মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, বান্দরবান ব্যুরো প্রধান:
বান্দরবানের লামা উপজেলায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের ১০ম গ্রেড বাস্তবায়নের দাবীতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। উপজেলার ৮৫টি বিদ্যালয়ের ৩ শতাধিক শিক্ষকরা ১০ম গ্রেড ন্যায্য অধিকার দাবিতে শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টায় উপজেলা পরিষদ চত্বরে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন। ‘হিসাবটা টাকার নয়, হিসাবটা সম্মানের’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে সহকারী শিক্ষকদের ১২তম গ্রেড প্রদানের প্রস্তাবনা প্রত্যাখান করে ১০ম গ্রেড প্রদানের ১ দফা দাবী উপস্থাপনপূর্বক লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি দেয় শিক্ষকরা।
মানববন্ধনে সহকারী শিক্ষকদের দাবী একমত পোষণ করে অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মোহাম্মদ ইয়াহিয়া বাবলু, প্রিয়দর্শী বড়ুয়া, মো. ইলিয়াছ, প্রধান শিক্ষক আকতার উদ্দিন তপন, নুরুল হুদা চৌধুরী অংশ নেয়। বক্তব্যে সহকারী শিক্ষক মো. ফয়সাল নেওয়াজ বলেন, শিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড আর শিক্ষার ভিত্তি হলো প্রাথমিক শিক্ষা। প্রাথমিক শিক্ষকরা শিক্ষার সূতিকাগারের কান্ডারি। দেশ উন্নয়নশীল কাতারে, মাথাপিছু আয় ২৭৯৩ মার্কিন ডলার। ভিনদেশী প্রায় ১০ লক্ষ রোহিঙ্গাদের থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে রাষ্ট্রীয়ভাবে। নিজস্ব অর্থায়নে বিভিন্ন মেগা প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। অথচ প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকদের ১০ম গ্রেডের মত যৌক্তিক দাবী মেনে নেয়া হচ্ছেনা। প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ যোগ্যতা স্নাতক সমমান (২য় বিভাগ) বেতন গ্রেড: ১৩তম করা হয়েছে। যেখানে অষ্টম শ্রেণি পাস ড্রাইভার ভাইদের বেতন গ্রেড ১২তম।
সহকারী শিক্ষক কহিনুর আকতার বলেন, মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ যোগ্যতা স্নাতক সমমান বেতন গ্রেড ১০ম, পুলিশের সাব ইন্সপেক্টর পদে নিয়োগ যোগ্যতা স্নাতক বা সমমান, বেতন গ্রেড ১০ম। একইভাবে নার্স, উপ-সহকারী কৃষি অফিসার, ইউনিয়ন পরিষদ সচিব, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা পদে স্নাতক সমমান, বেতন গ্রেড ১০ম ও ৯ম করা হয়েছে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের শিক্ষাগত যোগ্যতা স্নাতক (২য় বিভাগ) সমমান হলেও ১০ম গ্রেড পেতে শুধুমাত্র আমলাতান্ত্রিক প্রতিবন্ধকতা।
সহকারী শিক্ষক মো. আজগর হোসেন বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা কোমলমতি শিক্ষার্থীদের উন্নত জীবনের স্বপ্নদর্শনে উদ্বুদ্ধ করেন। নতুন নিয়োগ পাওয়া একজন সহকারী শিক্ষক ১৩তম গ্রেডে সবমিলে ১৭ হাজার ৬৫০ টাকা বেতন পায়। উর্দ্ধমুখী নিত্যপ্রয়োজনীয় বাজারে মাসিক এ বেতনে সংকুলান না হয়ে ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে জীবন অতিবাহিত করেন।
সহকারী শিক্ষক মো. আকতার হামিদ বলেন, আমরা এক দফা দাবী উল্লেখ করে লামা উপজেলার ৮৫টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা একসাথে মানববন্ধনে অংশ নিয়েছি। শিক্ষকরা জাতি গড়ার কারিগর অথচ আমরা অবহেলিত। আমরা বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকারের কাছে সদয় অনুগ্রহ কামনা করছি, ন্যায্যতা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে প্রাথমিক সহকারী শিক্ষকদের ১০ম গ্রেড বাস্তবায়ন করা হোক।
সহকারী শিক্ষক নাছির উদ্দিন দস্তগীর বলেন, সহকারী শিক্ষকদের বেতন হয় ১৩তম গ্রেডে। মূল বেতন, বাসা ভাড়া, চিকিৎসা ভাতা, টিফিন ভাতা সহ আমরা যা বেতন পাই তা দিয়ে বর্তমান উর্দ্ধমুখি দ্রব্যমূল্যের বাজারে কোনমতে চলা যায়না। ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে হতাশা ও মনোকষ্টে আমরা পাঠদান সহ জীবিকা নির্বাহ করি। আমাদের দাবী পূরণ করতে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
মানববন্ধনে সরকারী শিক্ষক নাছির উদ্দিন দস্তগীর, আকরাম হোসেন, পলাশ সৌরভ বড়ুয়া, মিমিচাইন মার্মা, এস.এম. মিছবাহুল করিম, হাসনাত ইমরুল কায়সার শাকিল, রূপনম দেওয়ানজী, আবদুল দয়ান, মো. আমির হোসেন, মো. আজগর হোসেন, কহিনুর আকতার, মো. আকতার হামিদ, মঈদুল ইসলাম ফাহাদ, রুবেল দে, মো. ফয়সাল নেওয়াজ, লাইলী বেগম ও সাঈদা মুনমুন সহ তিন শতাধিক শিক্ষক অংশ নেয়।
সম্পাদকঃ এম. শাহীন আলম।। প্রকাশকঃ উম্মে হাবিবা
যোগাযোগ: ০১৬৪৭-৬২৭৫২৬/ ০১৮২৩-৯১৯০৯৫ whatsapp
parbattakantho@gmail.com
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধনের জন্য আবেদিত
পার্বত্য কন্ঠ © ২০১৮-২০২৪ সংরক্ষিত