রাঙামাটি প্রতিনিধিঃ
পারিবারিক কলহের জের ধরে মধ্য রাতে ডিভোর্সি স্ত্রী ও শাশুড়ীকে কুপিয়ে হত্যা করেছে পাষন্ড স্বামী মোঃ বিল্লাল।
বৃহস্পতিবার রাত ১২টার পর কাউখালী উপজেলার কাশখালীর লেইঙ্গাছড়ি এলাকায় এই হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়। হত্যার পর পালিয়ে যাওয়ার সময় উপজেলার বেতছড়ি পাইনবাগান এলাকা থেকে ঘাতক স্বামী বিল্লাল কে আটক করে পুলিশে সপর্দ করেছে স্থানীয় জনগণ।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন কাউখালী থানার ওসি রাজিব চন্দ্র কর। এ ব্যাপারে কাউখালী থানায় মামলার পক্রিয়া চলছে। নিহতরা হলেন, উপজেলার ৩নং ঘাগড়া ইউনিয়নের কাশখালী এলাকার মৃত আব্দুর রশিদের স্ত্রী আয়েশা বেগম (৬৮) ও মেয়ে ফাতেমা বেগম (২৭)।
ওসি জানান, হত্যাকন্ডের খবর পেয়ে পুলিশ তাৎক্ষণিক রাতে ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসেন। লাশের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরীর পর ময়না তদন্তের জন্য রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তিনি আরো জানান, নিহতদের পুরো শরীর সাবল দিয়ে ক্ষতবিক্ষত করে অত্যান্ত নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে।
কাশখালী সমাজের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান কালু জানান, চার বছর পূর্বে কুমিল্লার মুরাদনগর থানার বাইরা গ্রামের মৃত আনজু মিয়ার ছেলে বিল্লাল হোসেন (৩৫) এর সাথে কাউখালীর কাশখালী এলাকার মৃত আব্দুর রশিদের মেয়ে ফাতেমা বেগমের সাথে বিয়ে হয়। তিন বছরের সংসারে তাদের ঘরে একটি পুত্র সন্তানের জন্ম হয়। বিয়ের দু'বছর পর থেকেই স্বামী স্ত্রীর মাঝে বনিবনা হচ্ছিলো না। ফলে গত ২৯ জুলাই দু'পক্ষ সামাজিক বৈঠকের পর স্ত্রী ফাতেমা স্বামী বিল্লাল কে কাউখালী উপজেলা সদরস্থ ইসলামী রীতি অনুযায়ী কাজি অফিসে তালাক দেন।
স্থানীয়রা জানান, স্ত্রীর কাছ থেকে তালাক প্রাপ্ত হয়ে বিল্লাল কুমিল্লা চলে যায়। ১৯ মাস বয়সী সন্তান বায়তুল্লাহ কে নিয়ে ফাতেমা তার মায়ের সাথে কাউখালীতে অবস্থান করে।
বৃহস্পতিবার রাতে বিল্লাল পুনরায় কাউখালী আসে। রাতে সবাই ঘুমিয়ে পড়লে মধ্য (শুক্রবার) রাতে সিঁধেল কেটে ঘরে প্রবেশ করে হাতে থাকা সাবল দিয়ে স্ত্রী ও শাশুড়ীকে উপর্যপূরী আঘাত করে হত্যা করেন। এসময় ১৯মাস বয়সী ছোট্ট বায়াতুল্লাহ কোন রকম হামাগুড়ি দিয়েই পাশের বাড়ীতে গিয়ে কান্না করতে থাকলে স্থানীয়রা ছুটে আসেন। ততক্ষণে ঘাতক বিল্লাল পালিয়ে যায়।
এঘটনায় রাত তিনটায় রক্তাক্ত কাপড় চোপড় নিয়ে ঘাতক বিল্লাল উপজেলা সদর হয়ে চট্টগ্রামে পালিয়ে যাওয়ার সময় উপজেলার বেতছড়ি পাইন বাগান এলাকায় স্থানীয়রা আটকে তাকে পুলিশে সোপর্দ করে। খবর পেয়েই কাউখালী থানার ওসি রাজিব চন্দ্র করের নেতৃত্বে পুলিশ রাতেই লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন কাপ্তাই সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ জাহিদুল ইসলাম (পিপিএম)। এতে পুরো এলাকা জুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। ঘাতক স্বামী বিল্লাল কে রাঙামাটি কোর্টে প্রেরণ করা হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট সূত্র।
সম্পাদকঃ এম. শাহীন আলম।। প্রকাশকঃ উম্মে হাবিবা
যোগাযোগ: ০১৬৪৭-৬২৭৫২৬/ ০১৮২৩-৯১৯০৯৫ whatsapp
parbattakantho@gmail.com
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধনের জন্য আবেদিত
পার্বত্য কন্ঠ © ২০১৮-২০২৪ সংরক্ষিত