ক্ষুদা ও দারিদ্রমুক্ত সোনার বাংলা বিনির্মানে ‘বাংলাদেশে একজন মানুষও গৃহহীন থাকবে না’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এমন নির্দেশনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে প্রকৃত গৃহহীন ও ভুমিহীন মানুষের বাসস্থান নিশ্চিত করতে দুর্গম পাহাড়ের এক গ্রাম থেকে আরেক গ্রামে ছুটে চলছেন মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ডেজী চক্রবর্তী।
জানা গেছে, সারাদেশের ন্যায় খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গায় আশ্রয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে যাদের বসবাসের জন্য নেই এক ইঞ্চি ভুমি বা নেই মাথা গোঁজার ঠাই এমন ভুমিহীন-গৃহহীনদের গৃহ নির্মানের জন্য জনপ্রতিনিধিদের দেয়া তালিকা পাওয়ার পর প্রকৃত উপকার ভোগী নির্বাচনে দুর্গম পাহাড়ের এক গ্রাম থেকে আরেক গ্রামে ছুটে চলেন মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ডেজী চকোবর্তী। পাহাড়ে পাহাড়ে ছুটে খুঁজে বের করেন অসহায়, হতদরিদ্র, গৃহহীন ও ভুমিহীন পরিবার। আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘর দিতে ইউএনও‘র এমন উদ্যোগ উপকারভোগী থেকে শুরু করে সবমহলে প্রশংসিত হচ্ছে।
বেশির ভাগ পরিবারের বসবাস পাহাড়ের চুঁড়ায় হওয়ার কারনে গাড়ি রেখে হেঁটেই যেতে হয়ে উচু-নিচু পাহাড়ী পথ। কখনো খাল-ছড়া পাড়ি দিতে হয় বাঁশের সাকোতে। শুধু প্রকৃত উপকারভোগী নির্বাচনই নয়, যেখানেই গেছেন সেখানেই অসহায় পরিবার গুলোর সাথে কথা বলে, নিয়েছেন তাদের প্রাত্যহিক জীবন-যাপনের খোঁজ-খবর। পরিবারের সদস্য কতো জন, ছেলে-মেয়েরা লেখাপড়া করে কিনা, পরিবারের আয়ের উৎস কি এমন সব তথ্য জেনেছেন। তার এই ছুটে চলা যেনো ভূমিহীন, গৃহহীন, দুর্দশাগ্রস্ত ও ছিন্নমূল পরিবারের আশ্রয়ের নির্ভরতা বহন করেছে।
বেলছড়ির দিনমজুর চন্দ্র কুমার চাকমা বলেন, অন্যের জমিতে কাজ করে স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে ভাঙা ঘরে বসবাস করি। বাইরে বৃষ্টি পড়ার আগেই ঘরে পড়ে। কেউ যখন আমার খবর নেয়না তখন ইউএনও স্যার আমার বাড়িতে এসে আমার দুরঅবস্থা দেখে আমাকে ঘর দেবেন বলেছেন। দেরীতে হলেও আমার ছেলে-মেয়েরা পাকা ঘরে থাকতে পারবে।
হাতিয়াপাড়ার বৃদ্ধ আবুল হোসেন বলেন, স্ত্রী-সন্তান, নাতী-নাতনীসহ পাঁচ সদস্য নিয়ে জীর্ন ঘরে থাকি। চেয়ারম্যান-মেম্বারদের কাছে বারবার গেলেও আমার কপালে সরকারী ঘর জোটেনি। আমি যখন হতাশ তখন আল্লাহ ইউএনও স্যারকে আমার বাড়িতে পাঠিয়েছেন। ইউএনও স্যার আমাদের খোঁজ-খবর নিয়ে আমাকে প্রধানমন্ত্রীর ঘর দিয়েছেন। এরকম ইউএনও তো আগে দেখিনি।
ইউএনও‘র এমন উদ্যোগের প্রশংসা করে বেলছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রহমত উল্যাহ বলেন, এমন উদ্যোগ অব্যাহত থাকলে একসময় মাটিরাঙ্গায় কোন গৃহহীন পরিবার খুজে পাওয়া যাবেনা।
গৃহহীন ও ভুমিহীন নির্বাচনে এমন উদ্যোগের ফলে প্রকৃত ভুমহীনরা ঠিকানা পাচ্ছে জানিয়ে মাটিরাঙ্গা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. ইশতিয়াক আহম্মেদ বলেন, প্রকৃত ভুমিহীন নির্বাচন থেকে শুরু করে গৃহ নির্মানসহ পর্যন্ত সবকিছু নিবিড়ভাবে তদারকি করেন। স্যারের এমন তদারকির ফলে এ কাজে শতভাগ স্বচ্ছতা নিশ্চিত হয়েছে। প্রকৃত ভুমিহীনরা আশ্রয়নের ঘর পাচ্ছে।
এবিষয়ে জানতে চাইলে মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ডেজী চক্রবর্তী বলেন, মুজিববর্ষে ‘বাংলাদেশের একজন মানুষও গৃহহীন থাকবে না’ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এ নির্দেশনা বাস্তবায়নে আশ্রয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে মাটিরাঙ্গায় ভূমিহীন ও গৃহহীন মানুষকে সেমি পাকা ঘর তৈরী করে দেয়া হচ্ছে। এটি শুধুমাত্র একটি বসত ঘর নয় ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপহার’। প্রকৃত ভুমিহীন ও গৃহহীন মানুষ যেন প্রধানমন্ত্রীর এ উপহার থেকে বঞ্চিত না হয় সে জন্যই প্রকৃত উপকারভোগী বাছাইয়ে আমার এমন উদ্যোগ।
সম্পাদকঃ এম. শাহীন আলম।। প্রকাশকঃ উম্মে হাবিবা
যোগাযোগ: ০১৬৪৭-৬২৭৫২৬/ ০১৮২৩-৯১৯০৯৫ whatsapp
parbattakantho@gmail.com
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধনের জন্য আবেদিত
পার্বত্য কন্ঠ © ২০১৮-২০২৪ সংরক্ষিত