আব্দুল মান্নান, স্টাফ রিপোর্টার খাগড়াছড়ি
বিবিএস পড়ুয়া শিক্ষার্থী চমক দে (২১) মাত্র ৬ বছর বয়সে জন্ডিসে আক্রান্ত হয়ে শুরু হয় তাঁর চিকিৎসা। হাসপাতাল আর চিকিৎসা ব্যয়ে যন্ত্রণাময় জীবন! বাবা খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি উপজেলার একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী অজিত কুমার দে ও মা গৃহিণী সীমা দে। তাঁদের সংসারে দুই পুত্র ও এক কন্যার মধ্যে ‘চমক দে ‘জ্যেষ্ঠ। দীর্ঘ ১৫ বছর জন্ডিস বা লিভার সিরোসিস চিকিৎসায় দেশে-বিদেশে ব্যয় হয়েছে ৮-১০ লাখ টাকা! সর্বশেষ গেল বছর ভারতের লিভার হসপিটাল এআইজিতে পরীক্ষা-নিরীক্ষায় ধরা পড়ে ‘চমক দে’র লিভার ডেমেজ! তাঁর শরীরে লিভার সংযোজন আবশ্যক! এতে ব্যয় হবে আরও ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৩০ লাখ টাকা। চিকিৎসকের কাছ থেকে এমন আকাশ ভাঙা ধারণায় চমক দে’র পিতা-মাতা বাকরূদ্ধ! সন্তানকে বাঁচানো আর সংসারের অভাব,অনটনে অজিত কুমার দে’র পরিবারে হতাশা নেমে আসে! ছেলের জীবন বাঁচতে এই মুহূর্তে প্রয়োজন ৩০ লাখ টাকা! যা একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর পক্ষে যোগাড় করা দুঃসাধ্য ব্যাপার! ফলে বাবা-মা’র চোখে ঘুম নেই! ফলে স্থানীয় মানবিক সংগঠন ও সুশীল সমাজের সহায়তায় সন্তানের জীবনরক্ষায় “মানবিক সাহায্যের” হাত বাড়াতে মানুষের কাছে সবিনয় আবেদন নিয়ে দারস্থ হয়েছেন বাবা অজিত কুমার দে ও মা সীমা দে!
৯ নভেম্বর শনিবার উপজেলাস্থ মুসলিমপাড়া বাসায় গিয়ে দেখা গেছে, কলেজ পড়ুয়া সন্তানের রোগমুক্তিতে মা-বাবা ঘরে পূজা দিয়ে সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনায় মগ্ন। এক পর্যায়ে কথা হয় মৃত্যপথযাত্রী সন্তানের পিতা-মাতার সাথে। তাঁরা জানান, চমক দে’ জন্মের ৬ বছর বয়সে জন্ডিসে আক্রান্ত হওয়ার পর শুরু হয় প্রাথমিক চিকিৎসা। স্থানীয় চিকিৎসক থেকে শুরু করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বেশ কয়েকটি বেসরকারি মেডিকেলের লিভার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষায় নিশ্চিত করেন, জন্ডিস থেকে বার বার অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। শুরু হয় চিকিৎসা। এভাবে দুঃসহ জীবনপ্রদীপ নিভু, নিভুতে কেটে যায় দীর্ঘ ১৫ বছর! কিন্তু রোগী স্থায়ীভাবে সুস্থ হচ্ছে না! যতদিন ওষুধ সেবন করা হয়, ততদিন কিছুটা সুস্থ থাকে চমক দে! গেল বছরের ৮ ডিসেম্বর উন্নত চিকিৎসায় তাকে ভারতের হায়দারাবাদস্থ এআইজি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে লিভার বিশেষজ্ঞ সার্জন (Dr. Venishetty Shantan) নিশ্চিত করেন চমক দে’র লিভারটি সম্পর্ণ ডেমেজ!(অকেজো)। তাকে বাঁচতে হলে শিগগিরই নতুন লিভার সংযোজন করতে হবে। এতে ব্যয় হবে প্রায় ৩০ লাখ টাকা ! এ খবর শোনার পর আমরা বাকরুদ্ধ! তাৎক্ষণিক এত টাকা জোগাড় করতে না পেরে হতাশা নিয়ে দেশে ফিরে আসি। ইতোমধ্যে এক বছর অতিবাহিত হওয়ায় চমক দে’ এখন আরও অসুস্থ হয়ে পড়েছে! মনে হচ্ছে এখন কেবলই মৃত্যুপথযাত্রী! অজিত কুমার দে আরও বলেন, আমি আমার সব সহায়,সম্পদ বিক্রি করে ১৫-১৬ লাখ টাকা সংগ্রহ করেছি। অবশিষ্ট টাকা ব্যবস্থা করার কোন সাধ্য নেই!
সমাজের মানবিক ও বিত্তবানরা একটু সদয় হলে মৃত্যপথযাত্রী সন্তানকে লিভার স্থাপন করে হয়তো বাঁচাতে পারতাম। চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের বিবিএসে ১ম বর্ষের ছাত্র চমক দে বলেন, আমার ইচ্ছে ছিল পড়াশোনা শেষে একজন সফল উদ্যোক্তা হওয়া! আজ রোগের কাছে আমি হেরে যাচ্ছি, আমার স্বপ্ন আজ মৃতপ্রায়! আমার পিছনে মা-বাবার সব সহায়,সম্পদ তিলে তিলে শেষ! একদিন আমিও হারিয়ে যাবো, “উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন, স্বপ্নই থেকে যাবে”। আমাকে বাঁচতে কেউ যদি পাশে দাঁড়াতে চান, সহযোগিতা পাঠাতে যোগাযোগ করুণ (চমক দে’ ০১৯৫৯০২১১০৭) বিকাশ,নগদ নাম্বারে।