ছোটন বিশ্বাস, খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি।। সনাতন ধর্মালম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। আর এই উৎসবকে কেন্দ্র করে মন্দিরে মন্দিরে চলছে প্রতিমা তৈরি ও পেন্ডেল তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন মৃৎশিল্পী ও আয়োজক কমিটি।
মৃৎশিল্পীদের নিপুণ হাতে খরের বেণী, কাদামাটি, বাঁশ, রং ও তুলি দিয়ে গড়ে তুলছেন একেকটি অসাধারণ প্রতিমা। এ ছাড়া দেবী দুর্গা, গণেশ, লক্ষ্মী, সরস্বতী, কার্তিককে আকৃতি দিতে দিন - রাত পরিশ্রম করছে যাচ্ছেন তারা। একই ভাবে পূজার বাকি বেশীদিন না থাকায় পূজার পেন্ডেল, সাজসজ্জা থেকে শুরু করে কিভাবে পূজায় নতুন রূপ দেয়া যায় নানান কাজে ব্যস্ত হয়ে পরেছেন আয়োজক কমিটিও।
আগামী বুধবার (৯ অক্টোবর) মহাষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে শুরু হবে শারদীয় দুর্গাপূজা। বুধবার (২ অক্টোবর) মহালয়ার মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে দেবীপক্ষ।
সরেজমিনে শহরের কেন্দ্রীয় লক্ষ্মী নারায়ণ মন্দির, জগন্নাথ মন্দির, আনন্দ মন্দির, শান্তি নগর গীতাশ্রম মন্দির, খাগড়াপুর মন্দির, দীঘিনালা উপজেলার শীব মন্দির ঘুরে দেখা গেছে, মৃৎশিল্পীরা প্রতিমা তৈরির কাজে ব্যস্ত। মণ্ডপে মণ্ডপে চলছে প্রতিমা তৈরির কাজ। ইতোমধ্যে খড় আর কাদামাটি দিয়ে শেষ হয়েছে প্রতিমা তৈরির কাজ। এখন চলছে রং আর তুলি দিয়ে প্রতিমার সাজানোর কাজ।
একইভাবে মন্দির গুলোতে আয়োজক কমিটির তত্ত্বাবধানে পেন্ডেল ও সাজসজ্জার কাজে ব্যস্ত সময় পাড় করছেন কমিটির সদস্যরা।
মৃৎশিল্পী বাবলু কুমার দে বলেন, পুজার বাকি বেশি দিন না থাকায় আমরা রাত দিন পরিশ্রম করছি যাচ্ছি । খাগড়াছড়িতে চলমান পরিস্থিতিতে গত বছরের তুলনায় এ বছর কাজ কম। সব জিনিসের দাম বেড়ে গেছে। আমাদের লাভও তেমন হচ্ছে না।
গত বছর প্রতিমার বাজেট ছিল ৩৫-৪০ হাজার টাকা। এবছর তা অনেকটা কমে গেছে। আর আমাদের পরিশ্রম বেড়ে গেছে। তারকাঁটা থেকে শুরু করে বাঁশ, কাঠ, সুতা, খড়ের দাম অনেক বাড়তি। তাই খরচ বেশি পড়ছে। লাভ না হলেও পেশা ধরে রেখেছি।
লক্ষ্মী-নারায়ণ মন্দিেরর সাধারণ সম্পাদক স্বপন ভট্টাচার্য বলেন, আমাদের পূজার প্রস্তুতি প্রায় শেষ। প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও আমাদের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, ধুনুচি নৃত্য, ঢাক-ঢোল বাজানো প্রতিযোগিতা সহ বিভিন্ন আয়োজন গুলো থাকছে। আর চলমান পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে প্রশাসন সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছেন। আশা করি এবছর পূজা স্বারম্ভের সহিত উদযাপন করতে পারবো।
খাগড়াছড়ি জেলা পুজা উদযাপন কমিটির সভাপতি অশোক মজুমদার বলেন, খাগড়াছড়িতে এবার ৬১টি মণ্ডপে শারদীয় দুর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হবে। তাঁর ৫৬টি মন্দিরে প্রতিমা পূজা এবং ৫টি মন্ডপে ঘট পূজা অনুষ্ঠিত হবে। প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি বিএনপি, বৈষম্য বিরোধী ছাত্ররা সহ সমস্ত দল আমাদের পাশে আছেন। এবং মন্দিরের কমিটির নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবী টিম সার্বক্ষণিক নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে। আশা করি অন্যান্য বছরের তুলনায় আমরা এ বছর পূজা আরো ভালো ভাবে উদযাপন করতে পাড়বো।
খাগড়াছড়ি পুলিশ সুপার আরেফিন জুয়েল বলেন, সনাতন ধর্মালম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব যেনো শান্তিপূর্ণ পরিবেশে উদযাপন করতে পারেন সেজন্য আমরা প্রয়োজনীয় সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি আমাদের সিভিল পোশাকধারী পুলিশ সদস্য থাকবেন।
অতীতেও যে পরিমাণ নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল এ বছর তার চেয়েও বেশি থাকবে। পুলিশের পাশাপাশি আনসার সদস্য, র্যাব, সেনাবাহিনীসহ সাদা পোশাকে গোয়েন্দা নজরদারি থাকবে সার্বক্ষণিক। আশা করছি প্রতি বছরের মতো এবারও কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে শারদীয় দুর্গাপূজা পালিত হবে বলে।
সম্পাদকঃ এম. শাহীন আলম।। প্রকাশকঃ উম্মে হাবিবা
যোগাযোগ: ০১৬৪৭-৬২৭৫২৬/ ০১৮২৩-৯১৯০৯৫ whatsapp
parbattakantho@gmail.com
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধনের জন্য আবেদিত
পার্বত্য কন্ঠ © ২০১৮-২০২৪ সংরক্ষিত