রুতা চলছিল। এই শত্রুতার জেরে অগ্নিসংযোগ করা হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
২৭ ডিসেম্বর শুক্রবার লামা উপজেলার সরই ইউনিয়নের পূর্ববেতছড়া পাড়ায় ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের ১৭টি ঘরে অগ্নিসংযোগে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করে লোকজনের সাথে মতবিনিময় করেন এবং তাঁর সাথে ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান রিপন চাকমা, বান্দরবান জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক থানজামা লুসাই, জেলা প্রশাসক শাহ্ মোজাহিদ উদ্দিন, পুলিশ সুপার শহিদুল্লাহ কাওছার, লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভাঃপ্রাঃ) রুপায়ন দেব,
বান্দরবান পার্বত্য জেল পরিষদের সদস্য রাজু ময় তঞ্চঙ্গ্যা, মো. নাছির উদ্দিন, সাইফুল ইসলাম রিমনসহ সরকারি ঊধ্বর্তন কর্মকর্তারাও ঘটনাস্থল পরিদর্শনে ছিলেন।
অগ্নিসংযোগে পুড়ে যাওয়া ঘরবাড়ি পরিদর্শন করে ক্ষতিগ্রস্তদের সাথে মতবিনিময় করেন। মতবিনিময় শেষে ১৭ পরিবারকে
বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে প্রত্যেক পরিবারকে দুই বান্ডিল ঢেউটিন,২৫কেজি চাউল ও কম্বল বিতরন করেন।
বান্দরবানের লামা উপজেলায় ত্রিপুরা পাড়ায় আগুনের ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা। বুধবার এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. রেজুয়ান খান।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত মঙ্গলবার রাতে বান্দরবানের লামায় ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের ঘর-বাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক উপদেষ্টা। বান্দরবানের গোয়েন্দা সংস্থা ইঙ্গিত দিয়েছে, পলাতক সাবেক পুলিশ প্রধান বেনজীর আহমেদের সন্দেহভাজন গুন্ডা জায়গা দখলের নামে এই জঘন্য হামলা চালিয়েছে।
উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা বান্দরবান জেলা প্রশাসন ও পুলিশকে পূর্ণ তদন্ত করে প্রকৃত অপরাধীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার এবং ক্ষতিগ্রস্তদের নিরাপত্তা জোরদার করার জন্য পুলিশ প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছেন বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে। একইসঙ্গে সেখানে সরকারি প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
বান্দরবান জেলা কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যে অগ্নিদগ্ধ বাড়িঘর পুনর্নির্মাণের জন্য সব ধরনের সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকেও এ সংক্রান্ত আরও সহায়তা দেওয়া হবে বলে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা জেলা প্রশাসনকে নিশ্চিত করেছেন
সম্পাদকঃ এম. শাহীন আলম।। প্রকাশকঃ উম্মে হাবিবা
যোগাযোগ: ০১৬৪৭-৬২৭৫২৬/ ০১৮২৩-৯১৯০৯৫ whatsapp
parbattakantho@gmail.com
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধনের জন্য আবেদিত
পার্বত্য কন্ঠ © ২০১৮-২০২৪ সংরক্ষিত