ছোটন বিশ্বাস, খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি।। খাগড়াছড়িতে হিন্দু - মুসলিম, পাহাড়ি-বাঙালির সম্মিলিত বসবাস। এখানে ধর্মীয় কিংবা অন্য কোনো উৎসব মানে সবার সমান অংশগ্রহণ। এর মধ্যে বছর ঘুরে উৎযাপিত হচ্ছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। এ পুজা পাহাড়ে পরিণত হয় সকল জাতি, ধর্ম, বর্ণের মানুষের এক মিলনমেলায়।
এবছর খাগড়াছড়িতে ৬১টি পূজা মন্ডপে অনুষ্ঠিত হচ্ছে শারদীয় দুর্গোৎসব। পাহাড়ে বসবাসরত ত্রিপুরা জনগোষ্ঠী সনাতন ধর্মে বিশ্বাসী হওয়ায় তারাও সমানভাবে উদযাপন করতে যাচ্ছেন শারদীয় দুর্গা পূজা। তবে এবার খাগড়াছড়ি সদরস্থ খাগড়াপুর সার্বজনীন দুর্গা মণ্ডপে দেবি দুর্গাকে রূপ দেওয়া হয়েছে ভিন্ন সাজে। দেবী দুর্গাকে সাজানো হয়েছে ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর ঐতিহ্যবাহী পোশাক রিনাই-রিসা, চন্দ্রাহার সহ বিবিধ অলংকারের সাজে।
দেবীর ডান পাশে লক্ষ্মী ও কার্তিক, বামে সরস্বতী ও গণেশ। তাদের পরনেও ঐতিহ্যবাহী পোশাক আর অলংকার। দেখেই মনে হবে যেন স্বয়ং দেবী দূর্গা এসে বসে আছেন সন্তানদের নিয়ে। প্রতিমার সঙ্গে মিলিয়ে
মঞ্চসজ্জা আর মণ্ডপে প্রবেশ পর্যন্ত সবকিছুই পাহাড়ে ত্রিপুরাদের সংস্কৃতির আদলে সাজিয়েছেন শিল্পীরা।
দেবীকে সাজানো হয়েছে ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর ঐতিহ্যবাহী পোশাক রিনাই - রিসা, গলায় মালা হিসেবে পড়ানো হয়েছে রুপার চন্দ্রাহার আর পুইসা মালা (যা পয়সা দিয়ে তৈরি বিশেষ মালা), খোঁপায় পড়ানো হয়েছে সুরাম, কালসি, কানে পড়ানো হয়েছে ‘য়াংকুং’, হাতে বাংগ্রী এবং পায়ে পড়ানো হয়েছে 'বেংকি'। দেবী দুর্গা ছাড়াও একই সাজে সাজানো হয়েছে লক্ষী, স্বরসতী'কে।
স্থানীয় জসি ত্রিপুরা জানান, এবার দেবী দুর্গা মা'কে আমাদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক রিনাই-রিসা আর চন্দ্রাহার সহ বিবিধ অলংকারের সাজে বেশ সুন্দর লাগছে। মঞ্চ সাজসজ্জাও করা হয়েছে প্রকৃতির আদলে। এবারে পূজাতে ঘুরে ঘুরে প্রতিমা দেখবো। অনেক মজা হবে।
দর্শনার্থী সুপ্রিয়া কর্মকার জানান, আগে কখনো মাকে এই পোশাকে দেখা হয়নি। এই পোশাকে দেবীকে বেশ লাগছে। নিজেদের সংস্কৃতি, ঐতিহ্য প্রকৃতি এবং পোশাকে তুলে ধরেছেন। এমন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানান তিনি।
খাগড়াপুর সার্বজনীন শ্রী শ্রী দুর্গা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক চামেলী ত্রিপুরা জানান, মায়ের রূপকে এবার আমাদের ত্রিপুরা রমনীদের সাঝে রূপ দেওয়া হয়েছে। আমাদের সংস্কৃতি ঐতিহ্য দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে। তাই এমন উদ্যোগ নেওয়ার কারণ বলে জানান তিনি।
খাগড়াছড়ি পুলিশ সুপার মো. আরেফিন জুয়েল বলেন, সনাতন ধর্মালম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব যেনো শান্তিপূর্ণ পরিবেশে উদযাপন করতে পারেন সেজন্য অতীতেও যে পরিমাণ নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল এ বছর তার চেয়েও বেশি নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। আশা করছি প্রতি বছরের মতো এবারও কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে শারদীয় দুর্গাপূজা পালিত হবে বলে।
সম্পাদকঃ এম. শাহীন আলম।। প্রকাশকঃ উম্মে হাবিবা
যোগাযোগ: ০১৬৪৭-৬২৭৫২৬/ ০১৮২৩-৯১৯০৯৫ whatsapp
parbattakantho@gmail.com
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধনের জন্য আবেদিত
পার্বত্য কন্ঠ © ২০১৮-২০২৪ সংরক্ষিত