ফরিদপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ (বিএসএমএমসি) হাসপাতালের ১৬ শয্যার অত্যাধুনিক ইনসেনটিভ কেয়ার ইউনিট তথা আইসিইউ এর প্রথম শ্রেণির সবকটি পদই শূন্য। ২০১৬ সালে স্থাপিত এই আইসিইউতে অদ্যাবদি কোন জনবল নিয়োগ দেয়া হয়নি। বর্তমানে ওই হাসপাতালের একজন সহকারী অধ্যাপক ও একজন রোস্টারের মাধ্যমে করোনা রোগীদের জন্য কোনমতে ইউনিটটি চালু রাখা হয়েছে। নির্দিষ্ট জনবল না থাকায় এখানে চিকিৎসা কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। করোনা আক্রান্ত মুমূর্ষু জীবনের বিনিময়ে এর খেসারত দিতে হচ্ছে। নিয়মানুযায়ী এই আইসিইউতে একজন সহকারী অধ্যাপক, দুইজন জুনিয়র কনসালটেন্ট, দুইজন সহকারী রেজিস্টার ও দুইজন মেডিক্যাল অফিসার থাকার কথা। তবে প্রথম শ্রেণির এই সাতটি পদই শূন্য রয়েছে। নির্ধারিত জনবল না থাকায় বর্তমানে বিএসএমএমসি হাসপাতালের অ্যানেসথেসিয়া বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. অনন্ত কুমার বিশ্বাস অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে এই আইসিইউ বিভাগের ইনচার্জ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বিএসএমএমসি হাসপাতালের এই আইসিইউ বিভাগটি অত্যাধুনিক মানের। এখানে সেন্টাল অক্সিজেন সাপ্লাই, ভেন্টিলেটর, হাই ফ্লো, নজেল ক্যানোলাসহ অত্যাধুনিক সুযোগ সুবিধা রয়েছে। দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের অন্য কোন হাসপাতালে এই অত্যাধুনিক সুবিধা না থাকায় পার্শ্ববর্তী জেলা থেকেও গুরুতর রোগীদের এখানে প্রেরণ করা হচ্ছে। জানা গেছে, কোভিড-১৯ রোগের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় ৫শ শয্যার এই বিএসএমএমসি হাসপাতালের পুরোটাই করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতাল হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। প্রতিদিন এখানে ৫শ করোনা রোগীকে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এদের মধ্যে গুরুতর অসুস্থদের এই আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। ১৬ শয্যার এই আইসিইউতে কখনো খালি শয্যা থাকে না। একটি বেড খালি হলে সেখানে নতুন রোগী আসেন। জনবল না থাকলেও বিশেষায়িত এই সুবিধার চিকিৎসা নিতে সবসময়েই রোগীদের ভিড় লেগেই থাকে। এ পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৬শ জন রোগী এই আইসিইউতে চিকিৎসা সেবা পেয়েছে। তার মধ্যে ২৭০ জন রোগী মারা গেছেন। আর আইসিইউতে বেড খালি না থাকায় ৪৮ জনকে ঢাকায় রেফার্ড করা হয়েছে। ডা. অনন্ত কুমার বিশ্বাস জানান, সারাদেশে ৬ হাজার মেডিকেল অফিসার নিয়োগ হলে সরকার সম্প্রতি চারজন মেডিকেল অফিসারবে এখানে নিয়োগ দেন। আর সিভিল সার্জনের কার্যালয় হতে উপজেলা পর্যায়ের চারজন মেডিকেল অফিসার কাজ করেন। এখানে যারা ডিউটি করেন তাদের নিয়মানুযায়ী নির্দিষ্ট সময়ের পরে কোয়ারেন্টাইনে যেতে হয়। এজন্য ইনচার্জের বাইরে একজন মাত্র রোস্টার (মেডিকেল অফিসার) দিয়েই কাজ চালাতে হয়। ফলে অনেক সমস্যায় পড়তে হয় রোগী ও চিকিৎসকদের। বিএসএমএমসি হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. সাইফুর রহমান বলেন, রোগীদের কথা বিবেচনা করে অ্যানেসথেসিয়া বিভাগের একজন সহকারী অধ্যাপককে দিয়ে হাসপাতালের আইসিইউ চালু রাখা হয়েছে। বর্তমানে হাসপাতালের সবকটি আইসিইউ সচল রয়েছে। জনবল না থাকা সত্ত্বেও আমরা সীমিত জনবল দিয়ে জীবন বাজি রেখে সর্বোচ্চ সেবা দিচ্ছি। এই ক্রান্তিকালে জনবল পদায়ন হলে আরও বেশি সেবা দিয়ে জনগণের জীবন রক্ষা করা যেত। দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর তুলনায় এই আইসিইউ শয্যার সংখ্যা খুবই অপ্রতুল বলে উল্লেখ করে হাসপাতালের এই পরিচালক বলেন, আরও আইসিইউ এবং জনবল থাকলে বহু মানুষের উপকার হতো। এ ব্যাপারে সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
সম্পাদকঃ এম. শাহীন আলম।। প্রকাশকঃ উম্মে হাবিবা
যোগাযোগ: ০১৬৪৭-৬২৭৫২৬/ ০১৮২৩-৯১৯০৯৫ whatsapp
parbattakantho@gmail.com
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধনের জন্য আবেদিত
পার্বত্য কন্ঠ © ২০১৮-২০২৪ সংরক্ষিত