আসিফ ইকবাল, বান্দরবন জেলা প্রতিনিধঃ
বান্দরবানে পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদের (পিসিসিপি’র) ৩য় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপিত হয়েছে। মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) সন্ধ্যায় জেলা ছাত্র পরিষদ কার্যালয়ে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনা সভায় পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ পিসিসিপি’র কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি মো: আসিফ ইকবালের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন পিসিএনপি বান্দরবান জেলা সাধারণ সম্পাদক মো: নাছির উদ্দীন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, পার্বত্য অঞ্চল অনগ্রসর অঞ্চল, পার্বত্য এলাকায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে, চাকরি, উচ্চশিক্ষা-বৃত্তি, ব্যবসা-বাণিজ্যে নানা রকম কোটা ও সুযোগ-সুবিধা চালু করেছে সরকার। তবে একই এলাকায় বসবাস করে এবং জনগোষ্ঠীর অর্ধেক হয়েও তা পাচ্ছেন না বাঙালীরা। শিক্ষা, চাকরি, ব্যবসা ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রে বৈষম্য করে পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙালীদের তৃতীয় শ্রেণির নাগরিকে পরিণত করা হচ্ছে। অবিলম্বে সকল ক্ষেত্রে বৈষম্য দূর করে জনসংখ্যানুপাতে সকল সুযোগ-সুবিধা বণ্টন এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডে একজন বাঙালি প্রতিনিধি নিয়োগ দিতে হবে।
এ সময় বক্তব্য রাখেন পিসিএনপি জেলা যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহজালাল রানা, ইকবাল মাহমুদ, মিজানুর রহমান আখন্দ, পিসিসিপি জেলা সহ সভাপতি জমির উদ্দিন, তানভীর হোসেন ইমন সহ প্রমুখ।
সঞ্চালনায় ছিলেন পিসিসিপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও জেলা সাধারণ সম্পাদক হাবিব আল মাহমুদ।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে বক্তারা বলেন , মেডিকেল, বুয়েট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় এবং অন্যান্য সকল উচ্চশিক্ষার প্রতিষ্ঠানে উপজাতীয় ছাত্র-ছাত্রীদের ভর্তির জন্য কোটা ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে ১৯৮৪ সাল থেকে। শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরের পর কোটার সংখ্যা আরো বৃদ্ধি করা হয়েছে। প্রতি বছর বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৩২৫ জন উপজাতি ছাত্র-ছাত্রী ভর্তির সুযোগ পাচ্ছে কোটাতেই। নতুন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এর সংখ্যা আরো বাড়ানো হয়েছে। অন্য দিকে একই অঞ্চলের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী বাঙালীদের জন্য কোটা তো দূরে থাক তেমন কোনো সুযোগ এখনো তৈরি করা হয়নি। পিছিয়ে পড়া অঞ্চল হিসেবে চিহ্নিত পার্বত্য এলাকায় বসবাসকারী দু’টি জনগোষ্ঠীর জন্য দুই রকম নীতি গ্রহণ করা হয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের উচ্চ শিক্ষাবৃত্তিতে বাঙালিরা চরম বৈষম্যের শিকার হচ্ছে, তাই আগামীতে উন্নয়ন বোর্ড ও জেলা পরিষদ কর্তৃক শিক্ষাবৃত্তি দেওয়ার ক্ষেত্রে জনসংখ্যা অনুপাতে বাঙালী শিক্ষার্থীদের সমান ভাবে দেওয়ার দাবি জানান তারা।
আলোচনা সভা শেষে কেক কেটে সংগঠনের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন করে নেতাকর্মীরা।