সাইফুর রহমান পারভেজ,গোয়ালন্দ উপজেলা প্রতিনিধি
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে বিআইডব্লিউটিসি’র ওজন স্কেলের মাত্র ৪০ মিটার লম্বা ও ১২ ফিড চওড়া সড়ক তৈরীতে অনিয়মিত ও দুর্নীতি অভিযোগ ওঠেছে বিআইডব্লিউটিসি’র কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ কন্ট্রাক্টার এর বিরুদ্ধে।
অভিযোগ রয়েছে, সড়কটি তৈরীর করার সময় কাজের পরিকল্পনা নকশা প্লান বা ইস্টিমেটের যাবতীয় তথ্য গোপন করে,বিআইডব্লিউটিসির কয়েকজন কর্মকর্তা ও ঠিকাদারের যোগসাজশে নামমাত্র কাজ করে,হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে সরকারী মোটা অংকের টাকা।
হেব্বি ওয়েট এই সড়ক তৈরীতে কি? কাজ ধরা ছিল শিডিউল বা ইস্যটিমেটে এসব বিষয়ে জানতে চাইলে, বিআইডব্লিউটিসির দৌলতদিয়া ফেরীঘাট শাখার ম্যানেজার সালাউদ্দিন ও আরিচা জোন এর ডিজিএম খালেদ নেওয়াজ মাহমুদ এবং স্কেলর সড়ক তৈরীর কাজে দায়িত্বরত বিআইডব্লিউটিসির পুর্ত সেল বিভাগের সহকারী প্রকৌশল মোঃ নুর আলম কুদ্দুস প্রতিবেদকে বলেন,স্কেল সম্পর্কিত কোন প্রকার তথ্য জানা নেই তাদের। অথচ সুত্র বলছে এদের দায়িত্বে নয়ছয় করে তৈরী হয়েছে মাত্র ৪০ মিটার লম্বা হেব্বি ওয়েট সড়কটি। আর কি? কারণেই এরা তথ্য গোপন করছেন। এমন প্রশ্নের উত্তর জানা নেই কারোই।
তবে সরজমিনে গিয়ে অনুসন্ধানের মাধ্যমে জানাযায়, বিআইডব্লিউটিসি’র আওতাধীন গোয়ালন্দ উপজেলার চত্বরে অবস্থিত হাইলোড বা অভার লোড গাড়ির ওজন পরিমাপ করার জন্য অর্থাৎ সর্বনিম্ন ২২টন এর অধিক ধারণ ক্ষমতা সম্পুর্ণ ট্রাক,কাভারভ্যান সহ বিভিন্ন শ্রেনীর গাড়ীর ওজনের মেপে, টন প্রতি বাড়তি ১২০ টাকা করে রাজস্ব আদায় করার জন্য, এই স্কেলটি স্থাপন করে বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃপক্ষ । কিন্তু মোটা অংকের টাকা খরচ করে তৈরী করা এই হেব্বি ওয়েট স্কেলের সড়কটি চালু হওয়ার মাত্র কয়েক মাসের মাথায় যানবাহন চলাচল এর সম্পুর্ণ অনুপযোগী পড়ে। ফলে দীর্ঘদিন যাবত সড়কটি অকেজো অবস্থায় থাকার পর আবার ও ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরের জন্য প্রায় ১৫ লাখ টাকা টেন্ডার দেয় বিআইডব্লিউটিসি’র কর্তৃপক্ষ। কিন্তু ১৫ লাখ টাকা ব্যয়ে এই সড়কটি তৈরী করার মাত্র দেড় মাসের মাথায় বেহাল দশা। এখনই সড়কটি হতে উঠে যাচ্ছে ডালাইয়ের পাথর ও অ্যাঙ্গেল। এছাড়াও পুরো সড়কটি হয়ে গেছে এব্রথেব্র সামান্য বৃষ্টি হলেই জমছে পানি।
অভিযোগ রয়েছে, ঢালাই য়ের নিচে ব্যবহার করা হয়েছে, নিম্নমানের গ্রেড বিহীন রড। শুধু তাই নয়,ঢালাইয়ের নিচে ৭ থেকে ১০ ইঞ্চি পরিমাণ ফাঁকা ফাঁকা করে বিছানো হয়েছে রড। সেইসাথে পাথর ও সিমেন্ট নেই বললেই চলে। নামমাত্র পাথর ও সিমেন্ট দিয়ে শুধু মাত্র বালু উপর ভিত্তি করে তৈরী করা হয়েছে হেব্বি ওয়েট এই সড়কটি।
এবিষয়ে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান ও এই সড়ক তৈরীতে দায়িত্বরত বিআইডব্লিউটিসির সহকারী প্রকৌশল, মোঃ নুর আলম কুদ্দুসকে মুঠোফোন ফোন দেওয়া হলে,তারা বলেন উর্ধতন কর্মকর্তার অনুমতি ছাড়া কিছুই বলতে পারবেন না বলে ফোনটি কেটে দেন। তাদের কাছে বারবার ফোন দেওয়া হলেও তিনি আর ফোন রিসিভ করেনি।
তবে এবিষয়ে কথা বলছেন বিআইডব্লিউটিসির চেয়ারম্যান ড. এ.কে. এম মতিউর (অতিরিক্ত সচিব) মুঠোফোনে তিনি জানান,স্কেলের সড়ক তৈরীতে অনিয়মের বিষয়টি সম্পর্কে তিনি গণমাধ্যম কর্মীদের কাছ থেকে ইতিমধ্যে অবগত হয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
তবে সুশীল সমাজের ব্যক্তিরা বলছেন,১৫ লাখ টাকার এই সড়কে বাস্তবে কাজ হয়েছে ৬ থেকে ৭ লাখ টকার। ঠিকাদার থেকে শুরু করে সড়কটি তৈরীতে বিআইডব্লিউটিসির দায়িত্বরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্লান বা ইস্যটি মিটের যাবতীয় তথ্য গোপন করাই প্রমাণ করে, কি পরিমাণ অনিয়ম করেছেন এই সড়ক তৈরীতে।