রাঙামাটির লংগদুতে সোনালী ব্যাংকের বিরুদ্ধে কৃষকদের নামে ভুয়া ঋণ বিতরণ দেখিয়ে হয়রানি করার অভিযোগ উঠেছে। প্রতিবাদে ভুক্তভোগী কৃষকরা ব্যাংকের সামনে মানববন্ধন করেছে।
রবিবার সকাল ১১টায় লংগদু উপজেলা সদরের সোনালী ব্যাংক কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে কৃষকরা বলেন, ২০১২ ও ২০১৩ সালের দিকে স্থানীয় হেলাল, সেলিম, মিষ্টি কালামসহ কয়েকজন দালাল সরকারি অনুদান দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে উপজেলার ভাসান্যাদম ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম থেকে সহজ সরল দরিদ্র কৃষকদের কাছ থেকে এনআইডি কার্ডের (জাতীয় পরিচয়পত্র) ফটোকপি ও ছবি সংগ্রহ করে। এরপর এই দরিদ্র কৃষকদেরকে ব্যাংক ঋণের বিভিন্ন কাগজে স্বাক্ষর নেয়। যা অক্ষরজ্ঞানহীন দরিদ্র কৃষকরা বুঝতে পারেনি। পরে কোনো কোনো কৃষককে পাঁচশ বা একহাজার করে টাকা দিয়ে বিদায় করে দালালচক্র। বিনিময়ে কৃষকদের নামে ২০ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঋণ বরাদ্ধ নিয়ে নেয় অসাধু ব্যাংক কর্মকর্তা ও দালালচক্র।
মানববন্ধনে ভুক্তভোগী কৃষকরা আরো বলেন, ঘটনার প্রায় ১০ থেকে ১১ বছর পরে এসে ঋণের বিষয়টি জানতে পারি আমরা। সম্প্রতি আমাদের নামে নোটিশ জারি করে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। তবে আমাদের নামে যে ভুয়া ঋণ হয়েছে তার বড় প্রমাণ আমাদের এনআইডি কার্ড জালিয়াতি করা হয়েছে। কার্ডে উল্লেখিত নাম, জন্মতারিখ, পিতা ও মাতার নামের অংশ ঠিক রেখে পেছনের ঠিকানার অংশটি পরিবর্তন করে মাইনীমূখ ইউনিয়নের সোনাই এলাকার করা হয়েছে। যেটা আমাদের সঠিক ঠিকানা না। এভাবেই সবার সাথে প্রতারণা করে ঋণের ফাঁদে ফেলা হয়েছে। কৃষক আইন উদ্দিন বলেন, আমাদের এলাকার দুইশ আঠার জনের নামে এই ভূয়া ঋণের তালিকা পেয়েছি। যারা কেউ এই ঋণ নেয় নাই। এখন ব্যাংক কর্তৃপক্ষ নানাভাবে আমাদের ঋণ পরিশোধের চাপ দিচ্ছে। কারো একাউন্টে স্বজনরা টাকা পাঠালে সেখান থেকে ঋণের টাকা কেটে রেখে দেয়। আমরা এর একটা সুষ্ঠু সমাধান চাই এবং এই দূর্নীতির সাথে যারা জড়িত তাদের উপযুক্ত বিচার চাই।
এ বিষয়ে সোনালী ব্যাংক লংগদু শাখার ব্যবস্থাপক আবুল কাশেমের কাছে জানতে চাইলে তিনি উর্ধতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া কিছু বলা সম্ভব নয় বলে জানান।
লংগদু উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল বারেক সরকার বলেন, বিষয়টি আমি অবগত আছি। ব্যাংকের অসাধু কর্মকর্তা দালাল চক্র মিলে এই আর্থিক অনিয়ম করেছে। এই ঋণের বোঝা দরিদ্র কৃষকদের পক্ষে পরিশোধ করা সম্ভব না। এ বিষয়ে ব্যাংকের উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে। আশা করছি কর্তৃপক্ষ সুষ্ঠু তদন্ত করে এটার একটা সুরহা করবেন।