আব্দুল মান্নান, স্টাফ রিপোর্টার খাগড়াছড়ি
ইসলামিক ফাউন্ডেশন পরিচালিত মসজিদভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রমে খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি উপজেলায় ৪৫টি কেন্দ্রে হাতে-কলমে বাংলা, ইংরেজি, গণিত ও আরবী বর্ণের সাথে পরিচিত হচ্ছে শিশুরা। প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষার্থী ও নানা বয়সীরা জ্ঞান অর্জন করছেন অনায়াসে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দেশব্যাপি মসজিদ ভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রমের অংশ হিসেবে উপজেলার ৪৫টি কেন্দ্রে চলছে শিক্ষা কার্যক্রম। কোরআন শিক্ষা ২২টি এবং প্রাক-প্রাথমিকে ২৩টি। ২০২৪ শিক্ষাবর্ষের শুরুতে কোরআন শিক্ষায় ৩৫টি এবং প্রাক-প্রাথমিকে ৩০টি কেন্দ্রে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হলেও শিক্ষক অনিয়মিত ও শিক্ষার্থী আশানুরূপ না থাকায় কোনআন শিক্ষায় ১৩টি ও প্রাক-প্রাথমিকের ৭টি কেন্দ্র ইতোমধ্যে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ফলে বর্তমানে ৪৫টি কেন্দ্রে চলছে শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম।
বুধবার সকালে উপজেলার কয়েকটি প্রাক-প্রাথমিক কেন্দ্র গিয়ে দেখা গেছে, পূর্ব নির্ধারিত কয়েকটি কেন্দ্র পরিবর্তন সাপেক্ষে এবং অন্যগুলো নির্ধারিত কেন্দ্রে পাঠদান চলছে। ৪ এর বেশি এবং ৬এর কম বয়সী শিশুরা অ,আ,ই, ক, খ, ১,২,৩, আলিফ, বা,তা বর্ণে হাত বুলিয়ে, ব্ল্যাক বোর্ডে লিখিত অক্ষরে হাত দিয়ে উচ্চারণ করছে এবং সহপাঠীদের মুখে উচ্চারণ করাচ্ছে শিক্ষার্থী। এতে খেলনার ছলে, মনের আনন্দে হেসে, খেলে পাঠদানে মনোকর্ষণে ব্যস্ত শিশুরা। সরকারি ও সপ্তাহিক বন্ধ ব্যতিত প্রতিদিন সকাল ৯-১১টা পর্যন্ত প্রাক-প্রাথমিক ক্লাস করছে এসব শিশুরা।
এ সময় হাজীপাড়া তুহিন মিয়ার বাড়ির মক্তবের শিক্ষক খোরশেদা বেগম রেনু জানান, প্রতিদিন ২ঘণ্টা ছোট শিশুরা গ্রামের প্রাক-প্রাথমিকে অক্ষরজ্ঞান অর্জনে বেড়ে উঠছে। এই পাঠদানের বিনিময়ে আমরা( শিক্ষক) নিজস্ব ব্যাংক হিসেবে মাসিক ৫হাজার টাকা সম্মানী পাচ্ছি। জিয়ানগর মসজিদ সংলগ্ন মক্তব কেন্দ্রের শিক্ষক রোমানা আক্তার জানান, গুচ্ছগ্রামে প্রাথমিক স্কুল না থাকায় এখানকার শিশুরা নিয়মিত পড়তে আসে। ফলে প্রাথমিক গিয়ে ওরা ভালো করে। তবে একাধিক পাড়ায় গিয়ে পরিবর্তীত কেন্দ্রে পাঠদানের সত্যতা মিলেছে। এ প্রসঙ্গে উপজেলা মডেল মসজিদের ফিল্ড সুপারভাইজার মাও. মো. ইউসুফ বাহার আজকের পত্রিকাকে বলেন, মসজিদভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রমে বছরের শুরুতে নির্ধারিত কয়েকটি কেন্দ্রে আশানুরুপ শিক্ষার্থী না পাওয়ায় কয়েকটি কেন্দ্র পরিবর্তন করে পাশ্ববর্তী এলাকায় সরিয়ে নিয়ে পাঠদান চলমান রাখা হয়েছে এবং আশানুরূপ শিক্ষার্থী না হওয়ায় ২০টি কেন্দ্র বন্ধ ইতোমধ্যে বন্ধ করা হয়েছে। এখন ৪৫টি কেন্দ্রেই সন্তোষজনক ভাবে শিক্ষা কার্যক্রম চলছে।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন খাগড়াছড়ির উপপরিচালক মোহাম্মদ খলিলুর রহমান বলেন, ইসলামিক ফাউন্ডেশন দেশব্যাপি মসজিদ ভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রমে বয়স্ক, প্রাক-প্রাথমিক শিশু ও গণশিক্ষায় সর্বজনদের জ্ঞান অর্জনের সুযোগ রয়েছে। এরই অংশ হিসেবে খাগড়াছড়ির সব উপজেলায় কার্যক্রম চলছে। কোন কেন্দ্রে শিক্ষার্থী সংকট, ইমাম বদলীসহ নানা কারণে কেন্দ্র পরিবর্তন ও নতুন শিক্ষক নিয়োগেরও সুযোগ দেওয়া হয়। নিয়মিত কেন্দ্র মনিটরিং করার জন্য ফিল্ড সুপারভাইজারের পাশাপাশি সাধারণ কেয়ারটেকারেরাও নিয়মিত কেন্দ্র দেখাশোনা করেন। মানিকছড়ি উপজেলায় কয়েকটি কেন্দ্রে কাঙ্ক্ষিত শিক্ষার্থী না হওয়ায় কয়েকটি কেন্দ্র পরিবর্তন এবং ২০টি কেন্দ্র বন্ধ করা হয়েছে।
সরকারের শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রমে ভূয়া কেন্দ্র বা কর্তব্যে অবহেলা করার সুযোগ নেই। তৃণমূলে মসজিদভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কাজ এগিয়ে নিতে বছরের শুরুতে আরও নতুন কেন্দ্র চালুর পরিকল্পনা রয়েছে।
সম্পাদকঃ এম. শাহীন আলম।। প্রকাশকঃ উম্মে হাবিবা
যোগাযোগ: ০১৬৪৭-৬২৭৫২৬/ ০১৮২৩-৯১৯০৯৫ whatsapp
parbattakantho@gmail.com
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধনের জন্য আবেদিত
পার্বত্য কন্ঠ © ২০১৮-২০২৪ সংরক্ষিত