মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, ব্যুরো প্রধান, (বান্দরবান)
তিন বছর ধরে নেই বান্দরবানের লামা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা। এছাড়া শূণ্য রয়েছে সহকারী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, একাডেমিক সুপার ভাইজার ও উচ্চমান সহকারী পদ। উপজেলার মাধ্যমিক পর্যায়ের ৪৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কোন প্রয়োজনে ১০০ কিলোমিটার দূরে বান্দরবান সদর শিক্ষা অফিসে গিয়ে পরামর্শ নিতে হয়। রীতিমত অভিভাবক হীনতায় মুখ থুবড়ে পড়েছে শিক্ষা ব্যবস্থা। এতে ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষা, কমছে শিক্ষার মান। এ থেকে সমস্যা থেকে উত্তোরণে শূন্য পদগুলো পূরণের জোর দাবি জানিয়েছেন শিক্ষক ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীরা।
মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, লামায় সরকারি ও বেসরকারি মিলে ৪৪টি মাধ্যমিক স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসা রয়েছে। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ১৪ হাজার ৯৮৩ জন শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত। কিন্তু দীর্ঘ তিন বছর ধরে এ উপজেলায় নেই মাধ্যমিক ও সহকারী মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা। প্রায় চার বছর ধরে নেই একাডেমিক সুপার ভাইজার। এখানে সহকারী মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও উচ্চমান সহকারী হিসেবে কখনো কাউকে দেওয়া হয়নি। একমাত্র অফিস সহকারী দিয়েই চলছে এ দপ্তর।
আরো জানা যায়, উপজেলার ১টি পৌরসভা ও ৭টি ইউনিয়নে এবতেদায়ী মাদ্রাসা রয়েছে ১১টি, কলেজ রয়েছে ৪টি, জুনিয়র স্কুল রয়েছে ১৩টি, মাধ্যমিক স্কুল রয়েছে ১২টি ও মাদ্রাসা রয়েছে ৪টি। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রয়েছে প্রায় ৩০০ শিক্ষক। মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাসহ এ কার্যালয়ে পদ রয়েছে ৭টি। ২০২০ সালের অক্টোবরে হঠাৎ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ গাউছুল আজম বদলি হয়ে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ যান। এরপর পদটি চলতি বছরের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত শূন্য রয়েছে। এছাড়া, সহকারী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, একাডেমিক সুপার ভাইজার ও উচ্চমান সহকারী পদ শূন্য রয়েছে। রয়েছে অফিস সহকারী, অফিস সহায়ক ও গার্ড।
বর্তমানে মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করছেন বান্দরবান জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ ফরিদ উল আলম হোসাইনী। তিনিও জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার পাশাপাশি নাইক্ষ্যংছড়ি, লামা ও রোয়াংছড়ি উপজেলার দায়িত্ব পাালন করছেন। এতে তাকেও রীতিমত হিমশিম খেতে হচ্ছে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে। এদিকে মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা না থাকার কারণে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধান ও শিক্ষকরা। নিরুপায় হয়ে বিভিন্ন সমস্যার সমাধান খুঁজতে যেতে হচ্ছে অফিস সহকারীর কাছে।
উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল জানান, মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার উপস্থিতি না থাকায় অনেক গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা সংশ্লিষ্ট কাজে সিদ্ধান্ত নেওয়া যাচ্ছেনা। লামা আদর্শ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এএম ইমতিয়াজ ও ইয়াংছা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মুফিজ উদ্দিন জানান, কোন জরুরি প্রয়োজনে বান্দরবান সদর শিক্ষা অফিসে গিয়ে সমাধান করতে হয়।
মাধমিক শিক্ষা কর্মকর্তাসহ ৭টি পদের মধ্যে ৪টি পদ শূন্য থাকার সত্যতা নিশ্চিত করে লামা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের অফিস সহকারী শীপক বড়ুয়া বলেন, তিন বছর ধরে এ উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে আমি, অফিস সহায়ক ও গার্ড ছাড়া অন্য কোনো কর্মকর্তা নেই। কাজকর্ম নিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
বান্দরবান জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ ফরিদ উল আলম হোসাইনী জানান, লামা উপজেলাসহ অন্য উপজেলার শূন্য পদগুলোর চাহিদাপত্র সংবলিত চিঠি ইতোমধ্যে ডিজি অফিসে পাঠানো হয়েছে। আশা করছি, দ্রুত ব্যবস্থা হবে।
সংবাদ প্রেরক-
মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, মোবাইলঃ ০১৭৪৮-৯৩৩৬৫০