আব্দুল মান্নান স্টাফ রিপোর্টার (খাগড়াছড়ি)
গত পনের দিনের টানা তাপপ্রবাহ, লোডশেডিং ও লো-ভোল্টেজেে খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি উপজেলার ছোট,বড় দেড় শতাধিক পোল্ট্রি খামারে হাঁসফাঁস অবস্থা! সবচেয়ে খারাপ ও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ছোট খামারীরা। জেনারেটর না থাকা খামারে প্রতিদিন শত শত মুরগী মারা যাচ্ছে! সঠিক তাপমাত্রার অভাবে বাচ্চা নিয়মমাফিক বেড়ে উঠছে না ! ফলে সর্বক্ষেত্রে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে খামারীরা।
গতকাল ১৮ এপ্রিল বৃহস্পতিবার বিকেলে উপজেলার বেশ কয়েকটি ছোট,বড় পোল্ট্রি খামার ঘুরে দেখা গেছে, বড় খামারে বিদ্যুৎ লাইনের পাশাপাশি ভারী জেনারেটরে সার্বক্ষনিক বিদ্যুৎ সরবরাহ করে বয়লার ও লেয়র মুরগী লালনপালন করা হচ্ছে। লো-ভোল্টেজের সময় পানি ছিটিয়ে ঘর ঠান্ডা রাখতে দেখা গেছে। কিন্ত ছোট খামারে জেনারেটর না থাকায় একমাত্র বিদ্যুৎ নির্ভর হওয়ায় দৈনিক গড়ে ১৫-১৬ ঘণ্টা বিদ্যুতের লোডশেডিং ও লো-ভোল্টেজের শিকারে দুর্বিসহ সময় কাটাচ্ছে এসব খামারীরা!
উপজেলার সততা এগ্রো ফার্মের ম্যানাজার মো. লিটন মিয়া আজকের পত্রিকাকে বলেন, আমাদের এই পোল্ট্রি খামারে ছোট,বড় ২৫ হাজার বয়লার মুরগী রয়েছে। বুধবার দিবাগত রাত ১২ টার পর হতে বৃহস্পতিবার বিকেল ৪ টা পর্যন্ত সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ পেয়েছি ৪ ঘণ্টা! তাও আবার লো-ভোল্টেজ! ফলে বয়লার ২৫-৩০ দিন বয়সী মুরগীদের ওপর বারবার পানি ছিটিয়ে ঘর ঠান্ডা রাখতে চেষ্টা করছি। এত কিছুর পরও গত ১৫ দিনে প্রায় দেড় হাজার মুরগী মারা গেছে। আজকেও শতাধিক মুরগী মারা গেছে!
গচ্ছাবিল এলাকার ক্ষুদ্র খামারী মো. রবিউল হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, রোজার শেষ সপ্তাহ থেকে প্রচন্ড তাপমাত্রায় আজও চলমান! এই গরমে ছোট পোল্ট্রি খামারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বেশি! উপজেলায় প্রায় ১০০ ছোট খামার রয়েছে। যাদের কারই জেনারেটর নেই! ফলে টানা ১৫-১৬ ঘণ্টা বিদ্যুৎ না থাকায় প্রতিদিন শতশত মুরগী মারা যাচ্ছে! সাধারণত ৩০-৩২ দিন বয়সে মোরগ বেচাকেনা করা হয়। কিন্তু প্রচন্ড গরম ও তাপমাত্রা বেশি হওয়ায় মোরগ মরতে শুরু করায় আমি বাধ্য হতে ২৫ দিন বয়সী ১০০০ মুরগী গত বুধবার ১৭৮ টাকা কেজি হারে বিক্রি করে দিয়েছি!
একই এলাকার মো. সোহেল মিয়া জানান, ঈদের একদিন আগে জন্ম নেওয়া আমার ছোট মোরগের বাচ্চার শরীরে প্রয়োজনীয় তাপমাত্রা দিতে না পারায় প্রায় ৪০০ শতাধিক বাচ্চা অপুষ্টি( কেট) হয়ে গেছে! আগামীকাল চট্টগ্রাম থেকে চিকিৎসক আসার কথা রয়েছে।
বিশিষ্ট পোল্ট্রি ব্যবসায়ী ও বোরহান পোল্ট্রি’র মালিক মো. বোরহান উদ্দিন বলেন, এই প্রচন্ড গরমে বিদ্যুৎ বিভ্রাটে ছোট খামারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বেশি! বড় খামারে বিদ্যুতের বিকল্প জেনারেটরে ফ্যান চালু এবং ঘণ ঘণ পানি ছিটিয়ে মোরগীর সেড ( ঘর) শীতল রাখা যায়। কিন্তু যাদের জেনারেটর নেই! ওইসব খামারীরা এই দাবদাহে মোরগ লালন-পালনে ব্যবসা টিকিয়ে রাখা কঠিন!