• রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫:৩৭ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
বিএনপির আগামীর রাজনীতি হবে বাংলাদেশের মানুষ ও তারুণ্যের আশা-আকাঙ্ক্ষা ও প্রত্যাশাকে প্রাধান্য দিয়ে- আমীর খসরু বানভাসিদের জন্য রাজারবাগ দরবার শরীফের মেডিকেল ক্যাম্পেইন খাগড়াছড়িতে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে সাত দিনের খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেছে রেড ক্রিসেন্ট আরাফাত রহমান কোকোর স্মৃতি স্মরণে প্রীতি ফুটবল ম্যাচ অনুষ্ঠিত কাচালং নদীতে গোসল করতে নেমে এক কিশোরী নিখোজ নবীনগরে উস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ,র ৫২ তম মৃত্যু বার্ষিকী পালন মানিকছড়িতে মারমা কল্যাণ সমিতির মতবিনিময় ও আলোচনা সভা মানিকছড়িতে মারমা ঐক্য পরিষদের মতবিনিময় সভা জেলার ত্রাণ তহবিলে নানিয়ারচর বিএনপির অর্থ জমা লংগদুতে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত শতাধিক পরিবারের মাঝে ত্রান সামগ্রী বিতরণ করে সেনা জোন লংগদুতে জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত লংগদুতে ইউপি সদস্য রূপচান,র, পদ ত্যাগের দাবিতে মানববন্ধন

বাজারে প্লাস্টিকের দাপটে হারিয়ে যাচ্ছে বাঁশ বেত শিল্প পরিবেশ বান্ধব শিল্প বাঁচিয়ে রাখতে কারিগরদের মিনতি

আব্দুল মান্নান স্টাফ রিপোর্টার (খাগড়াছড়ি) / ১৭২ জন পড়েছেন
প্রকাশিত : বৃহস্পতিবার, ২১ মার্চ, ২০২৪

আব্দুল মান্নান স্টাফ রিপোর্টার (খাগড়াছড়ি)

আধুনিকতার ছোঁয়ায় বাজারে প্লাস্টিক সরঞ্জামাদির অবাধ উৎপাদন ও ব্যবহারে হারিয়ে যাচ্ছে পরিবেশ বান্ধব ও সাধারণ মানুষের হস্তশিল্প বাঁশ, বেতে সামগ্রীর ব্যবহার! ফলে এ কর্মে জীবন,জীবিকা নির্ভর খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি উপজেলার শতাধিক পরিবারে চলছে অকাল। পরিবেশ বান্ধব এ শিল্প বাঁচিয়ে রাখতে সরকারি উদ্যোগ জরুরি বলে মনে করছেন কারিগরেরা।

বাঁশ ও বেতের তৈরি কুলা, চালুন, খাঁচা, মাচা, মই, চাটাই, ঢোল, গোলা, ওড়া, বাউনি, ঝুঁড়ি, ডুলা, মোড়া, মাছ ধরার চাঁই, মাথাল, সোফাসেট, বইপত্র রাখার র‌্যাকসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র, বাঁশের ঘর, বেড়া, ঝাপ, বেলকি, দরমা বাংলাদেশের নিজস্ব শিল্প-সংস্কৃতির প্রতীক। ফলে এসব সরঞ্জামাদি তৈরির একমাত্র ব্যবহার্য সামগ্রী বাঁশ ও বেত সহজলভ্য জনপদ পার্বত্য চট্টগ্রাম। দেড়, দুই শতক আগেও খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি উপজেলায় মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের মাধ্যমে এলাকার কিশোরী ও নারীদের প্রশিক্ষিত করা হত। প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত এসব হস্তশিল্পিরা কুলা, চালুন, চাটাই, ঢোল,গোলা, ওড়া, ঝুঁড়ি,ডুলা, মোড়া, মাছ ধরার চাঁই, বেড়া তৈরি করে অবাধে বাজারজাত করত।

কালের আর্বতে বাজার আজ প্লাস্টিক উপকরণে সয়লাব! ফলে এখনও যারা যৎসামান্য বাঁশ শিল্পের সাথে নিজেদের জড়িয়ে রাখছে তাঁরা এখন দুঃসময় পার করছেন!

গত ১৬ মার্চ শনিবার উপজেলার প্রধান হাটবার মানিকছড়ি বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, বাজারের একটি গলিতে ওড়া, কুলা,চালুন, ঝুঁড়ি নিয়ে বসে আছেন হস্তশিল্পের কারিগর মো. খোরশেদ আলম ও তার বোন হালেমা খাতুন। এ সময় খোরশেদ আক্ষেপ করে বলেন, প্রয়াত পিতা মো. আব্দুস ছামাদের কাছে শিখা এই পেশায় এখন তিনবেলা ভাত জুটে না! আশা ছিল হস্তশিল্পের উদ্যোক্তা হওয়ার। ছোট একটি কারখানায় ১০/২০ জনকে হাতেকলমে কাজ শিখিয়ে বাঁশ ও বেত শিল্পের উপকরণ বাজারজাত করার। কিন্তু বাজারে যে ভাবে প্লাস্টিকের রাজত্ব বা প্রসার আমরা মনে আর টিকে থাকতে পারবো না! মানুষ আগের মতো বাঁশের উপকরণ ব্যবহার করতে চায় না। সবাই প্লাস্টিক ব্যবহার করে আজ পরিবেশ দুষণ করছে! আর পরিবেশ বান্ধব বাঁশ ও বেত শিল্পের প্রতি মানুষও কেমন যেন অমনোযোগী! এ বাজারে এখনও প্রায় ১৭/১৮ জন বাঁশের উপকরণ নিয়ে আসে।
হালেমা খাতুন বলেন, আমি বাঁশের উপকরণ তৈরি করি কিন্তু সে অনুযায়ী বিক্রি হয় না। কি করব, কাজ শিখা যেন অন্যায় বা ভূল হয়েছে! জনপদে বাঁশ উৎপাদন কম, কিন্তু দাম বেশি। সপ্তাহে জনপ্রতি ২০/২২টি চালন বা ঝুঁড়ি বানানো যায়। বিক্রি হয় সর্বোচ্চ ১৫/১৬ টি। প্রতিটির দাম ১২০-১৫০ টাকা। দৈনিক মজুরী দাঁড়ায় গড়ে ৩০০-৩৫০ টাকা! এই আয় দিয়ে চলা দায়! পরিবেশ বান্ধব এই বাঁশ ও বেত শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে হলে আগে সরকারের পরিকল্পনা ও বানানো সরঞ্জামাদি রপ্তানিসহ বাজারজাতকরণে উদ্যোগী হতে হবে তাহলেই এই বিলুপ্তপ্রায় বাঁশ,বেত শিল্প টিকে থাকবে আর হস্তশিল্পি বা কারিগরেরা বেঁচে থাকবে। এছাড়া উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অর্ধশতাধিক ব্যক্তি বাঁশের বেড়া ও চাটাই বানিয়ে বিক্রি করতে দেখা গেছে। মহামুনি সেগুন তলায় বেড়া বানানো চারু মিয়া আজকের পত্রিকাকে বলেন, জনপদে বাঁশ উৎপাদন কমে যাচ্ছে আর বাঁশ শিল্পের মধ্যে বেড়া, চাটাইয়ের কিছুটা চাহিদা থাকলেও অন্য উপকরণের জায়গায় দখলে নিয়েছে প্লাস্টিক পণ্য! পরিবেশ বান্ধব বাঁশ ও বেত শিল্পকে বাঁচাতে হলে আগে সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে।

উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মো. কামরুল আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, এক সময় উপজেলা পর্যায়ে বাঁশ,বেত শিল্পের ওপর প্রশিক্ষণ বিষয়ক প্রকল্প ছিল। এখন সেটি নেই। তিনি আরও বলেন, বাঁশ, বেত শিল্প টিকিয়ে রাখতে হলে আগে বাজারজাত নিশ্চিত করেই উৎপাদনে যেতে হবে। না হলে প্লাস্টিক পণ্যের সাথে এই শিল্প টিকবে না।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ