ফরিদপুরে পদ্মা নদী সংলগ্ন জলাশয় থেকে উদ্ধার হওয়া কুমিরটি গাজিপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে অবমুক্ত করা হয়েছে। বুধবার দুপুরে কুমিরটিকে গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের কর্মকর্তাদের কাছে হস্তান্তর করেন সুন্দরবনের করমজল বন্য প্রাণি প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাওলাদার আজাদ কবির সহ সংশ্লিষ্টরা। প্রায় ১৭ দিন ফরিদপুরের সদর উপজেলার নর্থ চ্যানেল ইউনিয়নের ৩৮ দাগ এলাকার ছালাম খাঁর ডাঙ্গী গ্রামের ফালুর কুম থেকে গত সোমবার দুপুরে কুমিরটিকে জালে আটকায় গ্রামবাসী। ফরিদপুরের জলাশয়ে কুমিরটির খোঁজ পাওয়ার পর খুলনা থেকে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ বিভাগের ১২ সদস্যের একটি দল দুই দফায় ফরিদপুরে এসেও সেটি উদ্ধারে ব্যর্থ হওয়ার পর গ্রামবাসী সেটিকে উদ্ধারে সক্ষম হয়। এরপর ওইদিন সন্ধায় কুমিরটিকে নিয়ে খুলনার উদ্দেশ্যে রওনা হন বন অধিদফতরের বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের মৎস্য বিশেষজ্ঞ মাে. মফিজুর রহমান চৌধুরী। রাতে বন্যপ্রাণী উদ্ধার ও পূনর্বাসন কেন্দ্রে কুমিরটিকে রাখার পরেরদিন মঙ্গলবার কুমিরটির শারীরিক পরীক্ষা করা হয়। সুদরবনের করমজল বন্যপ্রাণি প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাওলাদার আজাদ কবির জানান, কুমিরটি উদ্ধারের পর সেটি ফরিদপুর থেকে প্রথমে তারা খুলনার ছোট বয়রায় বন্যপ্রাণী উদ্ধার কেন্দ্রে নিয়ে যান। সেখানে কুমিরটির শারীরিক পরীক্ষা করে দেখা যায় সেটি মেয়ে জাতের। এর দৈর্ঘ্য সাত ফুট এবং প্রস্থ দেড় ফুট। ওজন প্রায় ৮০ কেজি। এরপর সেটি গাজিপুরে নিয়ে হস্তান্তর করা হয়। তিনি জানান, গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে আরো তিনটি পুরুষ কুমির রয়েছে। যার দুটি বৃদ্ধ হওয়ায় প্রজনন সক্ষমতা হারিয়েছে। তবে ২০১৬ সালে মাগুরার মধুমতি নদী থেকে উদ্ধার হওয়া ১৪ বছরের অপর কুমিরটির সঙ্গে উদ্ধার হওয়া এই কুমিরটির মিলন ঘটিয়ে এর বংশবিস্তার সম্ভব। ফরিদপুরের পদ্মা নদীর জলাশয় থেকে উদ্ধার হওয়া কুমিরটি বিরল প্রজাতির মিঠা পানির কুমির বলে বনবিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান। এ কারণে শুরু থেকেই তারা আশা করেছিলেন, এই কুমিরটি নারী প্রজাতির হলে সেটি সাফারি পার্কে নিয়ে বিলুপ্তপ্রায় এই মিঠা পানির কুমিরের নতুন করে বংশবিস্তার সম্ভব।