আরিফুল ইসলাম রিয়াজ, মোল্লাহাট, বাগেরহাট :
বাগেরহাটের মোল্লাহাটে উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা পলাশ কুমার বিশ্বাসের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ছত্র ছায়ায় দূর্নীতি, অনিয়ম, সেচ্ছাচারিতা, ক্ষমতার অপব্যবহার ও অনৈতিক কর্মকান্ডের অভিযোগ উঠেছে।
এসব অনিয়ম ও দূর্নীতির বিরূদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বাগেরহাট জেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ে অভিযোগ করেছে উপজেলা পরিবার পরিকল্পনার সকল কর্মকর্তা/কর্মচারিবৃন্দ। এ অভিযোগের ভিত্তিতে অফিস পরিদর্শন করে তদন্তের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানালেও নেয়া হয়নি কোন ব্যবস্থা।
অভিযোগ করে অফিস সহকারীগন ও অন্যান্য কর্মচারিবৃন্দ জানায়, ২০২১ সালে অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসাবে ও পরবর্তিতে ২০২৩ সালের ২০শে নভেম্বর স্থায়ীভাবে মোল্লাহাট উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন পলাশ কুমার বিশ্বাস। স্থায়ীভাবে যোগদানের পর কারনে অকারনে সকলের সাথে অনৈতিক ব্যবহার শুরু করেন, অধীনস্তদের উপর চালান ক্ষমতার স্ট্রিমরোলার।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন মহিলা (অফিস সহকারী) জানায়, অনৈতিক প্রস্তাবে রাজী না হওয়ায় তার উপর সীমাহীন নির্যাতন চালিয়েছেন পলাশ কুমার। তার গায়ে হাত তোলা, তার শরীরে অফিসের ফাইল ছুড়ে মারা, অকথ্য ভাষায় গালি দেয়া থেকে শুরু করে কিছুই বাদ রাখেনি। এমনকি তার মাতৃকালীন ছুটির সময়ে বেতন/ভাতা ও বন্ধ করে দেন ঐ কর্মকর্তা।
পরিবার কল্যান সহকারী শিউলি রানী বিশ্বাস ও অফিস সহকারী দুলার শেখের সাথে তার বিশেষ সখ্যতার প্রমান পাওয়া যায়, তাদের সকল প্রকার সুযোগ সুবিধা দেয়া ও শিউলি রানী বিশ্বাসকে সরকারী অনুমতি ছাড়াই ভারত ভ্রমনে পাঠায় পলাশ কুমার, এ বিষয়টি জানাজানি হলে অফিস সহকারীদের নানা রকম হুমকি দেন পলাশ কুমার।
তার যোগদানের পর থেকেই সরকারি বরাদ্দকৃত অর্থ কোন কাজে খরচ না করে ভুয়া বিল/ভাউচারের মাধ্যমে আত্মসাৎ করতে থাকেন। এছাড়াও তিনি সরকারী সম্পদ সরকারী বিধি-বিধান লঙ্ঘন করে বিক্রি করেন এবং বিক্রিত অর্থ কোষাগারে জমা না করে নিজেই আত্মসাৎ করেন। এছাড়াও ২০২১-২২ অর্থ বছরের ভুমি উন্নয়ন কর বাবদ উত্তোলিত টাকা পরিশোধ না করে নিজে আত্মসাৎ করেন। কেউ কোন কথা বললে তাকে এসিআর দেয়া হবে না ও পেনশন আটকে দেয়া হবে মর্মে হুমকি প্রদান করেন।
গত ৫ই আগষ্ট আওয়ামী সরকারের পতন হলে পলাশ কুমার গা-ঢাকা দেন, পরবর্তীতে ডিপার্মেন্টের চাপে ০১ সেপ্টমবর অফিসে আসতে বাধ্য হন, অফিসে ফিরে দেয়ালে শেখ হাসিনার ছবি না দেখে রাগান্নিত হয়ে অফিসে উপস্থিত কর্মচারিদের সাথে দূব্যবহার করেন এবং তাদের হুমকি দিয়ে বলেন আওয়মী সরকার আবার খমতায় আসবে তখন সকলকে দেখে নিবেন।
এরপর তিনি অফিস ত্যাগ করেন। সঙ্গত কারণে ১লা সেপ্টেম্বর থেকে অদ্যাবধী তিনি কর্মস্থলে উপস্থিত হন নাই। অভিযোগের বিষয়ে মোল্লাহাট উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা পলাশ কুমার বিশ্বাসের মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয় নাই।
এ বিষয়ে বাগেরহাট জেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক জনাব মো: শামসুদ্দীন মোল্লার মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয় নাই।